প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিঙে চা-শ্রমিকদের পুজোর বোনাস নিয়ে অনেক দিন ধরেই সমস্যা চলছে। চা-বাগানের মালিকদের সঙ্গে ট্রেড ইউনিয়নগুলির বৈঠকে আংশিক ভাবে সুরাহা মিললেও বোনাসের পুরো অঙ্ক পুজোর আগে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। সেই আবহে নিজের রেস্তরাঁয় ‘দার্জিলিং চা’ বিক্রি বন্ধের কথা ঘোষণা করে বসলেন হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড। দার্জিলিঙের ঐতিহ্যবাহী ১১০ বছরের একটি রেস্তরাঁর কর্ণধার তিনিই। তাঁর সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট ঘিরে এ বার বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, ওই রেস্তরাঁকে হাতিয়ার করে আদতে গোটা দার্জিলিঙেই চা বিক্রি বন্ধ করার কথা বলতে চেয়েছেন অজয়।
চলতি মাসে তিন দফায় চা-বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। সেই বৈঠকে শ্রমিকদের ২০ শতাংশ বোনাস দিতে রাজি হয়েছেন বাগান মালিকেরা। কিন্তু তাঁদের একাংশের বক্তব্য, দু’দফায় তাঁরা বোনাসের টাকা দেবেন। দুর্গাপুজোর আগে ১৫ শতাংশ আর কালীপুজোর আগে বাকি পাঁচ শতাংশ। যা নিয়ে আবার বিবাদ শুরু হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। ট্রেড ইউনিয়নগুলির বক্তব্য, অতীতে বাগান মালিকদের অনেক দায়িত্ব ছিল। রাস্তাঘাট, স্কুল, হাসপাতাল, রেশন— সবটাই মালিকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ত। কিন্তু এখন তা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। তার পরেও কেন একসঙ্গে ২০ শতাংশ বোনাস মিলবে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন চা-শ্রমিকেরা।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার অজয় ফেসবুকে লেখেন, বোনাসের সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁর রেস্তরাঁয় দার্জিলিং চা বিক্রি ও পরিবেশন বন্ধ থাকবে। তার প্রেক্ষিতে অনেকের বক্তব্য, প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন হামরো পার্টির প্রধান। এতে বিশ্বের কাছে দার্জিলিঙের গরিমা নষ্ট হচ্ছে। যদিও অজয়ের বক্তব্য, ‘‘আমি কোনও হুমকি দিচ্ছি না। সকলের কাছে আবেদন করেছি মাত্র। বিশ্বের বড় বড় রেস্তরাঁতে দার্জিলিং চা বিক্রি হয়। কিন্তু তাতে চা শ্রমিকেরা কী পাচ্ছেন? প্রতি বছরই বাগান মালিকদের এই এক নাটক দেখা যায়। শ্রমিকদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। তাঁরা বছরে একবার মাত্র বোনাস পান। তা নিয়ে সমস্যা! শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না। ২০ শতাংশ বোনাস একবারেই দিতে হবে।’’
পুজোর আগেই চা-শ্রমিকদের বোনাস দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন জিটিএ চিফ এগজ়িকিউটিভ অনিত থাপা। অজয়কে আক্রমণ করেও তিনি বলেন, ‘‘অজয় এডওয়ার্ড শুধু তাঁর রেস্তরাঁ নিয়ে পোস্ট করেছেন। ওঁর কথা কে শুনবে? উনি চা বেচুন, দারু বেচুন। বাড়িতে বসে মোবাইল নিয়ে মানুষকে উস্কাচ্ছেন। আমরা বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নগুলো সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছি। সেই বৈঠকে কেন যায়নি অজয় এডওয়ার্ডের পার্টি? বাগান মালিকদের সিদ্ধান্তে আমরা কেউ রাজি হইনি। অজয় এডওয়ার্ডের কোনও ভূমিকাই নেই এ সবে। উনি শুধু প্রভোক করছেন।’’
একই ভাবে, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি (পাহাড়) দীপক প্রধান বলেন, ‘‘অজয় এডওয়ার্ডের পোস্ট অন্ধদের হাতি দেখার মতো বিষয়। দফায় দফায় বাগান মালিকদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করছি। আমাদেরও দাবি, বোনাস একসঙ্গেই দেওয়া হোক। অজয় এডওয়ার্ড নিজেও এক জন রাজনীতিক। বাচ্চাদের মতো কাজ করছেন উনি। বুদ্ধির বিকাশ ঘটেনি ওঁর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy