কেউ বর্ষীয়ান নেতা। কেউ তরুণ। কেউ কেউ আবার অভিজ্ঞতার নিরিখে এগিয়ে। তাই প্রতিযোগিতা ছিলই। আদালতের রায়ের পরে কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতির দাবি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে রীতিমতো ‘লড়াই’ শুরু হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, যাঁদের মধ্যে লড়াই হচ্ছে তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেই তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এই তালিকায় নাম উঠে আসছে বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ, জেলার মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী সুচিস্মিতা দেবশর্মা থেকে রবীন্দ্রনাথ-পুত্র পঙ্কজ ঘোষের। দৌড়ে আছেন বিদায়ী জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুস্পিতা রায় ডাকুয়াও। দিনহাটা থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী মীর হুমায়ন কবীরকেও সভাধিপতি করার দাবিও তুলেছেন অনেকে। এই বিষয়ে কেউই অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বিজেপি উন্নয়ন স্তব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। মহামান্য আদালতের রায়ে তা আর পারল না তারা। নিয়ম মেনে সব জায়গায় বোর্ড হবে। কে সভাধিপতি তা সর্বভারতীয় নেত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবেন।”
কোচবিহার জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়াও বলেন, “দলনেত্রী যা দায়িত্ব দেবেন সেটাকে মেনে নিয়েই আমরা কাজ করব। দলনেত্রীর কথাই আমাদের কাছে শেষ কথা। এখানে আর কোনও ব্যাপার নেই।” বর্ষিয়ান নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “ওই বিষয়ে দলনেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি যা বলবেন সেটাই চূড়ান্ত। আমরা দলের সৈনিক। এই বিষয়ে আর কিছু বলার নেই।”
কেউ তেমন কিছু না বললেও তাঁদের অনুগামীরা অবশ্য দলীয় স্তরে দাবি তুলে সরব হয়েছেন। দলীয় সুত্রেই জানা গিয়েছে, ৩৩ আসনের কোচবিহার জেলা পরিষদে এ বার সবকয়টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। দিনহাটার একটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছে। তা নিয়েই ঝুলে ছিল সভাধিপতি গঠনের প্রক্রিয়া। এবারে আর কোনও অসুবিধে থাকল না। তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, আব্দুল জলিল আহমেদ বর্ষিয়ান নেতা। দলের জন্মলগ্ন থেকে তিনি আছেন। এ ছাড়াও জেলায় দলের সংখ্যালঘু মুখ। সবদিক বিচার করে তাঁকেই সভাধিপতি করা উচিত। কিন্তু বিজেপির বাড়বাড়ন্তে এবারে সংখ্যালঘু মুখ দল আনবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেকে বিদায়ী সভাধিপতি পুষ্পিতা দেবীকেই সভাধিপতি করার পক্ষে। তাঁদের যুক্তি, গত পাঁচ বছরে জেলা পরিষদ দক্ষ হাতে সামলেছেন তিনি। তেমন কোনও বিতর্ক হয়নি। তাই অভিজ্ঞতার নিরিখে তাঁকেই করা উচিত। যদিও সহ সভাধিপতির আসন তপসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত। সেক্ষেত্রে পুষ্পিতা দেবীকে ওই পদে রাখার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
নতুন ও তরুণ হিসেবে পঙ্কজ ঘোষ ও সুচিস্মিতা দেবশর্মা রয়েছেন । তাঁদের পক্ষেও অনেকে সওয়াল করেছেন। কিন্তু , অল্প বয়সে জেলা পরিষদের সভাধিপতির আসনে বসে তা পরিচালনা করা কতটা সম্ভব তা নিয়ে একটি প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে। তৃণমূলের দিনহাটার একটি অংশ অবশ্য মীর হুমায়ন কবীরকে সভাধিপতি করার দাবি করেছেন। তাঁদের যুক্তি, দিনহাটা থেকে দীর্ঘদিন কেউ সভাধিপতি হচ্ছে না। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের একমাত্র তিনি জানিয়েছেন। দলের এক নেতা বলেন, “শুধু দাবি উঠলেই কেউ সভাধিপতি হবেন না। দলনেত্রী সব খুঁটিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাই কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে তা বলা মুশকিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy