নিহত প্রধান রাহির বাড়িতে পরিজনদের সঙ্গে কথা বলছেন গোয়ালপোখরের বিধায়ক ও মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান মহম্মদ রাহিকে গুলি করে খুনের ঘটনায় ওই পঞ্চায়েতেরই কংগ্রেস সদস্য মহম্মদ মুস্তাফাকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করল পুলিশ। মুস্তাফার বাড়িও পাঞ্জিপাড়ায়। বুধবার দুপুরে পাঞ্জিপাড়া পঞ্চায়েত থেকে যখন বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন প্রধান তখন মোটরবাইকে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মুস্তাফা। পুলিশের দাবি, তিনি তাদের জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত থেকে তাঁরা যখন রওনা হন, প্রথম বার হামলা করে আততায়ীরা। তারা গুলি চালাতেই রাহি মোটরবাইকের গতি বাড়ান। তখন তিনি মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়ে যান।
ইসলামপুর পুলিশ-জেলার সুপার জসপ্রীত সিংহ বলেছেন, “নিহতের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে ধরা হয়েছে। খুব শীঘ্র বাকিরা ধরা পড়বে। সব দিক খতিয়ে দেখে, তদন্ত চলছে।’’ আজ, শুক্রবার ধৃতকে আদালতে হাজির করানো হবে। পুলিশ সূত্রের দাবি, আততায়ীরা সম্ভবত বিহারে পালিয়ে গিয়েছে। তাদের ধরতে বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, ‘‘আসল অপরাধীদের আড়াল করতে পুলিশ এবং শাসক দল ষড়যন্ত্র করে আমাদের দলের এক নিরীহ সদস্যকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “ষড়যন্ত্রের ব্যাপার নেই। পুলিশ তদন্ত করে যেমন পাবে এগোবে।’’
বুধবার ভরদুপুরে পাঞ্জিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে রাহি বাড়ি যাওয়ার জন্য মোটরবাইকে চেপে বেরোলে, আততায়ীরা পিছু নেয়। প্রথমে অফিসের কাছে তারা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। রাহি পালানোর চেষ্টা করলেও, সেখান থেকে কিছুটা দূরে, কলোনি মোড়ে চার আততায়ী খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে নিহত প্রধানের বাড়িতে তাঁর পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। রব্বানিকে পেয়ে পরিবারের লোকজন দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। রাহির ছেলে মহম্মদ মাশরুফের দাবি, “বাবার কোনও শত্রু ছিল না। কারা এই খুনের পিছনে রয়েছে বুঝতে পারছি না।" রব্বানি বলেন, “পুলিশ-কর্তাদের দুষ্কৃতীদের ধরতে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। এমন ঘটনা নিন্দনীয়। নিহতের পরিবারের পাশে রয়েছি।’’ খুনের প্রতিবাদে এ দিন দোকান বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যায় নিহতের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ও আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া খোলগুলি ৯ এমএম পিস্তলের গুলির।" পুলিশের একাংশের সন্দেহ, এই খুনের সঙ্গে ‘জমি-মাফিয়াদের’ যোগসূত্র থাকতে পারে। এই ঘটনায় বিহার সীমানায় এক ‘মাফিয়ার’ যোগসূত্রের সম্ভাবনাও দেখছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঞ্জিপাড়া পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্যের দাবি, “বাংলা-বিহার সীমানায় এক মাফিয়া এক সময় দলে ছিল। তাঁর সঙ্গে রাহির বিরোধ ছিল। ওই মাফিয়াকে বিহার পুলিশ ধরেছিল। জামিনে ছাড়া পেলেও, এখন এলাকায় থাকেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy