কংগ্রেসের কার্যালয়ে ফব প্রার্থী অক্ষয় ঠাকুর।
ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী অক্ষয় ঠাকুরকে নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বাসে মাতলেন দিনহাটার কংগ্রেস নেতারা। শনিবার দুপুরে প্রচারের ফাঁকে দিনহাটার প্রধান সড়ক লাগোয়া কংগ্রেস অফিসে যান বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোটের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী। দলের অফিসে থাকা অক্ষয়বাবুকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দলের নেতাদের জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারেও অক্ষয়বাবুকে বসানো হয়। অক্ষয়বাবু ওই অফিসে তাঁর প্রচার উপকরণ না থাকার কথা জানাতেই তড়িঘড়ি উদ্যোগী হয়ে কংগ্রেস নেতারা ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর সমর্থনে আনা ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। কংগ্রেস অফিসের সামনে লাগান হয় ফরওয়ার্ড ব্লকের পতাকাও।
পিছিয়ে ছিলেন না শাসক দলের প্রার্থীও। গ্রাম চষে এ দিন দলের দিনহাটা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মীর হুমায়ন কবীরকে নিয়ে প্রচার চালান তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ। উদয়নবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন হুমায়ুন। প্রচারে তাঁকে পাশে পেয়ে উজ্জীবিত দেখিয়েছে উদয়নবাবুকে।
কোচবিহার জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কমল দাশগুপ্ত বলেন, “এখানে জোট মজবুত। কোনও সমস্যা নেই। অক্ষয়বাবুর সমর্থনে দলীয় ভাবেও প্রচুর ব্যানার, ফ্লেক্স দিয়ে এলাকা ভরিয়ে দেওয়া হবে।” ইনটাকের দিনহাটা মহকুমা সভাপতি হরিহর রায় সিংহ বলেন, ‘‘মনোনয়ন দাখিল হলেই প্রচারে ঝড় তুলব।” যা দেখে আপ্লুত অক্ষয়বাবুও কংগ্রেস অফিসের সামনে ওই নেতাদের জড়িয়ে ধরেন। অক্ষয়বাবু বলেন, “সবার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পাচ্ছি এটাই বড় প্রাপ্তি।” যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক আবদুর রউফ জানান, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ছি।
দল সূত্রের খবর, এদিন দিনহাটা শহরের ঝুড়িপাড়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচারে যান অক্ষয়বাবু। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকা থেকেই পুর ভোটে ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জিতেছিলেন উদয়নবাবু। ওই এলাকায় এদিন ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিএম নেতাদের সঙ্গে কর্মসূচিতে ছিলেন কংগ্রেস নেতা পীষূষ ভদ্র। দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ বলেন, “ জোটের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাই না।”
জোট শিবিরের অবশ্য দাবি, কংগ্রেস নেতাদের ওই উচ্ছ্বাসে দিনহাটা কেন্দ্রে লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ছে জোটের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেই। সেই বক্তব্যের ব্যাখাও দিচ্ছেন তাঁরাই। জোটের কয়েকজন কর্মী জানান, দিনহাটা কেন্দ্রে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ফজলে হক ইতিমধ্যে টিকিট না পেলে নির্দল হয়ে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। ফলে জোট ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয় কর্মীদের একাংশের মধ্যে। এ দিন দিনহাটার কংগ্রেস অফিসে অক্ষয়বাবুকে নিয়ে উন্মাদনা তাতে খানিকটা হলেও জল ঢেলে দিল। ফজলে হক ঘনিষ্ঠ শিবিরের অবশ্য দাবি, সাধারণ কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা ফজলে হকের দিকেই রয়েছেন। কিছু নেতা কি করলেন তাতে আখেরে কোনও লাভ হবে না। মানুষ হক সাহেবকেই চাইছেন।
দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী উদয়নবাবু এ দিন নয়ারহাট, নান্দিনা, পিনাকধরা এলাকায় দিনভর ভোট প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। উদয়নবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর দলের দিনহাটা ২ ব্লক সভাপতি মীর হুমায়ন কবীর প্রকাশ্যে ক্ষোভের কথাও জানিয়েছিলেন। এদিন তাঁকে নিয়েই গোটা এলাকা চষে প্রচার চালান উদয়নবাবু। এ নিয়ে স্বস্তির ছাপ ছিল তাঁর চোখেমুখেও। উদয়নবাবু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “মীর হুমায়ন কবীর ক্ষুব্ধ হয়ে বাঘের (সিংহ) চিহ্নে ভোট দেবেন বলে অনেকে ভেবেছিল। যেদিন থেকে হিমু মাঠে নেমেছে সেদিন থেকে সেই স্বপ্ন ভেঙেছে।” হুমায়ন বলেন, “ক্ষোভ-বিক্ষোভ নেই। দলের প্রার্থীকে জেতাতে হবে।”
সব মিলিয়ে ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, দিনহাটায় তত বাড়ছে ‘সঙ্গী’ গুরুত্ব।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy