প্রতীকী ছবি।
দল বদলায়, দ্বন্দ্ব বদলায় না। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে তখন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য কৃষ্ণকুমার (কিষাণ) কল্যাণী। কংগ্রেসেরই দখলে থাকা জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন মোহন বসু। কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, সে সময়ে কিষাণের ডাকা দলীয় সভায় বিশেষ দেখা যেত না মোহনকে। আবার পুরসভা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে ভাইস চেয়ারম্যানের মতামত বা পরামর্শও কিষাণবাবু নিতেন না বলেই প্রবীণদের দাবি। এই বিরোধ তুঙ্গে উঠেছিল ২০১০ সালের পুরভোটে। তখন কিষাণ তৃণমূলের জেলা সভাপতি এবং মোহন কংগ্রেসের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। রাজনৈতিক আক্রমণ সে সময় ব্যক্তিগত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল বলে দাবি করেন অনেকেই। নয় বছর ঘুরে এখন দু’জনে ফের একই দলে, তৃণমূলে। এই দুই নেতার দ্বন্দ্বেই আপাতত সরগরম জেলা তৃণমূল।
দ্বন্দ্ব মেটাতে ইতিমধ্যে আসরে নেমেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, তিন জেলা নিয়ে গঠিত তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব শনিবার সকালে ফোন করে নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মোহনের সঙ্গে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী যোগাযোগ করেছিলেন বলে খবর। আপাতত প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া থেকে দুই নেতাই বিরত রাখতে চাইছেন রাজ্য নেতৃত্ব। সোমবার মোহন বসুকে কলকাতায় ডেকেছেন রাজ্য নেতৃত্ব। মোহন যেতে রাজি। দলেরই এক কাউন্সিলরকে নিয়ে তিনি সোমবার দুপুরে কলকাতায় পৌঁছবেন। এ দিন মোহনের মন্তব্য, “আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। যে দিন থেকে রাজনীতিতে আছি, কোনও গোষ্ঠীবাজিকে প্রশ্রয় দিইনি।” কিষাণেরও মন্তব্য, “গোষ্ঠী রাজনীতিতে আমি নেই। বরাবর স্বচ্ছ নেতাদের সামনে রেখে দল করেছি, আগামীতেও তাই করব।”
দুই নেতার বিবৃতির লড়াই তৃণমূলের অন্দরে নতুন বিন্যাস তৈরি করেছে। সৌরভ চক্রবর্তী জেলা সভাপতি থাকাকালীন জলপাইগুড়িতে শাসক দলে মূলত দুই গোষ্ঠীর লড়াই ছিল। সৌরভ-বিরোধী গোষ্ঠীর রাশ ছিল জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। জেলা সভাপতি পরিবর্তনের ঘোষণার পর থেকেই সৈকতকে কিষাণের শিবিরে দেখা যাচ্ছে। নতুন সভাপতির হয়ে সংবাদমাধ্যমে গলাও ফাটাচ্ছেন সৈকত। জেলা সভাপতি পদ যাওয়ার পরে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ এখন নিজের কেন্দ্রে রয়েছেন। চা ব্যবসায়ী কিষাণ দলের সভাপতি হওয়ার চা শ্রমিকদের কী প্রতিক্রিয়া হবে, প্রকাশ্যে মোহন বসু সেই প্রশ্ন তোলেন। তাতে সৌরভ অনুগামীরা উৎসাহিত। সেই দলে যাঁরা একসময়ে নিজেদের মোহন-বিরোধী বলে জাহির করতেন, তাঁরাও এখন মোহন-প্রশংসায় মুখর। এই তালিকায় জেলা পরিষদের বেশ কয়েক জন সদস্য এবং দলের একটি শাখা সংগঠনের প্রধানও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়া নেতাদের কয়েক জন মোহন বসুর মাধ্যমে রাজ্য কমিটির কাছে নিজেদের বক্তব্য পৌঁছতে চাইছেন।
কর্মীদের একাংশের দাবি, পুরনো দিনের কংগ্রেসের মতো আপাতত জেলা তৃণমূলও কিষাণ-মোহন শিবিরে ভাগ হতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy