কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় সমস্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। দুই বিশ্ববি্দ্যালয় কর্তৃপক্ষই উচ্চ শিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়ে রয়েছে। তবে দার্জিলিং হিলস বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন আগে স্থায়ী উপাচার্যরা যোগ দেওয়ায় সকলে হাফ ছেড়েছেন। দুটোরই স্ট্যাটুট এখনও হয়নি। যদিও গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হয়নি।
চার সপ্তাহ হতে চলল উপাচার্য নেই কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আগামী ৯ ফেব্রয়ারি মেয়াদ শেষ হবে রেজিস্ট্রারেরও। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় চলবে কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাই উচ্চ শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে বর্তমান অবস্থার কথা জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দ্রুত পদক্ষেপের আর্জিও জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ দেবনাথ বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতির কথা আমরা ইতিমধ্যেই উচ্চ শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ হবে বলে আশা করছি।"
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ও দশ মাস ধরে উপাচার্যহীন। অডিট অফিসার, পরীক্ষা সমূহের নিয়মক, কলেজ সমূহের পরিদর্শকের মতো পদ ফাঁকা। অস্থায়ীভাবে একজন রেজিস্ট্রার পদ সামাল দিচ্ছে। মেয়াদ বাড়িয়ে একজন ডিনই সমস্ত বিভাগ দেখছেন। অডিট অফিসারের সম্মতি ছাড়া কোনও খরচ ছাড়তে পারছেন না ফিনান্স অফিসার। উচ্চ শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে এসব পদে আধিকারিক দিতে আবেদন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কয়েকদিন আগে উচ্চ শিক্ষা দফতর পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক পদে একজন আধিকারিককে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিলেও তিনি দায়িত্ব নিতে পারবেন না জানানোয় সমস্যা রয়েই গিয়েছে।
পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ওয়েবুকুপার জেলার সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবলু বর্মণ বলেন, "স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় গবেষণা-সহ অনেক কাজে সমস্যা হচ্ছে। কর্ম সমিতির বৈঠক হচ্ছে না। বেতন, পরীক্ষার মতো বিষয় নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়।’’ তিনি জানান, এরপর রেজিস্ট্রার না থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে। উচ্চ শিক্ষা দফতর দ্রুত ব্যবস্থা নেবে আশা করছি।
উপাচার্য নিয়ে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই সমস্যা চলছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিখিলেশ রায়কে অস্থায়ী উপাচার্য করে পাঠান রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যের সায় না থাকায় উপাচার্য-রেজিষ্ট্রার সঙ্ঘাত শুরু হয় বলে অভিযোগ। গত ৩ জানুয়ারি উপাচার্য পদ ছেড়ে উত্তরবঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরেন নিখিলেশ। উপাচার্যের অভাবে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)