আরও একটি মোহনের (কচ্ছপ) মৃত্যু হল কোচবিহারের বাণেশ্বর মন্দির সংলগ্ন শিব দিঘিতে। বুধবার সকালে শিব দিঘিতে দু’টি মোহনকে ভাসতে দেখা যায়। জল থেকে তুলে দেখা যায় একটির মৃত্যু হয়েছে। আর একটি অসুস্থ। বন দফতর দু’টি মোহনই উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। মৃত মোহনের ময়না-তদন্ত হবে। অসুস্থটির চিকিৎসা হবে। অভিযোগ, জল ও মাটি দূষণের জেরে ধারাবাহিক ভাবে মোহনের মৃত্যু হচ্ছে। যদিও বন দফতরের দাবি, মৃত মোহনের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।
বাণেশ্বরের শিব দিঘিতে দেড় শতাধিক মোহন হয়েছে বলে কয়েক বছর আগে দাবি করা হয়। ওই দিঘি ও মোহনদের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। ওই দিঘি থেকে মোহন ছড়িয়ে পড়েছে বাণেশ্বরের নানা জলাশয়ে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা এক হাজারের কম নয় বলে মোহন রক্ষা কমিটির দাবি। অভিযোগ, শিব দিঘির মোহনদের দেখভাল ঠিক মতো হয় না। খাবারও ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া মোহনেরা প্ৰতিনিয়ত রাজ্য সড়ক পারাপার হয়ে চলাচল করে। গত বছর অসুস্থতা ও দুর্ঘটনায় কয়েকটি মোহনের মৃত্যু হয়। তা নিয়ে প্রতিবাদে মুখর হন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা বন্ধ পর্যন্ত করেন। তার পরে মৃত্যু প্রতিরোধে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ বারে ফের অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল এক মোহনের। মোহন রক্ষা কমিটির সম্পাদক রঞ্জন শীল বলেন, ‘‘গত কয়েক মাসে ২৭টি মোহনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে প্ৰত্যেকে উদ্বেগে আছি। মোহনদের রক্ষা করতে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসা হোক। এর আগে মাটি দূষণের কথাও বলা হয়েছিল। সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হোক।’’
কোচবিহারের মহকুমাশাসক তথা কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বন দফতরের পাশাপাশি আমরাও বিষয়টি দেখছি। এমনিতে এ বারে মোহনের মৃত্যু অনেকটা আটকানো সম্ভব হয়েছে। তবে এ বারে কেন কচ্ছপ মারা গেল তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ কোচবিহারের এডিএফএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, ‘‘অসুস্থ মোহনের চিকিৎসা চলছে। মৃত মোহনের দেহ ময়না-তদন্ত করা হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)