বন্ধ-কাণ্ড: পুড়ে যাওয়া পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
বন্ধের দিন গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে পাঁচ নিরাপত্তাকর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে— সিআইডি সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। জানানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জন সিভিক, এক জন র্যাফ এবং দু’জন সশস্ত্র বাহিনীর পুলিশ। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় ডাকা বন্ধে সুজাপুর অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ। ভাল করে তদন্ত হলে স্পষ্ট হবে পুলিশের গাড়িতে আগুনের পিছনেও কারা রয়েছে।
এ দিকে বন্ধ ঘিরে গোলমালের পর থেকে আতঙ্ক ঘিরেছে গোটা জনপদকে। সোমবারও তা ছিল স্পষ্ট। কালিয়াচকের সুজাপুরের যোগী মোড়। এ দিন সকালে চার মাথার এই মোড়ের পাশেই চায়ের দোকানের উনুনে ফুটছিল দুধ। দোকানে গরম চায়ে চুমুক দিচ্ছেন দু’এক জন। দোকানের কর্মী আসিফ শেখ বলেন, ‘‘সোমবার সকাল থেকে দোকানে ভিড় নেই। বন্ধের আগের দিন পর্যন্ত দিনে ৫০০ কাপেরও বেশি চা বিক্রি হত। এখন সারা দিনে দুশো কাপ চা-ও বিক্রি হচ্ছে না। গোলমালের পর পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকাবাসীর সেই আতঙ্ক দূর করতে মাইকে প্রচার শুরু করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে টোটোয় চেপে পুলিশের তরফে সুজাপুর জুড়ে প্রচার করা হয়েছে। ধরপাকড়ের নামে সাধারণ মানুষের হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
মাইকে প্রচার করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
তার পরেও আতঙ্ক যেন কাটছে না সুজাপুরবাসীর। শহরবাসীর একাংশের দাবি, পুলিশ ঘটনায় ৩৩ জনের নাম মামলা রুজু করেছে। নামের তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও মামলা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশের উচিত প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া।
এমন পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় শান্তি বৈঠকের দাবিতে সরব হয়েছেন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সুজাপুরের বাসিন্দারা। এ দিন শান্তি বৈঠকের দাবিতে মালদহের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নূর। তিনি বলেন, ‘‘সুজাপুরে শান্তি বৈঠক করা প্রয়োজন। কারণ সেখানে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।’’ বাম ও কংগ্রেসের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মৌসম বলেন, ‘‘বাম-কংগ্রেসের ডাকে বন্ধ হয়েছিল। তাতে পরিস্থিতি কেন উত্তপ্ত হয়ে উঠল তা কংগ্রেস, বাম নেতাদের দেখা উচিথ।’’
এ নিয়ে ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘দলের তরফে বন্ধ ডাকা হলেও নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছিলেন সাধারণ মানুষও।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘পুলিশ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করছে। যে পুলিশকর্মীরা গাড়ি ভাঙচুর করল, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হল না।’’
মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের ভয় কাটাতে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy