শোভাযাত্রা: ঘোড়ায় চেপে সাংসদ। নিজস্ব চিত্র।
নেতাজি জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনে নেমে ঘোড়ার পিঠে চাপলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। সেই ভাবে চলে এলেন শিলিগুড়ি শহরের নেতাজি মোড়ে। তখন সেখানে বঙ্গজননী বাহিনীর একটি অনুষ্ঠান হচ্ছে। নেতাজির মূর্তির পাদদেশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছবি, তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে অঙ্কন প্রতিযোগিতা চলছে। সেই অনুষ্ঠানের মাঝে সংসদ নেতাজির মূর্তিতে মালা দেন। তিনি সেখানে ভাষণ দেওয়ার সময় সেই বঙ্গজননী বাহিনীর অনুষ্ঠানে যান দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার। বিজেপির অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত রঞ্জন সেখানেই বসে থাকেন। বিজেপির অনুষ্ঠান শেষ হলে কিছুক্ষণের মধ্যে নেতাজি মোড়ের মূর্তিতে মালা দিতে যান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনিও অঙ্কন প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে বসেন। এই দুই দলের অনুষ্ঠানের আগে বামেদের পক্ষ থেকে সেখানে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। সেখানে ছিলেন পুরসভার চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য। মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকারও শহরের বিভিন্ন জায়গায় নেতাজির মূর্তিতে মালা দিয়েছেন।
শনিবার শিলিগুড়িতে নেতাজির জন্মদিন পালনে এমন প্রতিযোগিতা দেখা গেল রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। শহরের অনেকেই বলছেন, ভোটের তাগিদেই এই টানাটানি। যদিও সাংসদ রাজু বিস্তা বলছেন, পরাক্রম দিবসে (নেতাজি জয়ন্তীর এই নাম দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার) রাজনীতি না রাখাই উচিত। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাজিকে নিয়ে যে রাজনীতি করছে, তা রাজ্যে দুর্ভাগ্যের বিষয়।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার সাংসদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে জানান, দার্জিলিঙের সাংসদ একজন পরিযায়ী। নেতাজি সম্পর্কে বলার আগে ভাল করে পড়াশোনা করা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকবার দিনটি পালন করি। দেশপ্রেম দিবসে নতুন করে বিজেপিই প্রতিযোগিতায় নেমেছে।’’ শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরাই হাতি মোড়ের মূর্তিতে প্রথম মালা দিয়েছি। তৃণমূল-বিজেপি যেভাবে দলের পতাকা নিয়ে দিনটি পালন করছে, তাতে মনে হচ্ছে নেতাজি তাদের দলের সদস্য।’’
এ দিন জলপাইগুড়িতেও রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে নেতাজি নিয়ে ‘প্রতিযোগিতা’ দেখা গিয়েছে, বলছেন সেই শহরের বাসিন্দারা। নেতাজির জীবন আদর্শের কথা প্রচারের চেয়ে একে অপরকে খোঁচা দিতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন নেতানেত্রীরা। জলপাইগুড়ি তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলে, ‘‘নেতাজির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হলে কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর না করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বন্দর করা হত। বাংলার মানুষ উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত আছেন।’’
জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে পরাক্রম দিবস পালন করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য বড় স্ক্রিনে শোনানো হয়েছে। জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘‘যাঁরা নেতাজিকে দেশছাড়া করেছিলেন, আজ তাঁরাই ঘটা করে নেতাজির জন্মদিন পালন করছেন। কংগ্রেস ও বামপন্থীরা কেন্দ্রীয় সরকারে থাকাকালীন নেতাজির জন্মদিনকে কেন জাতীয় দেশপ্রেম দিবস হিসেবে ঘোষণা করেননি?’’ জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সলিল আচার্য বলেন, ‘‘২০০৭ সালে বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা করেছিলেন। বর্তমান রাজ্য সরকার সেই ঘোষণাকে নাকচ করে দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy