Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

নথি সংগ্রহে ব্যস্ত, দেরি ধান বিক্রিতে

শ্রমিক না পাওয়ায় ধান ঝাড়াই করতে পারেননি বলে জানান চাষিদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এনআরসি আতঙ্কে এখন সকলে নথি সংগ্রহে ব্যস্ত।

প্রতীক্ষা: লোডশেডিং থাকায় দুপুর ১টাতেও শুরু হয়নি ধান বিক্রি, অপেক্ষায় কৃষকেরা। বালুরঘাটের কিসানমান্ডিতে শনিবার। নিজস্ব  চিত্র

প্রতীক্ষা: লোডশেডিং থাকায় দুপুর ১টাতেও শুরু হয়নি ধান বিক্রি, অপেক্ষায় কৃষকেরা। বালুরঘাটের কিসানমান্ডিতে শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
হবিবপুর শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪৬
Share: Save:

শনিবার দুপুর ১২টা। মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী কৃষক বাজারে চলছে সরকারি উদ্যোগে ধান কেনা। ধান বিক্রির জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হাজির হবিবপুরের শাহবানপুর গ্রামের বাসিন্দা দিরি হাঁসদা। রেজিস্ট্রেশনে দেরি কেন? তিনি বলেন, “মাত্র চার বিঘা ধানের জমি রয়েছে। এবারে আবহাওয়ার কারণে সময়ে ধান চাষ হয়নি। জমি থেকে ধান কাটতে পারলেও ঝাড়াই করতে পারিনি। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকদের কেউ আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডে নাম সংশোধন করতে ছুটছেন জেলা সদরে।” তাই এখনও জমির ফসল ঘরে তোলা যায়নি বলে জানালেন তিনি।

দিরি হাঁসদার মতোই হবিবপুরের অনেকেই শ্রমিক না পাওয়ায় ধান ঝাড়াই করতে পারেননি বলে জানান চাষিদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এনআরসি আতঙ্কে এখন সকলে নথি সংগ্রহে ব্যস্ত। তাই কাজ ফেলে শ্রমিকদের একাংশ ছুটছেন জেলা সদরে। হবিবপুরের বাসিন্দা ফুলু মুর্মু, মিনু সোরেনেরা বলেন, ‘‘ভিটে থাকলে খাবার জোগাড় হয়ে যাবে। তাই আগে ভিটে রক্ষার জন্য কাজ ফেলে সর্বত্র ছুটে বেড়াচ্ছি। বাড়ির নথি ঠিক করার কাজ করছি।’’

আর সাধারণ মানুষের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফড়েরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, কৃষকদের জমির পরচা নিয়ে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে নাম নথিভুক্ত করে নিচ্ছে ফড়েরা। তার পরে কুইন্টাল কুইন্টাল ধান সরকারি কেন্দ্রে বিক্রি করে চলে যাচ্ছে। যদিও ফড়ে-রাজ রুখতে সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্তারা। মালদহের খাদ্য সরবরাহ দফতরের নিয়ামক পার্থ সাহা বলেন, “নিয়মিত ধান ক্রয়কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি চালানো হচ্ছে। চাষিরা যাতে ফড়েদের ধান বিক্রি না করে তার জন্য সচেতনতামূলক প্রচারও চলছে।”

এবারে জেলায় ২ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লক্ষ মেট্রিক টন। আর জেলায় ধান উৎপাদন হয়েছে সাড়ে পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে এবারে ধান উৎপাদনও বেশি হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর থেকে জেলায় সরকারি ক্রয়কেন্দ্রগুলিতে ধান কেনা শুরু হয়েছে। খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত জেলায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।

দফতরের এক কর্তা বলেন, “আবহাওয়া, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কের কারণে শুরুর দিকে ধান কেনার গতি কম রয়েছে। সেই গতি বাড়ানোর জন্য চাষিদের সচেতন করা হচ্ছে। কুইন্টার প্রতি চাষিদের ১৮৩৫ টাকা দেওয়া হচ্ছে।” হবিবপুরের ১২ মাইলের চাষি সাধন ঘোষ বলেন, “ধান বিক্রির তারিখ আগেও পেয়েছিলাম। তবে জমির ধান শ্রমিকের অভাবে সময়ে ঝাড়াই করতে পারিনি। তাই দেরি করে ধান বিক্রি

করতে হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Rice Balurghat CAA NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy