Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
financial crisis

Pandemic: করোনা-কল্যাণে আজ ‘রোজগেরে’ চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র

ছাত্রটি জানাল, কেউ তাকে জোর করে কাজে পাঠায় না। তার দাবি, সে নিজের ইচ্ছেতেই কাজে যায়। তবে সেই সঙ্গে পড়াশোনাও চালাবে সে।

শৈশব: ভ্যান ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রটি।

শৈশব: ভ্যান ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রটি। নিজস্ব চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৪৭
Share: Save:

যে দিন স্কুলে যায় না, সেদিন ছাত্রটি রাজমিস্ত্রির জোগানদারের কাজ করতে যায়। অথবা কাকার ভ্যান ঠেলতে যায়। তার জন্য টাকা পায়। সেই টাকা মায়ের হাতে এনে দেয়। করোনা আবহের আগে একা মা রোজগার করতেন। এখন মায়ের সঙ্গে ‘রোজগেরে’ হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রটিও।

জলপাইগুড়ির সুকান্তনগরের বাড়িতে মা আর ছেলে দু’জনে থাকে। মা মিনু রায় (নাম পরিবর্তিত) পরিচারিকার কাজ করেন। ছেলেকে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মা। করোনার শুরুতে মায়ের কাজ চলে গিয়েছিল। স্কুল বন্ধ হওয়ায় ছাত্রটিরও পড়াশোনা বন্ধ হয়। পরিচারিকার কাজ করে মিনু ছেলের জন্য গৃহশিক্ষক রাখতে পারেননি। তখন থেকেই আশপাশে দোকানে টুকটাক কাজ করে উপার্জন শুরু করেছিল দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। গত বছর থেকে কাকার সঙ্গে রাজমিস্ত্রির জোগানদারিতে যায় সে। স্কুল যখন খুলল, দু’বছর পার হয়ে গিয়েছে। চতুর্থ শ্রেণিতে উঠেছে সে। যদিও কাজে যাওয়ার অভ্যেস রয়েই গিয়েছে। কাকার সঙ্গে এখনও রাজমিস্ত্রির কাজে যায়, ঠেলাভ্যানও ঠেলে।

বুধবার জলপাইগুড়ি শহরের করলা সেতুতে ওঠার মুখে চড়াই রাস্তায় দেখা গেল ছাত্রটি কাঠ বোঝাই ভ্যান ঠেলছে। ভ্যান চালাচ্ছে ছাত্রটির কাকা। তিনি বললেন, “প্রতিদিন ওকে কাজে সঙ্গে নিয়ে যাই না। যেদিন স্কুল বন্ধ থাকে সে দিন যায়।” কিন্তু বুধবার তো স্কুল খোলা ছিল। এ বার ভ্যান ঠেলতে ঠেলতেই ছাত্রটি বলল, “প্রতিদিন স্কুলে যাই না। কয়েকদিন কাজে যাই, কয়েকদিন স্কুলে যাই।” কী কী কাজ করে তার ফিরিস্তিও দিল ছোট করে চুল কাটা একরত্তি ছেলেটি। বলল, “সিমেন্টের কড়াই ধরে থাকতে পারি, বস্তা টানতে পারি, পাথরের ঝুড়িও টানি। ভ্যানগাড়ি ঠেলতে পারি।”

ছাত্রের কাকা জানালেন, কাজের জন্য প্রতিদিনই ছাত্রের হাতে কিছু না কিছু টাকা দেন। শহরের একটি অন্যতম প্রথমসারির প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রটি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানাল। কাকার কথা শেষ হওয়ার আগেই সে বলল, “আমি মায়ের হাতে টাকা দিয়ে দিই।” তাকে কি কাজে যেতে জোর করা হয়?

ছাত্রটি জানাল, কেউ তাকে জোর করে কাজে পাঠায় না। তার দাবি, সে নিজের ইচ্ছেতেই কাজে যায়। তবে সেই সঙ্গে পড়াশোনাও চালাবে সে। ছাত্রটির কথায়, “মা বলেছে পড়াশোনা করলে চাকরি পাওয়া যায়।”

অন্য বিষয়গুলি:

financial crisis COVID-19 Pandemic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy