প্রতীকী ছবি।
কয়েক দিন ধরেই ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দীনবন্ধু মিত্র সরণির বাসিন্দারা একটি বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন। বুধবার সকালে শিলিগুড়ি থানা এলাকায় সুভাষপল্লি পোস্ট অফিস সংলগ্ন পাড়ার ভিক্টর চক্রবর্তীর বাড়ির চালে মানুষের হাড়গোড় দেখতে পেয়ে চোখ কপালে ওঠে এলাকাবাসীর। স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর ঘটনা জেনে পুলিশকে জানান। পুলিশ আসার আগে পালালেও পরে ধরা পড়ে অভিযুক্ত যুবক। তদন্তে নানা প্রসঙ্গ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন ‘তন্ত্রসাধনা’। পুলিশের একাংশ আবার কলকাতার রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়াও দেখছে। ২০১৩ সালে ওই যুবকের মা মারা যাওয়ার পর তাঁর দেহ দাহ করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ।
এ দিন সকালেই ওই যুবকের ঘর থেকে আরও কিছু হাড়গোড় মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। পুলিশকর্তারা জানান, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, পোস্ট অফিস পাড়ায় নিরীহ যুবক বলেই ভিক্টরকে চেনে সকলে। একাই থাকেন বাড়িতে। তাঁর বাবা-মা কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। খুলি পাওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর চালচলনে সন্দেহ করেননি কেউ। ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর নিখিল সাহানি বলেন, ‘‘বাড়িতে অস্বাভাবিক কিছু কাজ হচ্ছে বলে একদিন আগেই এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানলাম, ওই বাড়িতে রাতে কিছু লোকজনের আনাগোনা রয়েছে।’’
ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা রাজু সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি, ভিক্টরের বাড়ি থেকে কঙ্কাল উদ্ধার হবে। ওকে অনেক দিন ধরে চিনি। অস্বাভাবিক আচরণ করত না। ’’
ভিক্টরের বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, কংক্রিটের একতলা বাড়ির উপরে অ্যাসবেস্টসের চাল। জানালায় মাকড়সার জাল, ঘরের ভিতরে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে ছড়ানো বাক্স-প্যাঁটরা। মেঝেয় উল্টে তোষক, ভাঙা ওয়াশিং মেশিন। জিনিসপত্রের মধ্যেই মিলল আমের পল্লব (শাখ) পুঁথি, পাতি লেবু, পাকুড় পাতা। পাশেই থাকেন ভিক্টরের মামাতো ভাই শুভদীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে যা ঘটে চলেছে, মোটেই সহজভাবে নেওয়ার মতো নয়।’’ পরে অবশ্য ওই বাড়ির লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ভিক্টরের এক বোনের স্বামী ডাক্তারি পড়তেন। তাঁর ফেলে যাওয়া ট্রাঙ্ক থেকে হাড়গোড়, বই— সব ছড়িয়েছিলেন ভিক্টর।
শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া হাড়গুলি ফরেন্সিক তদন্তে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে নিশ্চিত হয়েই বলা সম্ভব, সেগুলি মানুষের দেহাবশেষ কিনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy