Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
bjp

ফালাকাটা থেকে ধৃত বিজেপি নেতা সুবোধ

ইসলামপুরের পুলিশ সুপার সচিন মাক্কার বলেন, ‘‘চোপড়ায় গত রবিবার যে গণ্ডগোল হয়েছিল, সেখানে নেতৃত্ব দেন সুবোধ। তা ছাড়াও ওই ছেলেটির পরিবার থেকে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল।’’ সৌমেনের সঙ্গে এই ঘটনার কী যোগ আছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

অভিজিৎ পাল
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৭:৩১
Share: Save:

চোপড়ায় সাম্প্রতিক গন্ডগোলের সময়ে সরকারি সম্পত্তির নষ্ট, পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক সুবোধ সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় আর এক বিজেপি নেতা সৌমেন ঘোষকেও। ইসলামপুরের পুলিশ সুপার সচিন মাক্কার বলেন, ‘‘চোপড়ায় গত রবিবার যে গণ্ডগোল হয়েছিল, সেখানে নেতৃত্ব দেন সুবোধ। তা ছাড়াও ওই ছেলেটির পরিবার থেকে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল।’’ সৌমেনের সঙ্গে এই ঘটনার কী যোগ আছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুবোধ যে গা ঢাকা দিয়েছেন, সেটা বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিল পুলিশ। এ দিন তাঁকে গ্রেফতারের পরে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘আমাদের নেতা-কর্মীকে যেখানে পারছে গ্রেফতার করে চোপড়ার নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছে। দিল্লিতে দলীয় বৈঠক হচ্ছে। সেখানে জেলার সভাপতি ও গিয়েছেন। এলাকার সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে।’’
চোপড়ায় মেয়েটির মৃত্যুকে ঘিরে গত রবিবার থেকে উত্তপ্ত চোপড়া। সেখানে বিজেপি নেতৃত্বে আন্দোলনে সামিল হন এলাকার বাসিন্দারা। দীর্ঘক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা। সেখানে পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়া, পুলিশের গাড়িতে এবং সরকারি বাসে আগুন ধরানোর ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে, লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরদিন ছেলেটির দেহ উদ্ধার হয়। তারপর তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, যুগলে আত্মঘাতী হয়েছিল ওই ছেলেটি ও মেয়েটি। তত দিনে সুবোধের খোঁজ মিলছে না। শেষে এ দিন তাঁকে ফালাকাটা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রথমে হেমতাবাদ এবং পরে চোপড়াকে দাড়িভিটের মতো আন্দোলনের ক্ষেত্র করে তুলতে চেয়েছিল বিজেপি। দাড়িভিটে পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানো এবং দুই মৃত্যুর প্রতিবাদে যে আন্দোলন হয়েছিল, তার রেশ লোকসভা ভোটেও পড়েছে বলে মনে করেন অনেকে। সেই সময়ে তৃণমূল কিছুটা হলেও পিছু হটেছিল বলে দলেরই অনেকে মনে করেন। সেই জায়গায় এগিয়ে এসে আন্দোলনে তাপস-রাজেশের বাড়ির লোকের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি। দেবশ্রী চৌধুরী তখন নিয়মিত দাড়িভিট যেতেন। পরের লোকসভা ভোটে জিতে তিনি এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে চোপড়া বা হেমতাবাদে সমস্যা কোথায় হয়েছে? প্রশাসন তো বটেই, রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশ দ্রুত রহস্য উদ্ঘাটন করেছে। হেমতাবাদে মৃত দেবেন্দ্রনাথ রায়ের স্ত্রী প্রথমে রাজনৈতিক গোলমালের কথা বলেননি। তিনি দাবি করেন, দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে স্বামীকে। তাঁর স্বামীর কাছে যে অনেকে টাকা ধার করেছিলেন, সে কথাও বলেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, দেবেনের মৃত্যুর পিছনে টাকাপয়সা জনিত লেনদেনই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
চোপড়ার ক্ষেত্রেও পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ছেলেমেয়ে দু’টি যুগলে আত্মহত্যা করে। দু’জনের ব্যবহার করা মোবাইল ফোন থেকেই যথেষ্ট সমাধান সূত্রে মিলেছে বলেই দাবি পুলিশের। তাদের বক্তব্য, এ সবই বিজেপি নেতারা জানতেন। তবু এই ঘটনাকে তাঁরা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে মিলে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বদলে ফেলতে চেয়েছিলেন, বলছে পুলিশ।
বিজেপি অবশ্য দু’টি ঘটনাকে একত্র করে দাবি করেছে, এই রাজ্যে রাজবংশীদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারও একই অভিযোগ তুলেছিলেন। বিজেপির দাবি, দু’টি ঘটনারই সিবিআই তদন্ত হোক।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP North Dinajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy