প্রতিবাদ: বাসিন্দাদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
ভোটে জেতার পর দার্জিলিং পাহাড়ে গিয়ে প্রথমবার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। সাংসদের কনভয় আটকে প্রায় চার ঘণ্টা কালো পতাকা দেখানো হয় বলে অভিযোগ। কোনও গাড়ি ভাঙচুর বা কাউকে মারধর করা না হলেও বিক্ষোভকারীরা কাউকে এক পা-ও এগোতে দেননি। টানা স্লোগানের সঙ্গে মহিলারা সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রাস্তা আটকে রাখেন বলে দাবি। সাংসদ অভিযোগ করেন, পুলিশ থাকলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল চারটে অবধি দার্জিলিঙের তাকভর-সিংলা রোডে গাড়িতে টানা বসে থাকতে হয় সাংসদকে। পরে পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাঁচটা নাগাদ রাস্তা থেকে বিক্ষোভকারীরা সরে গেলে সাংসদ সিংলায় যান।
বিজেপির অভিযোগ, এর পিছনে বিনয় তামাং, অনীত থাপার সমর্থকেরা রয়েছেন। যদিও বিনয় তামাংদের দাবি, ‘‘সাংসদ আলাদা রাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটে জিতেছেন। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের স্মারকলিপি দিয়ে নিজের ছবির প্রচার করা ছাড়া তিনি কী করছেন, সেটা পাহাড়ের মানুষ জানতে চাইছেন। তাই মানুষ রাস্তায় নেমেছেন।’’ বিনয় জানান, ‘‘কোনও দল বা সংগঠনের এর জন্য প্রয়োজন হয় না। বিজেপি কী ভাবে ধোঁকা দিচ্ছে, সেটা পাহাড়বাসী বুঝতে পারছেন। আগামীতেও বিজেপি নেতাদের কাছে মানুষ জবাব চাইবে।’’
এ দিন সকালে কনভয় নিয়ে তাকভর সিংলা এলাকায় যাচ্ছিলেন রাজু বিস্তা। একসময় বিমল গুরুঙের খাসতালুক বলে পরিচিত এলাকাটি এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। গুরুং অনুগামীরা কেউ বিনয় শিবিরে, কেউ জিএনএলএফে নাম লিখিয়েছেন। তাঁকে ভোটে জেতানোর জন্য ধন্যবাদ দিতে এ দিন সাংসদ এলাকায় যাচ্ছিলেন। সিংলার আগেই রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু হয়। তার মাঝেই প্রায় ৮টির গাড়ির কনভয় নিয়ে সাংসদ গিয়ে আটকে পড়েন। ‘সাংসদ রাজু বিস্তাকে চাই না’, ‘কোথায় আমাদের গোর্খাল্যান্ড’— এমন স্লোগান ওঠে। সেই সমাবেশে শতাধিক তরুণ-তরুণী ছিলেন বলে দাবি।
বিনয় তামাংরা এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে এনআরসি-তে এক লক্ষ গোর্খার নাম বাদ যাওয়ার প্রসঙ্গও তুলে আনেন। বিনয়দের এমন অভিযোগে এর আগে শুনে সাংসদ বলেছিলেন, ‘‘সব ভুয়ো খবর চাউর করা হচ্ছে।’’ পরে অবশ্য তিনি মেনে নেন, ৭০-৮০ হাজার গোর্খার নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিনয় এ দিন বলেন, ‘‘এতেই বোঝা যাচ্ছে, সাংসদ একেক সময় একেক কথা বলেন।’’ বিনয় গোষ্ঠীর তাকঘর সমষ্টির নেতা নির্মল ছেত্রী বলেন, ‘‘রাজু বিস্তা শান্ত তাকভর এসে ফের গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করবেন, এমন আশঙ্কা করে বাসিন্দারা পথে নেমেছিলেন মনে হয়।’’
বিজেপির অভিযোগ, এলাকার বাইরে থেকে মদ্যপ যুবকদের নিয়ে এসে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করেছেন বিনয়, অনীতেরা। রাজু বিস্তার অভিযোগ, ‘‘পুলিশের একাংশের সামনেই দুই ঘণ্টা ধরে রাস্তা আটকে তাণ্ডব চলেছে। এরা সকলেই মদ্যপ অবস্থায় থাকলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একজন সাংসদ নিজের এলাকায় ঘুরতে পারছেন না, এতেই বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের কী অবস্থা চলছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy