স্বজনহারা: অনুপের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তাঁর মা। ইটাহারে। নিজস্ব চিত্র
ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ে অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে সরব বিজেপি। ওই দলের দাবি, ওই যুবক তাদের সমর্থক ছিলেন। তাঁকে খুন করা হয়েছে।
২৮ অগস্ট রায়গঞ্জের ঘুঘুডাঙ্গায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুষ্কৃতীরা লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই করে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এর আগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বুধবার দুপুরে আরও এক অভিযুক্তকে আটক করে রায়গঞ্জ থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অনুপকুমার রায় (২৪)। বাড়ি ইটাহার থানার নন্দনগ্রামে। গাড়িচালক অনুপ বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা নেতৃত্বের দাবি। একই দাবি অনুপের পরিবারের লোকেদেরও। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে অনুপকে খুন করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তা নিয়ে সরব হয় বিজেপি। এ দিন রাতে পাঁচ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এসপি-র কাছে স্বামীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন অনুপের মা গীতা।
জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, ‘‘তৃণমূল ও পুলিশের যৌথ চক্রান্তে জেলায় বিজেপি নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের উপরে আক্রমণ বেড়ে চলেছে। এর আগে হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায় ও চোপড়ায় এক তরুণ ও কিশোরীকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করেছে। এ বার বিজেপি করার অপরাধে তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ অনুপকে মিথ্যা মামলায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে থানায় নিয়ে গিয়ে খুন করল।’’ তাঁর দাবি, দেবেন্দ্রনাথ ও চোপড়ায় দু’জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পাশাপাশি অনুপের মৃত্যুর তদন্তে তাঁরা সিবিআই-কে চান।
জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব সরকারের অভিযোগ, পুলিশ ওই খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে বুধবার রাতের অন্ধকারে বেআইনি ভাবে হাসপাতালের মর্গে তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করিয়েছে। তিনি বলেন, “পুলিশ জোর করে অনুপবাবুর পরিবারের লোকেদের ময়নাতদন্তের নথিতে সই করিয়েছে। দলের তরফে বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের কাছে ওই দেহের ফের ময়নাতদন্ত করানোর দাবি জানানো হয়েছে। তা না করা পর্যন্ত মর্গ থেকে অনুপের মৃতদেহ নেওয়া হবে না।” অনুপের দাদা অজয় রায় বলেন, “বিজেপির সমস্ত অভিযোগ ও দাবির সঙ্গে আমরা সহমত।”
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, ‘‘থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই যুবক বেহুঁশ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আইন মেনেই ওই যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মস্তিস্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।”
ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্য ও জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘দেবেনবাবু ও চোপড়ায় যুগলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো ইটাহারের ওই যুবকের মৃত্যু নিয়েও বিজেপি পুলিশ ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে রাজনীতি শুরু করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy