বিনয় তামাং। — ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড় নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের সমালোচনায় সরব বিনয় তামাং। বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত কাজে শিলিগুড়িতে ছিলেন তিনি। তাঁর দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি শাসক দলকেই দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময় পাহাড়বাসীর জমির পাট্টার বন্দোবস্ত করার আশ্বাস তাঁকে সে দলের তরফে দেওয়া হলেও, কার্যত তা করা হয়নি। অভিযোগ, পাহাড়ের ‘পরিবেশ’, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা’ ঠিক রাখতে তৃণমূল নেতৃত্বকে জানানোর পরেও, আমল দেওয়া হয়নি।
বিনয়ের দাবি, ‘‘আমি হতাশ। পাহাড়ের জমির অধিকারের বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সব বন দফতর, চা-বাগান, সিঙ্কোনা বাগান, ডিআই ফান্ড বা সরকারি ডেভেলপমেন্ট এলাকার জমি। পাট্টার প্রক্রিয়া সরকার বললেও করেনি। তেমনই, পাহাড়ের গণতন্ত্র বাঁচাতে বা দুর্নীতি ঠেকাতে কিছুই করা হল না।’’ তিনি জানান, তৃণমূলকে চিঠি দিয়ে পরিস্থিতির কথা আগাম জানালেও, নেতৃত্ব সে কথায় কান দেননি। তাঁর বক্তব্য, তাঁর কথায় আমল না দিলেও তৃণমূলকে বিষয়গুলো মোকাবিলা করতেই হবে।
আপাতত তাঁর রাজনৈতিক জীবনের চতুর্থ ইনিংসে বিনয়। সুবাস ঘিসিংয়ের হাত ধরে জিএনএলএফ, বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৈরির পরে, শেষে বছরখানেক সরাসরি তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল না। শেষে অজয় এডওয়ার্ড, বিমল গুরুংদের সঙ্গে নতুন করে নানা কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দলের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে ফেলেন বিনয়। এবং বুধবার দার্জিলিং পুরসভার অনাস্থা ভোটের পরে দলই ছাড়লেন।
বিনয় বলেন, ‘‘রাজনীতি ফুটবল ক্লাবের মতো। কাল থেকে অনেক জায়গা থেকেই ডাক পাচ্ছি। কথাও হচ্ছে অনেকের সঙ্গে। দেখা যাক, কোন ক্লাবে যাই। তবে গোর্খা জাতির স্বাভিমান আর দাবির জন্য যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের পাশেই থাকব।’’
এ দিনও তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব বিনয়কে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। পাহাড়ে তৃণমূলের সভানেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘এখানে যা হচ্ছে, আমরা কলকাতায় দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে যা বলার, রাজ্য নেতৃত্বই বলবেন।’’ ঘটনা হল, কলকাতায় গিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের হাত ধরেই বিনয় তৃণমূলে যোগ দেন।
এ দিনই দিল্লি থেকে জেলায় ফিরেছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। পাহাড়ে শাসকদলই অস্থিরতা তৈরি করতে চায় বলে সরব হয়েছেন সাংসদ। তিনি বাগডোগরা বিমানবন্দরে বলেন, ‘‘দু’দশক ধরে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। কয়েক বছর পরে একটা নির্বাচিত পুরবোর্ড হল। তাকেও রাজ্যের শাসকদলের নির্দেশে সরানো হল। পাহাড়ে রাজ্য অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।’’
সাংসদের এই বক্তব্য নিয়ে পাহাড়ের সভানেত্রীর দাবি, ‘‘বিজেপির বড় বড় কথা না বলাই উচিত। কারণ, পাহাড়ের কোনও দাবিই আজপর্যন্ত পূরণ করেনি কেন্দ্র। রাজ্য সরকারই পাহাড়কে শান্তি আর উন্নয়নে বেঁধেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy