পাঁচ বছরের মধ্যে ফের দল ছাড়লেন পাহাড়ের গোর্খা নেতা তথা প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিনয় তামাং। বুধবার দার্জিলিং পুরসভায় অনাস্থা ভোটে তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা অনীত থাপার দলের সঙ্গে যৌথ বোর্ডে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দেন বিনয়। এ বার তিনি পুরনো নেতা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুংয়ের হাত ধরবেন, বন্ধু তথা হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ডের সঙ্গে শামিল হবেন, না কি নতুন কোনও ফ্রন্টের নেতৃত্ব দেবেন, সেটাই দেখার।
বিনয় অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি তৃণমূলের কর্মী। নিজেকে দলের থেকে সরিয়ে নিলাম। দল যা শাস্তি বা বিধান দেবে, মেনে নেব। পাহাড়ের গণতন্ত্র হরণের বিরুদ্ধে সরব হবই।’’ বিনয় এখন তৃণমূলের জিটিএ সদস্য। যা নিয়ে তিনি বলছেন, ‘‘সময় মতো সব জানাব। মুখ্যমন্ত্রীকে পাহাড়ের দুর্নীতির দিকটি দেখতে বলছি।’’
২০১৭ সালে পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে বিমল গুরুং আন্দোলনে নামেন। সে আন্দোলনে বহু মানুষ মারা যান, সরকারি সস্পত্তি নষ্ট হয়, পুলিশ অফিসার খুন হন। একশো দিনের উপরে পাহাড়ে বন্ধ চলে। সে সময় গুরুংয়ের সমালোচনা করে অনীত থাপা-সহ আরও নেতাদের নিয়ে বিনয়ই রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। জনমুক্তি মোর্চার অন্দরে কার্যত দু’টি উপদল তৈরি হয়। বিনয়কে মোর্চার সভাপতি ঘোষণা করা হয়। গুরুং তখন পাহাড়ছাড়া। জিটিএ প্রধান থেকে বিধানসভার ভোটের টিকিট— সবই পান বিনয়।
পরে মোর্চায় কোণঠাসা হয়ে পড়েন বিনয়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে দল ছাড়েন। গুরুং পাহাড়ে ফেরায় তিনি দলের পতাকা গুরুংয়ের হাতে তুলেও দেন। এর পরেই অনীত থাপা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা তৈরি করেন। পুরনো দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীই এখন অনীত-শিবিরে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে অনীতের সুসম্পর্কের কথা পাহাড়বাসী জানেন। শেষে, বিনয়কে তৃণমূলে নেওয়া হয়। জিটিএ ভোটে টিকিট পেয়ে জিতেও যান তিনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অনীতের সঙ্গে সম্পর্কে ‘টানাপড়েন’ বিনয়ের ছিলই। তাই তিনি অজয় এডওয়ার্ড ও বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। গত ১০-১১ ডিসেম্বর তিন জনে দিল্লিতে আলাদা রাজ্যের দাবিতে কর্মশালায় যোগ দেন। সে সময় নিজের ‘গোর্খা’ অস্তিত্বের কথা জানান দেন বিনয়। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন রাজনীতির অধ্যায় দ্রুত আসবে। বাকি জীবনটা জাতির জন্য কাজ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy