ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে ‘দুই ভাই’কে আর প্রয়োজন নেই বলে পরোক্ষে বিনয় তামাং, অনীত থাপাকে উদ্দেশ্য করে বললেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। তাঁর বক্তব্য, তিনি একাই তৃণমূলকে বিধানসভা ভোটে জেতানোর ক্ষমতা রাখেন। রবিবার বিকেলে কার্শিয়াঙের সিটং-লাটপাঞ্চারের সেলফু মাঠে জনসভা করেন গুরুং। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে বসে বিজেপির হয়ে তৃণমূলের প্রার্থী অমর সিংহ রাইকে লক্ষ লক্ষ ভোটে হারিয়েছি। ডুয়ার্সে, তরাইয়ে প্রভাব পড়েছে। আর এ বার তো আমি এলাকায় সশরীরে হাজির। পাহাড়ের ক্ষমতালিপ্সু দুই ভাইয়ের প্রয়োজন নেই। আমি একাই তৃণমূলকে জেতাব।’’
সম্প্রতি চাউর হয়ে যায়, রাজ্য সরকারের কাজকর্মে অসন্তুষ্ট বিনয় এবং অনীত বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করতে কলকাতা যাওয়ার বিষয়টি ‘বিজেপির সঙ্গে বৈঠক’ বলে প্রচার হয়। যা বিনয়েরা একেবারেই ‘মিথ্যা, ষড়যন্ত্র’ বলে জানিয়ে দেন। এই প্রসঙ্গ তুলে গুরুং বলেছেন, ‘‘কাউকে ভয় দেখানোর বিষয় নেই। বিজেপির দিকে চলে যাব চলে যাব ভেবে থাকলে চলে যাও, এতে পাহাড় পরিষ্কার হয়ে যাবে। যাঁরা ক্ষমতায় থেকেও ভোট জিততে পারেন না, তাঁদের কী ক্ষমতা তা জানা আছে।’’
যা শুনে বিনয় তামাংরাও পাল্টা গুরুংকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। বিনয়ের কথায়, ‘‘শুধু আমি-আমির রাজনীতি বন্ধ করে আমরা শব্দটা পাহাড়ে এনেছি। ২০১৭ সাল থেকে এখন পরিবেশ, পরিস্থিতি বদল হয়ে গিয়েছে, উনি হয় তো তা বুঝছেন। তাই কথা বললেই আমাদের নাম বলতে হচ্ছে।’’ আর গোর্খাল্যান্ডের মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে উনিই তো পাহাড়বাসীর ভোট নিয়েছিলেন বলে বিনয়ের অভিযোগ।
অনীত থাপা গাড়িতে চড়ে হেঁটে বসে, জিটিএ-র চেয়ার বাঁচাতে গত শনিবার পদযাত্রা করেছেন বলে গুরুং সভা মঞ্চ থেকে অভিযোগ করেছেন। দুর্নীতি করে অনীত জলের ট্যাঙ্ক টাকা ‘বোঝাই’ করেছেন বলেও সুর চড়িয়েছেন গুরুং, রোশন গিরিরা। এই নিয়ে অনীতের জবাব, ‘‘অপ্রাসঙ্গিক লোকজনের কথার জবাব দিয়ে সময় নষ্ট করব না। সেই সময় পাহাড়বাসীর কাজে দেব। শুধু বলব, যা ইচ্ছা বলো, করো। কিন্তু গোলমাল, অশান্তি পাকালে দেখে নেব।’’
গত ২০ ডিসেম্বর, সাড়ে তিন বছর পর দার্জিলিং ফেরেন গুরুং। মোটর স্ট্যান্ডের সভা থেকে নিজেকে ‘পাহাড়ের অভিভাবক’ বলে বিনয়, অনীতকে পাহাড় ছাড়ার ঘোষণা করেন। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনীত থাপা শনিবার মোটর স্ট্যান্ডে সভা করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেন গুরুংকে। তবে বিষযটি যে গুরুংপন্থীরা আর এগোতে চান না তা রোশন গিরির কথায় স্পষ্ট হয়েছে। রোশন বলেছেন, ‘‘আমরা কাউকে পাহাড়ের বাইরে যেতে বলছি না। পাহাড়বাসী যা বলার বলে দেবে।’’
রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন ছাড়াও জিটিএ-র কাজকর্ম নিয়ে সিটংয়ের সভা থেকে সরব হয়েছেন গুরুং। মংপুতে বিশ্ববিদ্যালয়, যোগীঘাট সেতু, দার্জিলিঙে মডেল স্কুল, সিঙ্কোনা বাগানে উন্নয়ন, আয়ুর্বেদিক কেন্দ্রের মতো নিজের আমলের একাধিক বড় প্রকল্পের রূপরেখার উল্লেখ করেন গুরুং। তাঁর তৈরি প্রকল্পের ফিতে কাটা ছাড়া গত তিন বছরে কী উন্নয়ন জিটিএ করেছে, তার জবাব জানতে চান। আর যা নিয়ে অনীত থাপার জবাব, ‘‘মানুষ এবং সরকার দেখছে, সব জানে। বাকি কে কী বলব, তা জানার দরকার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy