সিংমারিতে মোর্চার দফতরে রিলে অনশন শুরু। —নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ের রাজনৈতিক সমাধান না করে যদি গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর নির্বাচন করা হয়, তা হলে অনশনে বসবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ে নতুন করে আন্দোলনের এই হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন বিমল গুরুং। সেই মতো সোমবার থেকে রিলে অনশন শুরু করলেন মোর্চা কর্মীরা। পাহাড়ে এই মুহূর্তে পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। পাশাপাশি, সোমবার বুদ্ধপূর্ণিমাও রয়েছে। ফলে অনশন করার প্রশাসনিক অনুমতি মেলেনি। তাই আপাতত সিংমারিতে দলীয় কার্যালয়েই রিলে অনশন শুরু হয়েছে।
গত ১৪ মে দার্জিলিঙের একটি বেসরকারি হোটেলে দলের বিভিন্ন কমিটির কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন বিমল। সেখানে আসন্ন জিটিএ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পরেই বিমল হুঙ্কার দেন অনশনে বসার। তাঁর এ বারের দাবি, রাজ্য সরকার জোর করে জিটিএ নির্বাচন চাপিয়ে দিলে চুপ থাকবে না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এ নিয়ে আমরণ অনশনে নামার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। জিটিএ নির্বাচন হতে পারে জুনে। তাই তার আগে থেকেই সরব হওয়ার কৌশল নিয়েছেন বিমল।
এ নিয়ে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি সোমবার বলেন, ‘‘শিমলা থেকে দলের সুপ্রিমো বার্তা দিয়েছেন চৌরাস্তায় অনশনের জন্য। তবে সংশ্লিষ্ট দফতর বন্ধ থাকায় চৌরাস্তায় অনশন করার অনুমতি আজ মেলেনি। তাই দলীয় কার্যালয় থেকেই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। পাহাড়ের রাজনৈতিক সমাধান বা গোর্খাল্যান্ড এই দাবি আমরা করছি না। কিন্তু শিলিগুড়ি, তরাই এবং ডুয়ার্সকে জিটিএ-র অন্তর্গত করা হোক। ২০১১ সালের ১৮ জুলাই যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল জিটিএ নিয়ে সেই হিসাবে সমস্ত ক্ষমতা দেওয়া হোক। সমস্ত দফতর জিটিএ-কে হস্তান্তর করা হোক। এটাই আমাদের দাবি। যদি তা না মানে রাজ্য সরকার তা হলে দলের সুপ্রিমোর নির্দেশ অনুযায়ী আমরা আমরণ অনশন করব। আজ পাঁচ জন অনশনে বসেছেন। আগামিকাল অন্য পাঁচ জন অনশন করবেন। আপাতত রিলে অনশন চলবে।’’
মোর্চার অনশন নিয়ে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনিত থাপা বলেন, ‘‘আগে জিটিএ নির্বাচন দরকার। বোর্ড গঠন হওয়ার পর, বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা করে প্রস্তাব পাশ করা যাবে। কিন্তু এই ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনও মানে নেই।’’
অন্য দিকে, ভারতীয় গোর্খা সুরক্ষা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা এসপি শর্মা বলেন, ‘‘জিটিএ নির্বাচনের আগে পাহাড়ের সাধারণ মানুষের দাবি পূরণ করতে হবে। রাজনৈতিক কারণে জেলবন্দিদের সম্পূর্ণ ভাবে মুক্তি দিতে হবে। এটা রাজ্যের কাছে আবেদন। অন্য দিকে, নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের উপরেও আমরা চাপ বাড়াব।’’
অন্য দিকে, হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘‘কোন দল কী করল তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। গোর্খাল্যান্ড কোনও একটি রাজনৈতিক দলের ইস্যু নয়। আলাদা রাজ্য সকলের মনের ইচ্ছে। অনেক রাজনৈতিক দলই সেটা নিজেদের দাবি বলে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করছে। আমাদের কাছে জিটিএ নির্বাচনের কোনও মানে নেই। কিন্তু নির্বাচন হলে আমরা অংশগ্রহণ করব। কিন্তু আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, গোর্খাল্যান্ড।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy