বিমল গুরুং।
দীর্ঘ দু’দশক পরে গ্রাম দখলের লড়াই দেখলেন পাহাড়বাসী। শনিবার সাতসকাল থেকে চা বাগান থেকে পাহাড়ি গ্রাম— সর্বত্র ভোট চলল উৎসবের মেজাজেই। বৃষ্টি হলেও ভোট থামেনি। তবে বহুদিন পর ব্যালটে ভোট দেওয়া-নেওয়ার প্রক্রিয়া এতটাই ধীরে চলল যে, কালিম্পং, দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি গ্রামে ভোট গড়াল রাত অবধি। এটাও পাহাড়ের ভোটে বহু বছর দেখেনি পাহাড়বাসী। তবে খুবই কম দেখা মিলল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। অভিযোগ, বহু জায়গায় সকাল থেকেই বুথ সামলালেন রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। যদিও সিভিকদের দায়িত্ব ছিল বুথের বাইরে লাইন সামাল দেওয়ার। রাত অবধি পাহাড়ে কম-বেশি ভোট পড়েছে ৬০-৭০ শতাংশ।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেছেন, ‘‘ব্যালটে ভোট হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ভোটের হিসাবে আসছে। গোলমালের খবর নেই।’’ কালিম্পঙের জেলাশাসক আর বিমলাও প্রায়ই একই সুরে কথা বলেছেন। জিটিএ প্রধান তথা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার শীর্ষ নেতা অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের গ্রামে জনপ্রতিনিধিরা ২৩ বছর পরে ফিরছেন। ভোট শান্তিতে হয়েছে। শান্তি বজায় রেখে যাওয়াটা আমাদের কাজ।’’
তবে বিরোধী ‘মহাজোটের’ ঐক্যের ছবিটা নড়বড়ে ছিল ভোটের দিনেও। বেলা গডাতেই একই সুরে কথা বললেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতিও। সেই সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিজেপির তৈরি ‘মহাজোট’ শেষ হচ্ছে বলেও ঘোষণা করে দেন বিমল গুরুং। তাতে আখেরে শাসক দলের লাভ হয়েছে বলেই পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন। গুরুং বলেছেন, ‘‘ভোট শান্তিতে শেষ করতে হবে। গ্রামে গ্রামে বহুদিন দিন জনপ্রতিনিধিরা কাজ শুরু করবেন। আমি আলাদা রাজ্য নিয়ে আবার ময়দানে নামব। তবে মহাজোট এ দিন সন্ধ্যা থেকে শেষ। নতুন রণনীতি পরে তৈরি হবে।’’ একই কথা কয়েক দিন আগে বলেছিলেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডও।
সোনাদা, সিপাহিধূরা, জোরবাংলো, পোখরিবং, সুখিয়াপোখরি, গরুবাথান, মংপু থেকে নেপানিয়া, পানিঘাটা, জাবরাতেও ভাল ভোট হয়েছে। বহু জায়গায় নির্দলদের দেখা মিলেছে। মিরিকে এবং কার্শিয়াঙের নীচের দিকে ছিল তৃণমূলও। পানিঘাটা দাঁড়িয়ে তৃণমূলের পাহাড়ের অন্যতম নেতা বিন্নি শর্মা বলেন, ‘‘সবাই মিলেই এলাকায় শান্তিতে ভোট হয়েছে। বহু নির্দলে আমাদের লোকেরাই আছেন।’’ তবে শান্তির মধ্যেও কিছু অশান্তির খবরও সামনে এসেছে। কালিম্পঙে ভালুকোপে বিজেপি প্রার্থী এনামুল লেপচার বাড়িতে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাঁর কিশোরী মেয়েকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মংপুতে শাসক দলের এক পঞ্চায়েত স্তরের প্রার্থীর ব্যালটে ছাপ মারার ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ভাইরাল হয়েছে। সন্ধ্যার পরে মিলেছে হুমকির অভিযোগও।
আর রাতে বিরোধী শিবিরের সেনাপতি, সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট হয়েছে। টাকা এবং পেশিশক্তির খেলা চলেছে। কালিম্পঙে আমাদের প্রার্থীর কিশোরী মেয়েকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। ভোটের নামে প্রহসন হল।’’ অভিযোগ মানেনি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা।
ভোট পরিচালনায় অশোক, জীবেশ
শিলিগুড়ি: দলীয় কার্যালয়ে বসে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় দলের ভোট পরিচালনার কাজ করলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য এবং দলের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার, জেলা সম্পাদক সমন পাঠকের মতো নেতারা। শনিবার সকাল থেকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন তাঁরা। সেখান থেকেই ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার দলের নেতাদের কাছ থেকে পরিস্থিতির খোঁজ নেন এবং প্রয়োজন মতো নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy