তাণ্ডব: শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে গাছ পড়ে বিপত্তি। নিজস্ব চিত্র
প্রায় আধঘণ্টার প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে একেবারে লন্ডভন্ড অবস্থা হল শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকার। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আকাশ কালো করে ঝড় বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হয়। শহরবাসীরা জানাচ্ছেন, গত এক দশকে শিলিগুড়ি বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় এমন ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। অতীতে এক দফায় এমন ঝড়ে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল শহরের। এ দিন শতাধিক গাছ রাস্তায় ভেঙে পড়ে। রাস্তায় রাস্তায় তার ছিঁড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে শহর। প্রবল হাওয়া, বৃষ্টি থামলে দেখা যায়, বহু গাড়ি, টিনের বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। বহু আবাসনে জল নেই৷ পুরসভায় কোনও বোর্ড না থাকায় সমস্যা বাড়ে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শুরু হয়েছে। প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
পুরসভার কমিশনার সোনাম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ভাবে ছয়টি দল আর বরো ভিত্তিক দল উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে। বিকালের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া শুরু করেছে। আমরা নজরদারি বজায় রেখেছি।’’
তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ড বা প্রশাসনিক বোর্ড না থাকায় উদ্ধার কাজে সমস্যা হয়। কারও বাড়ির টিন উঁড়ে গিয়েছে। রাস্তা ছাড়া বহু বাড়িতে গাছ ভেঙে পড়ে। বড় বড় হোর্ডিং, শেডকে বহুতলের উপর থেকে উড়ে এসে পড়তে দেখা গিয়েছে। সারাদিন জল ছিল না বহু এলাকায়। কিন্তু কাউন্সিলর-কোঅর্ডিনেটর না থাকায় কার সঙ্গে বাসিন্দারা যোগাযোগ করবেন তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। দেশবন্ধুপাড়ার বিকাশ পাঁজি, গেটবাজারের নির্মল বেরা, হাকিমপাড়ার সমর পালেরা বলেন, ‘‘নির্বাচনের কমিশন ভোট শেষ না হওয়া প্রশাসনিক বোর্ডকে পুরসভায় কাজ করতে দেবে না। কমিশনকে তাহলে মানুষের নাগরিক পরিষেবার দায়িত্ব নিতে হবে। একজন দু’জন সরকারি অফিসার দিয়ে কি বিরাট শহরের পরিষেবা বা দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব!’’
এ দিন ঝড়ে শহরের গাছ পড়ে বহু এলাকায়। শুধুমাত্র ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫টি গাছ পড়েছে বলে বিদায়ী কাউন্সিলর কমল আগরওয়াল জানিয়েছেন। সূর্য সেন পার্কের ভিতরের একটি বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। পার্কের পাশে মহাকালপল্লির প্রধান রাস্তায় গাছের ডাল পড়ে যাতায়াত কিছুক্ষণের জন্য হয়েছিল। নবীন সেন রোডে উপর একটি বড় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ে। মহাত্মাগাঁধী মোড় পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ যানজট হয়। পাশে হিলকার্ট রোডের উপর একটি বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়ে। পাকুরতলা থেকে সেবক রোড যাওয়ার রাস্তায় গাছের ডাল পড়েছে। কোথাও অনেকটা দেরিতে গাছ সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। গজলডোবা ভোরের আলোর বাজারে বেশিরভাগ অস্থায়ী দোকানের শেড উড়ে যায়। চয়নপাড়া, শিবরামপল্লি, ফুলবাড়ি, গজলডোবা, গেটবাজার, বিদ্যাসাগরপল্লি, হায়দারপাড়া, ডাবগ্রাম, প্রধাননগরে ছবিটাও এক।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, এই অঞ্চলে পশ্চিমি হাওয়ার প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের উপরের অংশ প্রবল ভাবে নিম্নচার অক্ষরেখা অবস্থান করছিল। তার প্রভাবেই এই পরিস্থিতি। আজ, শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি বদল হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy