বাঁ দিক থেকে বিডিও দীপ্তি সাঁও এবং বিডিও অফিসের কোষাধ্যক্ষ সুনীল কেরকেট্টা। —নিজস্ব চিত্র।
দুয়ারে সরকারের ‘উৎসাহ ভাতা’র টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করে উঠল দার্জিলিঙের খড়িবাড়ি বিডিও অফিসের কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সুনীল কেরকেট্টা বেশ কয়েক জনের ব্যাঙ্কে পাঁচ হাজার করে টাকা পাঠিয়ে পরে সেই টাকা ফেরত চান বলে অভিযোগ। এ নিয়ে জানাজানি হতেই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন স্বয়ং কোষাধ্যক্ষ। অন্য দিকে, খড়িবাড়ির বিডিও দীপ্তি সাঁও জানিয়েছেন এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। শাসকদলের অভিযোগ, এই সব কাজের জন্য সরকারের নাম খারাপ হচ্ছে।
দুয়ারে সরকার শিবিরে নিযুক্ত সরকারি কর্মীদের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ‘উৎসাহ ভাতা’ দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয় কর্মীদের। শিবিরে নিযুক্ত সরকারি কর্মীদের নামের তালিকা নোডাল অফিসার এবং বিডিও মারফত ট্রেজারিতে পাঠানো হয়। কিন্তু খড়িবাড়ি বিডিও অফিসে এই নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মাতাদির একটি গার্লস হস্টেলের কর্মী প্রশান্তি টোপ্পো, সুমিত্রা কুজুর, রুবিরা এক্কা এবং প্রতিভা বাখলা, এই চার কর্মীর অ্যাকাউন্টে এ ভাবেই সরকারি টাকা ঢুকেছে। এঁদের মধ্যে স্বর্ণা অভিযুক্ত সুনীলের স্ত্রী। সরকারি অফিসের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বর্ণা তাঁর চার সহকর্মীর ব্যাঙ্কের তথ্য নেন। এ-ও জানিয়ে দেন যে তাঁর কিছু টাকা সহকর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। পরে তিনি তুলে নেবেন।
অভিযোগ, গত ২৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়ির ট্রেজারি থেকে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে পাঁচ হাজার করে টাকা ঢোকে। মোবাইলের মেসেজ দেখেই অ্যাকাউন্টের মালিকরা বুঝতে পারেন এটা সরকারি টাকা। কিন্তু সরকারি অর্থ আসার মতো তো তাঁরা কোনও কাজই করেননি। সন্দেহ হয় প্রশান্তি, প্রতিভাদের। তাই তাঁরা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে স্বর্ণাকে দেননি। পরে ট্রেজারি মারফত ওই টাকা ফিরিয়ে দিতে চান। এর মধ্যে স্বর্ণা এবং তাঁর স্বামী সুনীল ওই টাকা দেওয়ার জন্য বার বার চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ। এর পর আর বিষয়টি চাপা থাকেনি। শুরু হয় শোরগোল।
বিডিও অফিসের কোষাধ্যক্ষ সুনীল গোটা বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েও বিস্ফোরক দাবি করেছেন। তিনি বলেন, গোটা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েই করা হয়েছে। বিডিওকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমেই অপ্রস্তুত হতে পড়েন। পরে তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’’ অন্য দিকে, খড়িবাড়ি বিডিও অফিসের কোষাধ্যক্ষ সুনীলের ব্যাখ্যা, ‘‘দুয়ারে সরকারে এমন অনেকেই কাজ করেছেন যাঁদের সঠিক কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। কিন্তু তাঁদের কাজের টাকা তো তাঁদের দিতে হবে। সে জন্যই অন্য অ্যাকাউন্টে ওই টাকাগুলো নেওয়া হয়েছে ট্রেজারি মারফত। সেখান থেকে টাকা তুলে তাদের টাকা দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। এটা বিডিও ম্যাডাম জানেন। তাঁর অনুমতিতেই করা হয়েছে।’’ কিন্তু এই প্রশ্ন করতেই খড়িবাড়ির বিডিও দীপ্তি সাঁওকে খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে বলেন, ‘‘এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও কথা বলব না।’’ পরে অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের কাছ থেকেই বিষয়টা শুনলাম। তদন্ত করে দেখতে হবে।’’ ইতিমধ্যে এ নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে খড়িবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রত্না সিংহ বলেন, ‘‘এমন ঘটনার ফলে আমাদের সরকার কলঙ্কিত হচ্ছে। বিষয়টি আমি পঞ্চায়েত স্বরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ-সহ জেলাশাসকদের নজরে আনব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy