বাজেয়াপ্ত করা পিকআপ ভ্যানে সেগুন কাঠের গুঁড়ি। নিজস্ব চিত্র।
পিক-আপ ভ্যানে করে ‘কাঠ পাচারের’ সময়ে এক বনকর্মীকে গাড়ি চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোরে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের দক্ষিণ কামাখ্যাগুড়ি এলাকায় ‘কাঠ পাচার’ ঠেকাতে গিয়ে আহত হলেন কামাখ্যাগুড়ি মোবাইল রেঞ্জের বনকর্মী মহাদেব দাস। অভিযোগ, মহাদেবকে ধাক্কা মেরে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় চালক। গাড়িটির পিছনে ধাওয়া করেন বাকি বনকর্মীরা। তিন বারের চেষ্টায় লক্ষাধিক টাকার সেগুন কাঠ-সহ গাড়ির চালক বছর তেইশের আলি হোসেনকে গ্রেফতার করেন বন দফতরের কামাখ্যাগুড়ি মোবাইল রেঞ্জের বনকর্মীরা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পিক-আপ ভ্যানটি। আহত বনকর্মীর পা ভেঙে গিয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব উপক্ষেত্র অধিকর্তা দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘‘কাঠ পাচারের অভিযোগে আলি হোসেনকে আদালতে পেশ করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বন দফতরের কাজে বাধা এবং বনকর্মীদের উপরে আক্রমণের ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশে খুনের চেষ্টার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপন খবরের ভিত্তিতে সেগুন কাঠ পাচার রুখতে বৃহস্পতিবার ভোরে কামাখ্যাগুড়ি মোবাইল রেঞ্জের রেঞ্জার রানা গুহের নেতৃত্বে বনকর্মীরা অভিযান চালান। বনকর্মীদের ১০ জনের একটি দল রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে ছিল সূর্যের আলো ফোটার আগে থেকেই। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, সে সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল সেগুন কাঠ বোঝাই একটি পিক-আপ ভ্যান। বনকর্মীরা রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে গাড়িটিকে দাঁড়ানোর সঙ্কেত দেওয়ার পরেও, সেটি না থেমে বেপরোয়া ভাবে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বনকর্মীরা রাস্তার পাশে ছিটকে পড়েন। তখনই মহাদেব দাস আহত হন। বনকর্মীদের কয়েক জন ফের ওই গাড়িটির পিছু নেন। তিন বারের চেষ্টায় লক্ষাধিক টাকার সেগুন কাঠ-সহ অভিযুক্ত গাড়ির চালক আলি হোসেনকে গ্রেফতার করেন বনকর্মীরা। বন সহায়ক পদে কর্মরত মহাদেব দাসকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
অভিযোগ, গাড়ির চালক আলি গ্রেফতারের পরেও বনকর্মীদের হুমকি দেয়। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি, ঘটনার তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া যুবকের বিরুদ্ধে এর আগেও দু’টি খুন, গাঁজা পাচার এবং চুরির মতো অভিযোগ রয়েছে। এক বনকর্তা জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থাকা পুরনো মামলার বিষয়েও খোঁজখবর শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই কাঠ পাচারের মামলায় অভিযুক্তকে আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy