আহত রায়গঞ্জ থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর চঞ্চলকুমার সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।
মোবাইল ফোন চুরিতে অভিযুক্ত এক যুবককে গণপিটুনির হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে উন্মত্ত জনতার হামলার মুখে পড়ল পুলিশ। মাথা ফাটল এক পুলিশ আধিকারিকের। আক্রান্ত হলেন পুলিশকর্মীরা। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি ওই অভিযুক্তের মোটরবাইকে ভাঙচুর চালিয়ে সেগুলি জ্বালিয়ে দেওয়া হল। শনিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানা এলাকায় এই ঘটনায় মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, রায়গঞ্জের ভাটোল ফাঁড়ি এলাকার আমতলা মোড়ে শনিবার রাতে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে মুস্তাকিন আহমেদ নামে এক যুবককে ধরে ফেলে লোকজন। অভিযুক্তকে মারধর শুরু করে ক্ষিপ্ত জনতা। খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর (এএসআই) চঞ্চলকুমার সিংহ পুলিশকর্মীদের ঘটনাস্থলে নিয়ে পৌঁছন। অভিযুক্তকে বাঁচাতে গেলেও ক্ষিপ্ত জনতার রোষের মুখে পড়েন তাঁরা। জনতার দাবি, মোবাইল চোরকে পিটিয়ে মেরে ফেলার জন্য তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। তবে সে দাবি মানতে অস্বীকার করায় পুলিশের উপরে চড়াও হয় উন্মত্ত জনতা। অভিযোগ, তাদের মারধরে চঞ্চলকুমারের মাথা ফেটে যায়। আহত হন কয়েক জন পুলিশকর্মী। এর পর পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছাড় দেওয়া হয়নি মুস্তাকিনের মোটরবাইকটিকেও। সেটিও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। উত্তেজনা প্রশমনে রাতেই রায়গঞ্জ থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী গিয়ে আহত যুবক-সহ ওই পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধার করে। তাঁদের রায়গঞ্জের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে চঞ্চল বলেন, ‘‘মোবাইল চুরির খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। আমতলায় সাধারণের হাতে আক্রান্ত হয়েছি। তাতে আমি মাথায় চোট পেয়েছি। আমাদের গাড়িতেও ভাঙচুর করেছে।’’ পুলিশের উপরে আক্রমণের অভিযোগে ন’জনকে গ্রেফতার করে রবিবার রায়গঞ্জ আদালতে তোলা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে দু’জনের পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত এবং পাঁচ জনের১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। দু’জন নাবালক হওয়ায় তাদের জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় চাপা উত্তেজনা ছড়িয়েছে রায়গঞ্জের ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ইউসুফ আলি বলেন, ‘‘শনিবার রাতে আমতলা মোড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে মোবাইল চোর সন্দেহে মারধর করছিল জনতা৷ অভিযুক্তকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের ওপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। ঘটনায় আহত হন এক পুলিশ আধিকারিক। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দিক পুলিশ, এটাই দাবি এলাকাবাসীর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy