শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০১ সাল নাগাদ।ফাইল চিত্র
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে প্রথম দেখি ১৯৬৮ সালে, কলকাতায় গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের রাজ্য সম্মেলনে। তিনি তখন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক। শুনেছিলাম, তিনি কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো। সে সময় থেকে তিনি শিলিগুড়ি, দার্জিলিং আসতেন। নকশালপন্থী আন্দোলন যে বিপথে সেটা এখানে এসে যুবদের বোঝাতেন। শিলিগুড়িতে আমাদের বাড়িতেও থাকতেন। কখনও তাঁকে কথায়, বক্তব্যে খারাপ শব্দ ব্যবহার করতে শুনিনি। এমন নিপাট ব্যবহারের রাজনীতিবিদ গোটা দেশে আর দেখিনি।
১৯৯১ সালে যখন নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হলাম, তিনি তার পূর্ণমন্ত্রী। আমাকে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে বলতেন। যখন মুখ্যমন্ত্রী হলেন তখন বলেছিলেন, ‘‘দার্জিলিং সমস্যার নিরসনে আমি কোনও রক্তপাত চাই না। সংঘর্ষ নয়, আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমস্যা মেটাতে হবে।’’’ সে কারণে বাধা এলে দলের জেলা সম্মেলন পাহাড় থেকে সরিয়ে সমতলে করতে বলেন। আমরা অসন্তুষ্ট দেখে বলেছিলেন, ‘‘তোমরা বুঝবে না। পুলিশ দিয়ে, গুলি চালিয়ে সম্মেলন করে বাহবা নিতে চাই না।’’ এখন বুঝি কতটা দূরদর্শী ছিলেন।
জিএনএলএফ নেতা সুবাস ঘিসিংয়ের দাবি মেনে বুদ্ধদা ষষ্ঠ তফসিলের প্রস্তাব গ্রহণ করে কেন্দ্রের কাছে পাঠান। কেন্দ্রে স্ট্যান্ডিং কমিটি বিলম্ব করে। এর মধ্যে পাহাড়ে সুবাসের হাত থেকে নেতৃত্ব যায় বিমল গুরুংয়ের হাতে। কেন্দ্র ও বিমলদের সঙ্গে আবার কথা বলে সমাধান-সূত্র হল জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) গঠন। এটা ২০১১ সালের শুরুতে। বুদ্ধদা বললেন, ‘রাজ্যে নির্বাচন। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া অনৈতিক হবে।নতুন সরকার যারা গড়বে তারাই দেখবে।’’
ভুটান সীমান্তে তখন কেএলও মাথা চাড়া দিচ্ছে। দলের লোকদের উপর হামলা করছে। কেন্দ্রকে দিয়ে ভুটানের সঙ্গে কথা বলিয়ে কেএলও দমনে কড়া পদক্ষেপ করলেন। তবে কেপিপি’র মতো ভাষা আন্দোলনকারীদের প্রতি সহানূভূতি ছিল। বার বার আলোচনা চেয়েছেন। শিল্প করতে চেয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের জন্য। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ গড়ে সেখানে উত্তরবঙ্গের সব দলের বিধায়কদের রাখলেন। শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চ, মহাবীরস্থানের উড়ালপুল-সহ বহু উন্নয়ন কাজ করেছিলেন। মাটিগাডা় উপনগরী তৈরিতে তিনি অনেক সাহায্য করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy