উপাচার্যকে সংবর্ধনা বাংলা বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে দায়িত্ব নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই বাংলার শিক্ষক দীপককুমার রায়। আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নির্দেশে মঙ্গলবার সকালে তিনি এই দায়িত্ব নেন। প্রায় আড়াই মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-পদ ফাঁকা ছিল। সোমবারই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। সোমবার বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ আচার্য-সহ মামলার সব পক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। দু’সপ্তাহ পরে শুনানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর, তার পরেই রাতে রাজ্যপালের দফতরের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দীপককে উপাচার্য পদে নিয়োগ করার নির্দেশিকা পাঠানো হয়। তাতে পরবর্তী নির্দেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত দীপক উপাচার্য পদে থাকবেন বলে জানানো হয়েছে। দীপকের বক্তব্য, ‘‘আদালতের নির্দেশ নিয়ে মন্তব্য করব না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্চ কমিটি না থাকায় অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। প্রস্তাবিত উপাচার্য হিসেবে কিছু দিন আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষকের নাম রাজভবনে যায়। রাজ্যপাল আমাকে মনোনীত করায় আমি কৃতজ্ঞ। ’’
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, বাণিজ্য ও আইন অনুষদের প্রাক্তন ডিন দীপকের আদি বাড়ি জলপাইগুড়ির আমগুড়িতে। বর্তমানে শিলিগুড়ির শিবমন্দির এলাকায়ও তাঁর বাড়ি রয়েছে। ১৯৯৮ সালে অসমের কোকরাঝাড় গভর্নমেন্ট কলেজে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০৮ সালে দীপক উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন। ২০১৬ সালের অগস্ট মাস থেকে তিনি এখনও পর্যন্ত রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন স্থায়ী উপাচার্য অনিল ভুঁইমালিকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বদলি করে রাজ্য সরকার। এর পর রাজ্যপালের অনুমোদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তথা দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়। সেই সঞ্চারীকে এ বছরের ৮ মার্চ রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। রাজ্যপালের অনুমোদনে রাজ্য শিক্ষা দফতর ৯ মার্চ তিন মাসের জন্য রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক জ্যোৎস্নাকুমার মণ্ডলকে। ৮ জুন তাঁর পদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে, তিনি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। এর পর রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ ফাঁকা ছিল। এ দিন উপাচার্য পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর দীপক বলেন, "আমি যত দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে রয়েছি, তত দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন, গবেষণা, প্রশাসনিক ও পরিকাঠামোগত কাজের উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাব।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকারের দাবি, এত দিন রাজ্যপালের অনুমোদনে রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ ও তাঁদের বদলির নির্দেশিকার চিঠি আসত। দুর্লভ বলেন, ‘‘এই প্রথম রাজ্যপালের দফতর থেকে সরাসরি দীপকবাবুকে উপাচার্য পদে নিয়োগের নির্দেশের চিঠি এসেছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, আড়াই মাস ধরে উপাচার্য না থাকায় প্রশাসনিক, পঠনপাঠন ও পরিকাঠামোগত বিভিন্ন কাজ বন্ধ ছিল। দুর্লভ বলেন, ‘‘উপাচার্য নিয়োগ হওয়ায় এখন সব কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy