ধৃত: কোর্টের পথে সেনা জওয়ান ও তাঁর সঙ্গী। —নিজস্ব চিত্র
ভারতীয় সেনায় দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত। মাঝেমধ্যে ছুটি নিয়ে চুরি, ব্যাঙ্ক ও এটিএম লুট করাই ছিল অভ্যাস। শেষে হাতেনাতে ধরা পড়লেন সেনাবাহিনীতে ল্যান্সনায়েক পদে কর্মরত এক জওয়ান। ২৫ জানুয়ারি রাতে শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ায় একটি এটিএম থেকে টাকা লুট করতে গিয়ে সঙ্গী রাহুল কুমারের সঙ্গে ধরা পড়েন প্রবীণ কুমার নামে ওই জওয়ান। তাঁদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হতেই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরে সম্প্রতি একের পর এক ব্যাঙ্ক-এটিএম লুটের চেষ্টা চালিয়েছিলেন এই দু’জনেই। ১২ জানুয়ারি রাতে কোর্ট মোড়ের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এটিএম লুটের চেষ্টা হয়। হামলা হয় নিরাপত্তারক্ষীর উপরেও। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেলেও দুষ্কৃতীর খোঁজ করতে পারছিলেন না পুলিশ আধিকারিকেরা। ১৬ জানুয়ারি রাতে রামকৃষ্ণ চকে জোড়া ব্যাঙ্ক লুটের চেষ্টা হয়। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভল্ট কাটলেও টাকা নিতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। নড়েচড়ে বসে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের প্রতিটি থানা। সমস্ত ব্যাঙ্ক, এটিএম কাউন্টারে নজর রাখছিলেন পুলিশকর্মীরা। ২৫ জানুয়ারি রাতে ফের দেশবন্ধুপাড়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের একটি এটিএম কাউন্টারে লুটের জন্য ঢোকে ওই সেনা জওয়ান ও তার সঙ্গী। তখনই শিলিগুড়ি থানার পুলিশ হাতেনাতে ধরে। ঘটনাস্থলে সেনা জওয়ান পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়েন। সেনার পরিচয় দিয়ে হুমকি দিতে থাকেন। গ্যাস কাটার, স্প্রে রং ও আরও কিছু সরঞ্জাম পাওয়া যায় দু'জনের কাছে। পরে আদালতে তুলে এদের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এঁদের জেরা করেই শহরের অন্য তিনটি লুটের চেষ্টার ঘটনায় এঁদের ভূমিকা উঠে আসে।
প্রবীণের কীর্তি
• ১১ বছর ধরে ভারতীয় সেনায় কর্মরত প্রবীণ কুমার
• কর্মস্থল উত্তর সিকিম। সেখান থেকে শিলিগুড়িতে আসা-যাওয়া ছিল
• হরিয়ানার বাসিন্দা।
• ২০২০ সালে হরিয়ানায় লুটের ঘটনায় ধৃত, ৪২ দিনের জেল। ছাড়া পেয়ে ফের সেনায় যোগ
• জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন
• জানুয়ারির গোড়ায় দিল্লি থেকে বিমানে শিলিগুড়িতে আসেন
• শিলিগুড়িতে গ্যাস কাটার ও লুটের সরঞ্জাম কেনেন। সিসি ক্যামেরার জন্য কালো স্প্রে-ও কেনেন
• পুলিশ হেফাজতে নানা ভাবে অসহযোগিতা তদন্তকারীদের। সেনার পরিচয় দিয়ে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ
সেনার তরফেও তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহের কথায়, ‘‘সেনা জওয়ান ও তাঁর সঙ্গী হরিয়ানার বাসিন্দা। তাঁদের নামে পুরনো মামলাও রয়েছে। বিষয়টি সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। আমরা ভেবেই অবাক হচ্ছি একজন সেনা জওয়ান এ সব ঘটনায় কীভাবে যুক্ত থাকতে পারেন।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, হরিয়ানায় একটি চুরির মামলায় ৪২ দিন জেলে ছিলেন সিকিমে কর্মরত প্রবীণ। বাহিনী থেকে কিছুদিনের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন। এরপর হরিয়ানায় যান। পরে দিল্লি থেকে বিমানে শিলিগুড়িতে আসেন। সঙ্গী রাহুল কুমার শহরেই ছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। তাকে নিয়ে প্রবীণ একের পর এক এটিএম ও ব্যাঙ্কে লুটের চেষ্টা চালান। ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনার তরফেও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy