মাঝ রাতের শিলিগুড়িতে আধো অন্ধকারের দুনিয়ায় এখন তিন তাসের খেলার নাম বদলে হয়েছে ‘থ্রি চিয়ার্স’!
অভিযোগ হিলকার্ট রোড, সেবক রোডের অন্তত ৩টি হোটেলে নিয়মিত তিন তাসের জুয়ার আসর বসানো হয়। তার মধ্যে একটি হোটেলের সঙ্গে পানশালাও রয়েছে। সেখানে গানবাজনার লাইসেন্স থাকলেও নাচও হয় বলে অভিযোগ। পানশালা মালিকদের সংগঠন সূত্রেই অভিযোগ করা হয়েছে, জুয়ার আসর বসানোর খবর রয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও। কিন্তু, হিলকার্ট রোডের ওই হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে নাকি আপত্তিকর কিছু পাওয়া যায় না বলে পুলিশের দাবি।
ঘটনাচক্রে, শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অফিসাররাই কিন্তু অতীতে একাধিক জুয়ার আসরে হানা দিয়েছে টাকা উদ্ধার করেছেন। গ্রেফতারও করেছেন সন্দেহভাজনদের। অথচ পুলিশের অন্দরের খবর, গ্রেফতারের পর পরই ধৃতদের তাড়াতাড়ি ছাড়ার ব্যবস্থা করতে আসরে নেমে পড়েন এক পুলিশ অফিসার। শিলিগুড়ি ও ভক্তিনগর থানায় কান পাতলে সে ‘গল্প’ এখনও শোনা যায়। পানশালা মালিকদের সংগঠনের এক সদস্য জানান, দুয়েকটি জায়গায় মদ বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে জুয়ার আসর, দেহ ব্যবসা চালানোর যে অভিযোগ ওঠে, তা খুব মিথ্যে নয়। শহরের যে সব পানশালায় গান শোনানোর ব্যবস্থা এখনও নেই, তাঁদের অনেকেই একান্তে মানছেন, ‘সিঙ্গিং-বার’-এর বিক্রি যেমন তুলনায় বেশি, তেমন সেখানে নানা আপত্তিকর ঘটনাও কম নয়।
পানশালা ও হোটেল মালিকদের একাংশের অভিযোগ, শিলিগুড়ির কয়েকটি জায়গায় মাঝ রাত থেকে যে জুয়ার আসর ও দেহ ব্যবসার রমরমা শুরু হয়। কিছু হোটেল-পানশালায় দেহ ব্যবসায় যুক্তরা সাঙ্কেতিক শব্দে লেনদেনে অভ্যস্ত। কয়েকটি হোটেলের ‘রুম সার্ভিস’, পানশালার রক্ষীদের একাংশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘সফট টয়’ কিংবা ‘খেলনা’ বললেই তাঁরা বুঝে যান খদ্দের ঠিক কী চাইছেন। সঙ্গে সঙ্গেই খবর চলে যায় ‘এজেন্ট’-এর কাছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে রাতের শিলিগুড়িতে হাজির তরুণীদের সামনে হাজির করানোর আগে পরীক্ষা করা হয় খদ্দেরের পরিচয়।
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত এক বছরে রাতের শিলিগুড়িতে অন্তত ১০টি চক্র সক্রিয় হয়ে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই কাজে শহর লাগোয়া এলাকা তো বটেই, ডুয়ার্স থেকেও কাজের টোপ দিয়ে, গান গাওয়ানোর কথা বলে তরুণীদের দেহ ব্যবসায় নামানোর অভিযোগও ইদানীং উঠছে। মাস ছয়েক আগে প্রধাননগর এলাকা থেকে ধৃত একাধিক তরুণীর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, আদতে তাঁদের পানশালায় গান গাওয়ানোর টোপ দিয়ে শিলিগুড়িতে আনা হয়েছিল। ছাড়া পাওয়ার পরে কয়েকজন ডুয়ার্সে ফিরে গিয়েছেন। তাঁরাই জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যেই দরিদ্র পরিবারের নাবালিকাদের গায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে শিলিগুড়িতে আনতে একটি চক্র সক্রিয় উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এমনকী, নেপাল, সিকিমেও জাল বিছিয়েছে তারা।
সেই সঙ্গে সিঙ্গিং-বারে নাবালিকাদের সামনের সারিতে বসিয়ে রাখা হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের অনেকেই। পুলিশের একটি সূত্রের যুক্তি, ‘সিঙ্গিং-বার’ মালিকরা সকলে নিয়মিত ভিডিও ফুটেজ দিচ্ছেন না। তাতেই নাকি সমস্যা হচ্ছে।
যা শোনার পরে হাসছেন শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকার একটি পানশালার কর্মীদের একাংশ। তাঁরা নাম না প্রকাশের শর্তে বলছেন, ‘‘সব ভিডিও ফুটেজ দেওয়া যায় নাকি! অনেক সময় এমন সব লোকজন ঢোকেন যে আগেই থেকে সিসি ক্যামেরা বন্ধের নির্দেশ চলে আসে যে!’’
(চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy