Advertisement
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Child Marriage

বিয়ে নয়, খেলতে চায় নাবালিকা অ্যাথলিট

সতেরো বছর বয়সে রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় একাধিক পদক জিতেছে মেয়ে। চোখে তার দেশের জার্সিতে খেলার স্বপ্ন। কিন্তু সংসারে অনটন। তাই তার বিয়ে দিতে ব্যস্ত অভিভাবকেরা।

— প্রতীকী চিত্র।

পার্থ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:২৩
Share: Save:

সন্দেহ হয়েছিল প্রশিক্ষকের। খেলার ধার কমছে কেন অ্যাথলিট ছাত্রীর? খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বাড়ি থেকে বিয়ের চেষ্টা হচ্ছে নাবালিকার। তাই মেয়ের মন খারাপ। ছাপ পড়েছে খেলাতেও। প্রশিক্ষক একটু প্রশ্ন করতেই তাঁর সাহায্য চায় মেয়েটি।

সতেরো বছর বয়সে রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় একাধিক পদক জিতেছে মেয়ে। চোখে তার দেশের জার্সিতে খেলার স্বপ্ন। কিন্তু সংসারে অনটন। তাই তার বিয়ে দিতে ব্যস্ত অভিভাবকেরা। মেয়েটি কিন্তু এখনই বিয়ে করতে চায় না। বরং নিজের স্বপ্নপূরণে আরও খেলাধুলো করতে চায়। তাই প্রশিক্ষক তাকে প্রশ্ন করতেই সে তাঁকে সব খুলে বলে। তার পরে তাঁর সাহায্যে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে আলিপুরদুয়ারের সেই নাবালিকা অ্যাথলিট। নাবালিকার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলবে জেলা ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ারকমিটি’ (সিডব্লিউসি)।

মেয়েটির বাড়িতে বাবা-মা, দুই ভাই রয়েছে। বাবার রোজগার সামান্য। অনটনের সংসারে খেলাধুলো, পড়াশোনার মাঝে কাগজের ফুলের মালা তৈরিও করে মেয়েটি। অনূর্ধ্ব ১৮ জেলা দলের হয়ে খেলে স্টিপলচেজ়-এ প্রথম হয়। ওই বছরেই জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় রুপো জেতে।

ওই কিশোরীর প্রশিক্ষক পরাগ ভৌমিকের কথায়, “অ্যাথলিটে স্টিপলচেজ় বিভাগ অত্যন্ত কঠিন। সেই বিভাগে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে পদক জয় সহজ নয়। ওর প্রতিভা যথেষ্ট। কিন্তু মাস কয়েক আগে দেখলাম, ওর খেলার ধার কমে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম, বাড়ির লোকেরা ওর বিয়ে দিতে চাইছেন।’’ বাড়িতে গিয়ে মেয়েটির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন পরাগ। তবে দু’দিন আগে মেয়েটি তাঁকে জানায়, বাড়ির লোকেরা বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেছেন।

তখন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরাগ। সেই সংগঠনের সম্পাদক রাতুল বিশ্বাস বলেন, “নাবালিকার বিয়ে দেওয়া যায় না। এ ভাবে একটি প্রতিভাকে নষ্টও হতে দেওয়া যায় না। মেয়েটিকে নিয়ে ডিসিপিও ও সিডব্লিউসি-রকাছে যাই।”

বিয়ে রুখতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা এখনও বাড়িতে জানে না। মেয়েটি বলে, “আমাদের কোনও মতে দিন চলে। তবু, এখনই বিয়ে করতে চাই না। দেশের হয়ে খেলতে চাই। পাশাপাশি, কোনও ভাবে পড়াশোনাও যতটা পারি, চালিয়ে যেতে চাই। কিন্তু বাড়ির লোকেরা বিয়ের কথা প্রায় পাকা করে দেওয়ার মুখে। আমি চাই, সবাই বাবা-মাকে বোঝান। যাতে বাবা-মা এখনই আমার বিয়ে না দেন।”

সিডব্লিউসি-র চেয়ারম্যান অসীম বসু বলেন, ‘‘ওই মেয়েটি আমাদের কাছে এসেছিল। গোটা বিষয়টিকে আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। অতি দ্রুত নাবালিকার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’ মেয়েটি যে স্কুলের ছাত্রী তার প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ও মাধ্যমিকের ফর্ম ফিল-আপ করেছে। তবে নিয়মিত আসে না। তাই এ খবর পাইনি। দ্রুত খোঁজ নিচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Child Marriage Athlete Alipurduar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy