করোনাজয়ী: হাসপাতাল থেকে বের হয়ে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
করোনা পজ়িটিভ হওয়ায় ছিল প্রবল শ্বাসকষ্ট। শরীরে কমে গিয়েছিল অক্সিজেনের পরিমাণ। টানা ১৪ দিন চলে লড়াই। শেষ পর্যন্ত সেই লড়াইয়ে একশো বছরের বৃদ্ধার কাছে হার মানল করোনা। মঙ্গলবার সম্পুর্ণ করোনামুক্ত হয়ে তপসিখাতার কোভিড হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন তিনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার বাড়ি ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁয়। বয়স একশো হওয়ায় অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত বেশ কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এরই মধ্যে কিছু দিন আগে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। সেই সমস্যা নিয়ে গত ১৭ অগস্ট বৃদ্ধাকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর বাড়ির লোকেরা। সেখানে লালারসের পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রেখেই শুরু হয় বৃদ্ধার চিকিৎসা। কিন্তু তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধাকে সুস্থ করে তুলতে তাঁকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল থেকে তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখানে একটি নতুন সমস্যা দেখা দেয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বৃদ্ধাকে সিসিইউ-এ ভর্তি করানো প্রয়োজন হলেও সেই মুহূর্তে কোভিড হাসপাতালে সিসিইউ-র কোনও বেড ফাঁকা ছিল না। কিন্তু তাতে হাল ছাড়েননি চিকিৎসকেরা। তাঁরা সিসিইউ-এ অতিরিক্ত একটি বেড আনিয়ে বৃদ্ধাকে সেখানে ভর্তি করান। এর পর তাঁকে অক্সিজেন দিতে শুরু করেন চিকিৎসকেরা।
এক চিকিৎসকের কথায়, “প্রথমে বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, আদৌ তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারব কি না, তা নিয়ে আমরা ধন্দে ছিলাম। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাই-ফ্লো নেজ়াল ক্যানুলার সাহায্যে টানা অক্সিজেন দেওয়ার পর ধীরে ধীরে বৃদ্ধা চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করেন।
শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধার করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। শ্বাসকষ্টের সমস্যাও মিটে যাওয়ায় মঙ্গলবার বিকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তপসিখাতা কোভিড হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মণ বলেন, “এটি কোভিড হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের মিলিত সাফল্য। বৃদ্ধার দীর্ঘায়ু কামনা করি।”
একশো বছর বয়সে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হওয়ায় খুশি বৃদ্ধার পরিবার। বৃদ্ধার এক আত্মীয় বলেন, “চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের চেষ্টায় উনি সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ওঁদের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ।”
আলিপুরদুয়ারের বিদায়ী ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “একশো বছর বয়সে বৃদ্ধা করোনামুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। জেলার চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy