Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

সূর্যাস্ত হলেই বোমা-গুলির শাসন, গিতালদহে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে শাসক তৃণমূলই!

ভোট দেবেন তো? প্রশ্ন শুনে মাথাটা এমন ভাবে নাড়লেন, যার মানে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ দুটোই হতে পারে। তার পর আস্তে আস্তে আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে চলে গেলেন যুবক।

Gitaldaha

পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ ইস্তক রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত দিনহাটা-১ ব্লকের গিতালদহ। —নিজস্ব চিত্র।

নয়ন চক্রবর্তী
গিতালদহ শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ ১৭:০১
Share: Save:

গিতালদহ যাব শুনেই এক অভিজ্ঞ শুভাকাঙ্ক্ষী সাবধান করে দিলেন, ‘‘যাও, কিন্তু দিনে দিনে ঘুরে এসো। সন্ধে পর্যন্ত থেকো না।’’ তাঁর থেকেই শুনলাম, দিনের বেলা এলাকা থমথমে। সন্ধ্যা হলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে গুলি আর বোমাবাজি। গত কয়েক দিনে এটাই গিতালদহের রোজনামচা। পঞ্চায়েত ভোটের আবহে শুধু কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমাতেই প্রাণ হারিয়েছেন তিন জন। আর দিনহাটায় সবচেয়ে উত্তপ্ত এলাকা হল গিতালদহ। নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে সেই এলাকাই ঘুরে দেখে এল আনন্দবাজার অনলাইন।

দিনহাটা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূর। গিতালদহ পৌঁছলাম সকাল ১০টা নাগাদ। রাস্তায় খুব বেশি লোকজন নেই। গ্রামের আরও একটু ভিতরে ঢুকে, রাস্তার পাশে বাইকটা দাঁড় করালাম। রাস্তার দু’ধারই শাসক, বিরোধী দলের ব্যানার, ফেস্টুন, পতাকায় ছয়লাপ। কে বেশি পতাকা লাগাতে পারে, তার অলিখিত প্রতিযোগিতা যেন! মোবাইলে সেই ছবি তুলছিলাম। একটু পরেই বুঝলাম, আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন জনা কয়েক। একটু দূর থেকে মুখোমুখি তাকালেও কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেন না। যেন দূরত্বটা রেখে দিতে চান। গ্রামে সচরাচর এই দৃশ্য অকল্পনীয়। কে, কোথা থেকে এসেছেন, কার বাড়ি যাবেন, যে কোনও গ্রামে গেলে আগন্তুককে এই সাধারণ কয়েকটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হয়। গন্তব্যের কথা বললে স্থানীয়েরাই হাসিমুখে এগিয়ে দেন। বা পথ দেখিয়ে দেন। বৃহস্পতিবারের গিতালদহ দেখলাম সেই ‘নিয়মের’ বাইরে।

বেশ খানিক ক্ষণ কেটে গেল এই ভাবে। এক যুবক এগিয়ে এলেন আমার দিকে। প্রশ্ন, ‘‘কিসের ছবি করছেন?’’ হাসিমুখে পরিচয় দিলাম। তাতে যেন একটু স্বাভাবিক হল পরিবেশ। আমায় ঘিরে সামনের ছোট্ট জটলাটা কিছুটা হালকা হল। বুঝলাম, অচেনা মুখ দেখেই জড়ো হয়েছিলেন এঁরা। কিন্তু কাছে না এসে একটু দূর থেকে নজর রাখছিলেন। গত কয়েক দিনের হিংসার ঘটনায় মানুষ যে কতটা সন্ত্রস্ত, তা এই কয়েক মিনিটেই টের পেলাম। সামনের যুবকের সঙ্গে আলাপ জমানোর চেষ্টা করলাম।

ভোট দেবেন তো? প্রশ্ন শুনে মাথাটা যুবক এমন ভাবে নাড়লেন, যার মানে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ দুটোই হতে পারে। তার পর আস্তে আস্তে আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ফেললেন। নামটাও আর জানা হল না। ভোটের বাকি দু’দিন। ঘুরতে ঘুরতে বুঝলাম, রাজনীতি নিয়ে মুখ খুলতেই ভয় পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। কয়েক দিনের গন্ডগোল নিয়ে কেউ কিচ্ছুটি বলতে নারাজ। একেবারে ‘স্পিকটি নট’।

এ দিক-ও দিক চক্কর দেওয়ার পর, কথা বলতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর, গিতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৮৭ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী বিজলী খাতুন বিবির বাড়িতে যখন পৌঁছলাম, বেলা তখন প্রায় ১২টা। গত ২৭ জুন বিজলীর ভাই সহিরুল হক গুলিবিদ্ধ হন। অভিযোগ ওঠে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তার তিন দিন পর, ১ জুলাই বিজলীর স্বামী, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমানের হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। মারধরে আহত হন আরও দুই তৃণমূল কর্মী। আঙুল সেই বিজেপির দিকে। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের দাবি, অশান্তির মূলে তৃণমূলের নিজেদের গোষ্ঠীকোন্দল। বিজলীর বাড়ির সামনে দেখলাম বেশ ভিড়। অভ্যাগতদের অধিকাংশ তৃণমূল কর্মী। বুধবার রাতেই আহত মাফুজারকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন দলীয় কর্মীরা। মাফুজার অবশ্য এখনও কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। সুস্থ হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। পরিচয় দিয়ে বাড়ির এক দিকে বসলাম।

বেলা বাড়ছে। দেখলাম, মাফুজারকে দেখতে ভিড়ও বাড়ছে। বিজলী তখন চরম ব্যস্ত। অগত্যা নুর ইসলাম নামে এক তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে কথা বলা শুরু করলাম। ওই যুবকের দাবি, ‘‘এলাকা এখন ঠান্ডা। বেশ ক’টা ঝামেলা হয়েছে। তবে এখন কিছুটা স্বাভাবিক।’’ তবে নুরের সংযোজন, ‘‘হ্যাঁ। এলাকার মানুষ একটু আতঙ্কে রয়েছেন।’’ প্রশ্ন করলাম, ‘‘আতঙ্ক দূর করার চেষ্টা করছেন না আপনারা?’’ জবাব এল, ‘‘প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভরসা জোগাচ্ছি তো। বিরোধীরা যে ভাবে বাইরে থেকে গুন্ডাবাহিনী নিয়ে এসে হামলা চালাচ্ছে, তাতে তো স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষ ভয় পাবেন।’’ নুর জানালেন, সন্ধ্যা হলেই এলাকার মানুষ আর বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না। পুলিশ মাঝেমধ্যে টহল দিচ্ছে গোটা এলাকা।

Gitaldaha

তৃণমূল প্রার্থীদের প্রচারে পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে গিতালদহ। —নিজস্ব চিত্র।

বিজলীর পাশাপাশি ওই এলাকায় পঞ্চায়েত সমিতির ৬/৩৫ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন খলিল মিয়াঁ। বিজলীর বাড়ির সামনেই দেখা হল তাঁর সঙ্গে। তিনিও এসেছেন মাফুজারকে দেখতে। খলিলের কথায়, ‘‘পয়লা জুলাই বিজেপির দুষ্কৃতীরা আমার ছেলেকেও তুলে নিয়ে গিয়েছিল। মাফুজার এবং আমাদের বেশ কয়েক জন কর্মী তাকে উদ্ধার করতে যায়। তার পরেই এই ঘটনা।’’ নুরের মতো ওই তৃণমূল প্রার্থীও জানালেন, গিতালদহের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। খলিল বলে যান, ‘‘আমাদের প্রত্যেক কর্মী ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের ভরসা জোগাচ্ছেন। এলাকা আতঙ্কমুক্ত করতে প্রতিনিয়ত টহল দিচ্ছে পুলিশ।’’ কিন্তু এই পরিবেশে মানুষ ভোট দিতে যাবে তো? গেলেও কত শতাংশ ভোট পড়বে মনে হয়? তৃণমূল প্রার্থীর জবাব, ‘‘আতঙ্ক কাটিয়ে নিশ্চয়ই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাবে মানুষ। আমার বিশ্বাস, সবাই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচন কমিশন, আদালত তো মানুষের নিরাপত্তা, ভরসার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীও দিয়েছেন।’’ কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি তো বিরোধীদের ছিল। এই কথা শুনে বার কয়েক মাথা ঝাঁকিয়ে খলিলের মন্তব্য, ‘‘যত বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে, ভোটারেরা তত নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন।’’ উত্তেজিত ভাবে তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘কিন্তু এলাকায় এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর তো তেমন দেখা মিলল না! আমি আশাবাদী, ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবেই হবে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেই ভাল।’’

খলিলের সঙ্গে এই কথাবার্তার মাঝেই নির্বাচন, বিরোধী রাজনীতি, ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। চোখ পড়ল বিজলীর বাড়ির এক পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলার দিকে। পরনে আটপৌরে শাড়ি। কেঁদে চলেছেন। এগিয়ে গিয়ে জিঞ্জেস করলাম, ‘কাঁদছেন কেন? কী নাম? কিঞ্চিৎ ভাঙা, আড়ষ্ট গলায় কেটে কেটে মহিলা বললেন, ‘‘হামিলা খাতুন বিবি।’’ মহিলা জানালেন, রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকলেও পাকেচক্রে রাজনীতির অংশ হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। ভোট ঘিরে গ্রামে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে দিন কয়েক আগে পুলিশি ধরপাকড় শুরু হয়েছে। হামিলার স্বামী আলতাফ হোসেনকেও ধরে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। হামিলার কথায়, ‘‘মাঝরাতে বাড়িতে ঢুকে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। আমরা কোনও দিন রাজনীতি করিনি। মাছ ধরে সংসার চলে। পুলিশ কোনও বাছবিচার না করে যাকে পেল, তাকেই তুলে নিয়ে গেল।’’

স্বামী পুলিশের হেফাজতে। দিশেহারা হামিলা তাই তৃণমূল প্রার্থীর বাড়িতে এসেছেন। যদি কিছু একটা করেন তাঁরা। ভোট দিতে যাবেন? প্রশ্ন শুনে শূন্যদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন মহিলা।

বিজলীর বাড়ির সামনে ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। পঞ্চায়েত প্রার্থী আর সময় দিতে পারলেন না। তাঁর আত্মীয়েরা এসে বললেন, ‘‘মাফ করবেন। উনি এখন কথা বলার মতো অবস্থাতে নেই। দেখছেন তো কী পরিস্থিতি?’’ অগত্যা সৌজন্য বিনিময় করে উঠে পড়লাম। বাইক ছোটালাম গিতালদহ বাজারের দিকে। রাস্তায় এক যুবকের সঙ্গে দেখা। বাইক থামিয়ে রাস্তাটা জানতে চাইলাম। কোন দিক দিয়ে যাব বলে দেওয়ার পর কৌতূহল যুবকের চোখেমুখে। পরিচয় জানতে চাইলাম। নাম বললেন না। বললেন, ‘‘আমি বিজেপি কর্মী।’’ ভোট কেমন হবে মনে করছেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপি কর্মীর ঝাঁঝিয়ে উঠে বললেন, ‘‘শুনুন দাদা, এখানে যত গন্ডগোলের মূলে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। নিজেরা টিকিট পাওয়া নিয়ে মারামারি করছে। আর দোষ চাপিয়ে আমাদের আক্রমণ করছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আক্রমণ করলে তার জবাবও দিতে হবে।’’

Gitaldaha

তৃণমূল প্রার্থী বিজলী খাতুনের বাড়িতে ভিড় তৃণমূল সমর্থকদের। সবাই এসেছেন বিজলীর আহত স্বামীকে দেখতে। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় অনেক দিনের ব্যবসায়ী কাশী সরকার। তিনি জানালেন, এখন সন্ধ্যা হলেই দোকান বন্ধ করে দেন সবাই। সূর্য ডুবলেই বোমা, গুলির শব্দ ভেসে আসে। যত সময় গড়ায় আওয়াজ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। কাশী বললেন, ‘‘যে ভাবে একের পর এক সংঘর্ষ হচ্ছে, তাতে আতঙ্ক তো হবেই। আমাদের সবারই একই অবস্থা।’’ অন্যান্য সময় রাত ১০টা পর্যন্ত গিতালদহ বাজার খোলা থাকে। এখন সন্ধ্যা ৭টা বাজতে না-বাজতেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বাজার। কাশীদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু প্রাণে বাঁচলে তবেই না ব্যবসা। তবে কাশী জানালেন, ভোট তিনি দেবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা মনস্থির করে নিয়েছি, যাকেই দিই, ভোট দিতে যাবই।’’ সন্ধ্যা হতে তখনও খানিক বাকি। দেখলাম ঝপাঝপ দোকানের শাটার পড়ছে। পান-বিড়ির গুমটিটা পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেল। ভোটের এক দিন আগে এ যেন অন্য গিতালদহ!

দিনহাটা-১ ব্লকে ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত। দিনহাটা-২ ব্লক গঠিত ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে। এদের মধ্যে দিনহাটা শুকারুর কুঠি, নয়ারহাট, চৌধুরী হাট, বামনহাট-২ এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। জেলা পরিষদের ২৮ নম্বর আসনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে শাসক দল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন দিনহাটা তথা কোচবিহারে। পরে সবাই তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে কোচবিহারের ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২৭টি-ই তৃণমূলের দখলে চলে যায়। ঘোকসাডাঙা নামে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে থেকে যায় শুধু। ৩৩টি জেলা পরিষদ আসনই তৃণমূলের ছিল। ২০১৮-র পর, দিনহাটা মহকুমায় পঞ্চায়েত সমিতির আসন তিনটি, গ্রাম পঞ্চায়েত ৩৩টি এবং জেলা পরিষদের আটটি আসনই শাসক দলের দখলে।

এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকে এখনও পর্যন্ত কোচবিহারে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। সবক’টিই দিনহাটা মহকুমায়। গত ২ জুন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি প্রশান্ত রায় বসুনিয়াকে শিমুলতলায় গুলি করা হয়। ১৮ জুন সাহেবগঞ্জ থানার টিয়াদহে কুপিয়ে খুন করা হয় বিজেপি প্রার্থীর স্বামী শম্ভু দাসকে। কোচবিহার সফরে এসে ওই দুই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, দুটি খুনের নেপথ্যেই ব্যক্তিগত রোষ ছিল, রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি তা মানতে নারাজ। রবিবার কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজের সাংবাদিক বৈঠকের পর বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের কটাক্ষ, ‘‘এক একটা খুনের ঘটনায় চার্জশিট জমা করতে এক বছর লেগে যায় পুলিশের। এ বেলায় এত তাড়াতাড়ি তদন্ত শেষ হয়ে গেল?’’ গত ২৭ জুন গিতালদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জারি ধরলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী বাবু হকের। গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন শাসক দলের আরও ছয় কর্মী। বৃহস্পতিবারই বাবু-খুনের ঘটনায় বাংলাদেশ থেকে গ্রেফতার হয়েছেন দুই অভিযুক্ত। বিজিবি তাঁদের বিএসএফের হাতে তুলে দিয়েছে। এ ছাড়াও, গত ২০ জুন গিতালদহের কোনা মুক্তা এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী আজিজুল হক গুলিবিদ্ধ হন। বেশ কয়েকটি বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। তাতে তৃণমূল-বিজেপি, দু’পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছেন।

গিতালদহ থেকে সন্ধ্যা নামার একটু আগে আগেই বেরিয়ে পড়ছি। কোচবিহারে বাড়ি ফিরলাম রাত তখন প্রায় ১০টা। কিছু ক্ষণ পরই খবর এল, দিনহাটা-২ ব্লকের কালমাটিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চার বিজেপি কর্মী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy