Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

করোনা-কালে ডেঙ্গি নিয়ে লুকোচুরি, সমীক্ষায় কারচুপি?

মাসে দু’বার বাড়ি বাড়ি গিয়ে কারও জ্বর রয়েছে কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা, বাড়ির ভিতরে ঢুকে কোথাও জল জমা রয়েছে কি না দেখা, রোগ নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করার কথা সমীক্ষায়।

দুটি সংক্রমণ একসঙ্গে হলে তা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। প্রতীকী ছবি

দুটি সংক্রমণ একসঙ্গে হলে তা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। প্রতীকী ছবি

সৌমিত্র কুণ্ডু 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৪:৪০
Share: Save:

এ বছর জুন মাস থেকে এখনও শিলিগুড়িতে কোথাও ডেঙ্গির সংক্রমণ নেই বলে পুর কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। অথচ বাড়ি বাড়ি ডেঙ্গির সমীক্ষার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাতে রোগ অনুসন্ধানের কাজ এবং সমীক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

মাসে দু’বার বাড়ি বাড়ি গিয়ে কারও জ্বর রয়েছে কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা, বাড়ির ভিতরে ঢুকে কোথাও জল জমা রয়েছে কি না দেখা, রোগ নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করার কথা সমীক্ষায়। বহু ক্ষেত্রেই সে সব কিছুই ঠিক মতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কোন বাড়িতে কোন দিন সমীক্ষক দল গেল, নির্দিষ্ট কাগজে নথিভুক্ত করে ওই পরিবারের কারও সই সংগ্রহ করার কথা। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই একবার সমীক্ষায় গিয়ে একাধিকবার যাওয়ার তথ্য দেওয়া হচ্ছে এবং বাসিন্দাদের অনুরোধ করে, সেই মতো সই সংগ্রহ করছেন সমীক্ষক দলের অনেকে। তাতে যে রিপোর্ট জমা পড়বে, তা কতটা ঠিক সেই প্রশ্ন উঠেছে। সমীক্ষক দলের মহিলাদের একাংশের দাবি, এক দিনে ৬০টি করে বাড়ি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেই কিছু ক্ষেত্রে এমনটা করা হচ্ছে।

পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বাড়িগুলিতে যাঁরা যাবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের সময় বারবার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কী ভাবে কাজ করতে হবে। তার পরেও সঠিক ভাবে তা করার ক্ষেত্রে গফিলতির অভিযোগ ওঠায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জানার পর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও খোঁজখবর শুরু হয়েছে। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘সমীক্ষক দলকে কী করতে হবে, তাদের বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন কতগুলো বাড়িতে যেতে হবে, সরকারি ভাবে তা ঠিক করেও দেওয়া হয়েছে। নিয়ম মেনে তা না করলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানান, পুরসভার তত্ত্বাবধানে সমীক্ষা হচ্ছে। নিয়ম মাফিক কাজ হচ্ছে কি না, দায়িত্বে থাকা আধিকারিক তা দেখবেন। প্রতিবার সমীক্ষার পরই তা দেখে নেওয়ার কথা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘সঠিক ভাবে সমীক্ষা হচ্ছে কি না, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’

পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, মাসের শুরুতে এবং মাঝে দুই দফায় পাঁচ দিন করে সমীক্ষা করা হয়। পাঁচশোর বেশি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। দু’জনের একটি দলকে পাঁচ দিনে ৩০০ বাড়ি যেতে হয়। সেই মতো প্রতিদিন গড়ে ৬০টি বাড়ি যাওয়ার কথা। তা করে ওঠা মুশকিল বলে পুরসভার আধিকারিকদের একাংশও মনে করেন। এমনকি, পুর দফতরের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিদিন ৩০টি করে বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা নিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রতি তিনটি দল পিছু একটি ভেক্টর কনট্রোল টিম থাকে। সমীক্ষক দল কোথাও জল জমে থাকা, মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে কিনা, এ সব নজরে এলে তাদের খবর দেবে। তারা গিয়ে ব্যবস্থা নেবে। সেই কাজও ঠিক মতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

অতীতে অনেক সময় অভিযোগ উঠত, অনেক বাড়িতে না গিয়েই মনগড়া রিপোর্ট দিচ্ছে সমীক্ষক দল। তা রুখতে এ বছর ‘পারিবারিক ডায়েরি’ নামে একটি কার্ড করা হয়েছে। তাতে কোন মাসে কোন দিন সমীক্ষক দল গিয়েছে, তা উল্লেখ করে বাড়ির লোকের সই নিতে হবে। প্রতিবার সমীক্ষার শেষে কী কাজ হল, তা দেখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আরও দাবি, বাড়িতে গিয়ে কারও জ্বর রয়েছে কি না, তা জানতেও চাইছেন না অনেক সদস্যরা।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Corona Coronavirus COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy