মারমুখী: লোহার চেন হাতে প্রাক্তন উপপ্রধান। নিজস্ব চিত্র
দোকান থেকে বিস্কুট চুরির সন্দেহে বছর পনেরোর এক কিশোরকে বেঁধে লোহার চেন দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল উপপ্রধান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। ছেলেকে না মারতে বাবার আর্জিতেও কান দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শীদের।
স্বাধীনতা দিবসে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির লাহুতারা-১ পঞ্চায়েতের দুলেহপুর গ্রামে। খবর পেয়ে বিডিও দফতরের প্রতিনিধি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। গুরুতর জখম কিশোরকে উদ্ধার করে গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার পুলিশ ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত উপপ্রধান পলাতক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার এক জন মারধরের ভিডিয়ো মোবাইলে তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে দ্রুত তা ভাইরাল হয়।
করণদিঘি থানার আইসি সুজয় মজুমদার বলেন, ‘‘চুরি করেছে এই সন্দেহে এ ভাবে এক কিশোরকে মারধর করা হয়েছে। মামলা দায়ের করে এখনও অভিযুক্তদের মধ্যে ২ জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার দুপুরে করণদিঘির সাবধান এলাকার দুলেহপুর বাজারে একটি দোকানের সামনে ঘোরাফেরা করছিল এক কিশোর। দোকানদারের অভিযোগ, ছেলেটি সুযোগ বুঝে তাঁর দোকানে ঢুকে বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাকে ধরে ফেলেন দোকানদার। অভিযোগ, এর পর ওই কিশোরকে খুঁটিতে বেঁধে শুরু হয় বেধড়ক মারধর।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ওই ছেলেটির বাবা। অভিযোগ, বাবার সামনেই চলতে থাকে মার। কিল, চড়, লাথি, ঘুসি বাদ যায়নি কিছুই। লোহার চেন দিয়েও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। চোখের সামনে ছেলেকে এ ভাবে মার খেতে দেখে সেখানে জমা হওয়া ভিড়ের হাতেপায়ে ধরে ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করতে থাকেন। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি।
অভিযোগ, ভাইরাল হওয়ায় ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা লাহুতারা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান ফজলুর রহমান নিজেই মারধর করছেন (যদিও ভিডিয়ো-র সততা যাচাই করেনি আনন্দবাজার পত্রিকা)। ফজলুরের এই কাজে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
মারধরের কথা স্বীকার করেছেন ফজলুর। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই মোবাইল ফোন-সহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করছিল ওই ছেলেটা। এ বার দোকান থেকে চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে। তাই ওই কিশোরের বাবার সম্মতিতেই একটু শিক্ষা দিতে মেরেছি।”
বিডিও বিজয় মোক্তান বলেন, ‘‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। পুলিশকে জানানো হয়েছে।”
উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায়না। অভিযুক্ত যে দলেরই হোক না কেন, এর বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফজলুর আমাদের দলের কিনা তা দেখা হচ্ছে। তার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy