রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
দলে শুদ্ধকরণ চলছে। থামছে না গোষ্ঠীকোন্দলও। আর এই দুই জোড়া ধাক্কায় অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
বিধানসভার উপ-নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে শুক্রবার ফালাকাটায় একটি কর্মিসভা করেন তৃণমূলের বিশেষ পর্যবেক্ষক তথা বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে রাজীব স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলকে সামনে রেখে যাঁরা ‘করে কম্মে’ খাচ্ছেন, তাঁদের আর রেয়াত করা হবে না। যে নেতারা ঠিকাদারি বা অন্য কোনও উপায়ে টাকা উপার্জন করছেন, তাঁদের সরিয়ে সংগঠনে নতুন মুখ আনতে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামীকে নির্দেশ দেন রাজীব। ইতিমধ্যেই চার নেতাকে শো-কজের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ দিকে, রাজীবের সভা করার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফালাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বদল নিয়ে তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের মধ্যে কোন্দল শুরু হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। যদিও এখন সভাপতি বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন রাজীব। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘এখন জনসংযোগে আরও জোর দিতে হবে। মানুষ যাতে ভাল ভাবে গ্রহণ করে সেই জায়গায় দলকে নিয়ে যেতে হবে। এই মুহূর্তে অন্য কিছু আমাদের কাছে বিচার্য নয়।’’
২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে ফালাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে কে বসবেন তা নিয়ে তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। তৃণমূলের নেতারা সুরেশ লালাকে সভাপতি করতে চান। যুব তৃণমূলের তরফে সঞ্জয় দাসকে সভাপতি করার দাবি ওঠে। বিরোধ চরমে উঠলে আড়াই বছর করে সময় ভাগ করে দুই নেতাকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। প্রথম পর্যায়ে সভাপতি হন সুরেশ।
দলীয় সূত্রের খবর, সুরেশের সভাপতি হওয়া এখনও দু’বছর পার হয়নি। তার আগেই সঞ্জয়কে সভাপতি করার তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে যুব তৃণমূলের অন্দরে। শুক্রবার ফালাকাটাতে রাজীবের কাছে এই দাবিতে একটি স্মারকলিপিও দেন যুব তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের অনেকেই। যদিও প্রকাশ্যে তাঁরা কিছু বলতে চাইছেন না। সুরেশের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই কিছু বলব না।’’ তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি রণেশ তালুকদার বলেন, ‘‘এ বিষয়ে জেলা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ আর সঞ্জয় বলছেন, ‘‘সভাপতি পদে সুরেশ লালার আড়াই বছর থাকার কথা। সে জন্যই হয়তো দলের ছাত্র-যুবরা পর্যবেক্ষকের কাছে আমার সপক্ষে স্মারকলিপি দিয়েছেন।’’
অন্য দিকে, রাজীবের কড়া বার্তার পরে তৃণমূলের অন্দরে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে চার নেতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁদের শো-কজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব। যাঁদের মধ্যে একজন ফালাকাটার। বাকিরা কুমারগ্রাম ব্লকের বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রতিটি অঞ্চল ও ব্লক ধরে ধরে তৃণমূলের যে নেতারা দলের নাম ভাঙিয়ে আর্থিক ভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছেন তাঁদেরও চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা। দলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরে কী হচ্ছে তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy