Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অনশনে ফের পাহাড় জুড়ে মেঘ

আজ, শুক্রবার পাহাড় জুড়ে যে বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে, পর্যটকদের তার আওতার বাইরে রাখতে বুধবারই অনুরোধ জানান পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই অনুরোধ মানেনি আন্দোলনকারীরা। মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি করুণা গুরুং জানান, শুক্রবার হোটেল, স্কুল, কলেজ, অফিস-আদালত সব বন্ধ থাকবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৪
Share: Save:

পুজোয় পর্যটন মরসুমের ঠিক শুরুতে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা উস্কে বোনাসের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে পাহাড়ে শুরু হল অনশন। একই সঙ্গে শুক্রবার পাহাড় জুড়ে ১২ ঘণ্টা বন্‌ধের ডাক দিয়েছে এই যৌথ মঞ্চ।

এ দিন দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে মঞ্চ বেঁধে অনশনে বসেন বিনয়পন্থী মোর্চা, জাপ, সিপিএম, তৃণমূল, সিপিআরএম, গোর্খা লিগ ও হিল কংগ্রেস— এই সাত দলের চা শ্রমিক সংগঠনের ১৪ জন শীর্ষ নেতা। বাগানে বাগানেও এ দিন সকাল থেকে শুরু হয়েছে অনশন ও বিক্ষোভ। দার্জিলিঙের অনশন মঞ্চে যেমন হাজির হন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা, তেমনই দ্বন্দ্ব ভুলে সেখানে গিয়েছিলেন জিএনএলএফের সভাপতি মন ঘিসিংও। আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন দু’জনই। চা শ্রমিকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে বিমলপন্থী মোর্চাও।

আজ, শুক্রবার পাহাড় জুড়ে যে বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে, পর্যটকদের তার আওতার বাইরে রাখতে বুধবারই অনুরোধ জানান পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই অনুরোধ মানেনি আন্দোলনকারীরা। মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি করুণা গুরুং জানান, শুক্রবার হোটেল, স্কুল, কলেজ, অফিস-আদালত সব বন্ধ থাকবে। তবে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বন্‌ধ ভোর ৪টে থেকে বিকেল ৪টে অবধি করার কথা ঘোষণা করছেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনের অন্যতম নেতা সমন পাঠক সে কথা জানান। শুক্রবারও অনশন চলবে। অনীত বলেন, ‘‘ন্যায্য আন্দোলন হচ্ছে। মালিকদের উচিত শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া। শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আছে।’’ উল্টো দিকে দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই নিয়ে ১৭ অক্টোবর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা কলকাতায়। তার মধ্যে এমন বিক্ষোভ বেআইনি। কাজে না এলে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ কার্যকর করা হবে।’’

এ দিন পাহাড়ের বেশিরভাগ বাগানেই কোনও কাজ হয়নি। বিভিন্ন এলাকায় চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিলও বের হয়। শুক্রবার শ্রমিকরা গণছুটি নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ফলে আরও এক দিন পাহাড়ের বাগানগুলিতে যাবতীয় কাজ বন্ধ থাকবে। এই আন্দোলনকে সমর্থন জানায় বাগানের স্টাফ, সাব স্টাফদের একাধিক সংগঠনও। এ দিন পাহাড়ের বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনের কর্তারাও অনশন মঞ্চে উপস্থিত হন। ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে এ দিন বাগান মালিকদের অনুরোধ করে চিঠি দেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। জাপ নেতা অমর লামা বলেন, ‘‘মালিকদের অনমনীয় মনোভাবের জন্য পাহাড়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। পর্যটকদের কাছেও ভুল বার্তা যাচ্ছে।’’ অনশনে বসা তৃণমূল নেতা এনবি খাওয়াস বলেন, ‘‘শ্রমিকদের স্বার্থে লাগাতার আন্দোলন চলবে।’’

বন্‌ধ নিয়ে সতর্ক পুলিশ-প্রশাসনও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানান দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি। তিনি বলেন, ‘‘বন্‌ধ না করতে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করা হয়েছে। পর্যটনকে বন্‌ধের আওতার বাইরে রাখতে অনুরোধ করেছি। ব্যবসায়ী সংগঠন, গাড়ি চালক ও মালিক সংগঠনগুলিকেও পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। শুক্রবার বিভিন্ন রুটে এনবিএসটিসির বাড়তি বাস চালানো হবে। পুলিশও তৈরি আছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Derjeeling Tea Labours
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy