Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কোন্দল কমবে কি, আশা

বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূল নেতাদের মুখে বারবার ‘কালিয়াগঞ্জ মডেল’ শোনা গিয়েছে। এই মডেলকে সামনে রেখেই জলপাইগুড়িতে হারানো ভোট ব্যাঙ্ক উদ্ধার করতে চাইছে জেলা তৃণমূল।

জলপাইগুড়িতে তৃণমূলকর্মীদের উচ্ছ্বাস। নিজস্ব চিত্র

জলপাইগুড়িতে তৃণমূলকর্মীদের উচ্ছ্বাস। নিজস্ব চিত্র

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৭
Share: Save:

পার্টি অফিসের টিভিতে সদ্য ভেসে উঠেছে কালিয়াগঞ্জের ভোটে দলের জেতার খবর, জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী ফোনে ধরলেন মোহন বসুকে। জলপাইগুড়ির পুরপ্রধান তথা দলের শহর কমিটির আহ্বায়ক মোহনবাবুকে কৃষ্ণকুমার জানালেন, শহর ব্লক কালিয়াগঞ্জে জয় উপলক্ষে মিছিলের আয়োজন করুক, জেলাও শামিল হবে।
সঙ্গে সঙ্গে যে বার্তাটি ছড়িয়ে পড়ল তা হল, কালিয়াগঞ্জের জয় তৃণমূলের দ্বন্দ্বও ঘোচাতে পারছে। সম্প্রতি দলে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছিল তাতে কৃষ্ণকুমার এবং মোহনবাবু পুরোপুরি বিপরীত শিবিরে বলে দল সূত্রেই খবর। দুই নেতার একান্তে কথাও হয়নি বলে দাবি। নেতাদের একাংশের দাবি, কালিয়াগঞ্জে তৃণমূলের জয় জলপাইগুড়িতেও দলে এমন উদ্দীপনা এনেছে, যা তৈরি করেছে ঐক্যের ছবিও। বছর ঘুরতেই জলপাইগুড়ি শহরে পুরভোটও হওয়ার কথা। তাই উল্লসিত তৃণমূল কর্মীরা। কালিয়াগঞ্জের জয় দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়ে সব বুথে কর্মিসভা করা হবে। প্রতি ব্লকে বিজয় মিছিল হবে।
বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূল নেতাদের মুখে বারবার ‘কালিয়াগঞ্জ মডেল’ শোনা গিয়েছে। এই মডেলকে সামনে রেখেই জলপাইগুড়িতে হারানো ভোট ব্যাঙ্ক উদ্ধার করতে চাইছে জেলা তৃণমূল। এ দিনই জলপাইগুড়ির গুরজংঝোরা ভবনে জেলা পার্টি অফিস থেকে নির্দেশ গিয়েছে, সব বুথে কর্মিসভা করতে হবে। প্রতিটি ব্লকে বিজয় মিছিল করতে হবে। এতে করে কর্মীদের চাঙ্গা করা যাবে বলে দাবি।
কিন্তু কালিয়াগঞ্জ-মডেল কী?
জেলা তৃণমূলের দাবি এনআরসি নিয়ে প্রচার করে কালিয়াগঞ্জে ভাল সাফল্য এসেছে। জলপাইগুড়ি জেলাও কালিয়াগঞ্জের মতো রাজবংশী অধ্যুষিত। সাতটির মধ্যে চারটি বিধানসভা আসনই তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। তাই কালিয়াগঞ্জের সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার বেশ কিছু বিধানসভা এলাকার মিল রয়েছে। কাজেই কালিয়াগঞ্জের মতো করেই জলপাইগুড়িতে প্রচারের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার বললেন, “কালিয়াগঞ্জে যা হয়েছে, তা জলপাইগুড়িতেও হতে চলেছে।”
তৃণমূলের কর্মী-নেতারাও সে কথা মনে করছেন। তাঁদের বক্তব্য, এনআরসি নিয়ে ভয়কে কাজে লাগাতে হবে। কয়েক মাস আগের লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে প্রায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ভোটে জিতেছিল বিজেপি। লোকসভার নিরিখে জেলার ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৬টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। জলপাইগুড়ি পুরসভার সব ক’টি ওয়ার্ডেও এগিয়েছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের পরে জেলা তৃণমূলে সাংগঠনিক রদবদল এবং তার থেকে শুরু হওয়া তুমুল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেও দ্বন্দ্ব মেটেনি, উল্টে প্রকাশ্যে চলে আসে। সব মিলিয়ে তৃণমূলের অন্দরের ছবিটা যথেষ্ট ‘হতাশাজনক’ই ছিল বলে কর্মীদের দাবি। কালিয়াগঞ্জ জয় সেই ছবি বদলে দিয়েছে বলে দাবি করছেন দলের একাংশের। এক নেতার কথায়, “এই যে দুই গোষ্ঠীর নেতা ফোনে কথা বলে মিছিলের আয়োজন করছেন, ব্লকে ব্লকে কর্মসূচি, বুথে বুথে কর্মিসভা করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এই সাংগঠনিক সংক্রিয়তাই দলে বহুদিন ছিল না।”
তৃণমূলের নির্দেশ কালিয়াগঞ্জে বিজেপিকে হারিয়ে তৃণমূল জিতেছে সে কথা চা শ্রমিকদের জানাতে হবে। প্রতিটি চা বাগানে আলাদা করে মিছিল করার ভাবনাচিন্তাও চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC WIN ELECTION CONFLICT
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy