Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

যোগাযোগে ভরসা মালদহ স্টেশনই

ট্রেন বাতিল হতেই অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে রামপুরহাটের থানা পাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ ইয়সুফ আলিকে।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৮
Share: Save:

চোখের চিকিৎসা করাতে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন নেপাল। ট্রেন বাতিল হতেই অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে রামপুরহাটের থানা পাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ ইয়সুফ আলিকে। মঙ্গলবার দুপুরে মালদহ থেকে রামপুরহাট যাওয়ার ট্রেন পাওয়ায় চোখে-মুখে স্বস্তির ছাপ ইয়সুফের।

নেপাল থেকে মালদহে পৌঁছলেন কী ভাবে? ইয়সুফ বলেন, “যোগবাণী এক্সপ্রেসে নেপাল থেকে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তবে ট্রেন বাতিল হওয়ায় দু’দিন যে অভিজ্ঞতা হল তা কখনও ভুলতে পারব না। নেপাল থেকে ট্রেনে গত সোমবার দুপুরে পৌঁছলাম কাটিহার। স্ত্রী ফরেদাকে নিয়ে স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়। তার পরে সকাল হতেই বাসে করে পৌঁছই রায়গঞ্জ। সেখান থেকে আবার বাসে মালদহ। তার পরে খোঁজ করে এ দিন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছই।” বাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেন পেয়ে স্বস্তিতে ফরেদা বিবিও। বললেন, “ট্রেন থেকে বাস-এমনই করে দু’দিন কাটল। আর ঠান্ডার মধ্যে স্টেশনে রাত কাটাতে হয়েছে।” এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদ হোক, তবে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রেখে— জানালেন ইয়সুফ এবং ফরেদা।

তাঁদের মতোই চিকিৎসা করাতে এসে মালদহে পরিবার নিয়ে আটকে পড়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের বাসিন্দা আমেরুল হোসেন। গত, সোমবার চার মাসের সন্তানের চিকিৎসার জন্য মালদহে এসেছিলেন তিনি। তবে ধুলিয়ান যাওয়ার বাস না পাওয়ায় রাতে মালদহেই থেকে যেতে হয়। এ দিন ট্রেনে ধুলিয়ানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তিনি। তিনি বলেন, “মালদহ থেকে ধুলিয়ান যেতে সমস্যা হবে, ভাবতে পারেনি। ছেলেকে চিকিৎসক দেখানোর পরে মালদহেই হোটেল ভাড়া নিয়ে থেকে যেতে হয়।”

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্টেশনে ভাঙচুর হওয়ার ফলে সেগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল এখনই করা যাচ্ছে না। তবে ফরাক্কা-রামপুরহাট ভায়া পাকুর হয়ে যে ট্রেনগুলি চলে, সেগুলি চালানো হচ্ছে। এ জন্য শিয়ালদহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস মালদহ থেকে ছাড়া হচ্ছে। এ ছাড়া, তেভাগা এক্সপ্রেস বালুরঘাটের পরিবর্তে মালদহ থেকে চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে মালদহের গৌড় এক্সপ্রেস, ফরাক্কা এক্সপ্রেস, পটনা এক্সপ্রেস, মালদহ-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলাচল করছে। ফলে দক্ষিণের সঙ্গে উত্তরের যোগাযোগের ট্রেন যোগাযোগের ভরসা হয়ে উঠেছে মালদহ স্টেশন। বালুরঘাটের বাসিন্দা সুবীর সরকার বলেন, “গৌড় লিঙ্ক বালুরঘাট থেকে ছাড়ছে না। মালদহ স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরতে হচ্ছে।”

তবে ভালুকা স্টেশনে ভাঙচুরের ফলে উত্তরের সঙ্গে ট্রেনে যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। রেল কর্মীদের একাংশ বলেন, “উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ সড়কপথে মালদহে আসছেন। সেখান থেকে ট্রেন ধরে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন।” মালদহ স্টেশনের ম্যানেজার দিলীপ চহ্বান বলেন, “এ দিনও বহু ট্রেন বাতিল রয়েছে। তবে বেশ কিছু ট্রেন চলাচল করছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE