Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Illegal Syrup

ফের সক্রিয় অল্প দামের ‘মাদক’ কাশির সিরাপের চক্র

কম পয়সায় নেশার জন্য নিয়ম ভেঙে কাশির সিরাপ ব্যবহার করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা উত্তরবঙ্গ থেকে এই সব নিষিদ্ধ মালপত্র জড়ো করা হচ্ছে শিলিগুড়িতে।

(উপরে) মাদক হিসাবে ব্যবহৃত কাশির সিরাপ। (নীচে) শিলিগুড়িতে পুলিশের মাদক-বিরোধী অভিযান।

(উপরে) মাদক হিসাবে ব্যবহৃত কাশির সিরাপ। (নীচে) শিলিগুড়িতে পুলিশের মাদক-বিরোধী অভিযান। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১৮
Share: Save:

নতুন করে শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে নেশা করার নিষিদ্ধ কাশির ওষুধ বিক্রির চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। গত এক সপ্তাহে শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে একাধিক অভিযুক্তকে কাশির সিরাপ পাচারের সময় ধরা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, মালদহ, গঙ্গারামপুরের দিক থেকে কাশির সিরাপ শিলিগুড়ি আসছে। আবার শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি থেকেও নানা ভাবে লুকিয়ে সিরাপ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাসে-গাড়িতে এবং ট্রেনে সে সব পাচার করা হচ্ছে। কার্টনে করে মালপত্রের ভিতরে লুকিয়েও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ‘মাদক’ হিসাবে প্রচলিত োই সিরাপ। দু’গুণ থেকে তিন গুণ দামে চোরাবাজারে সিরাপ বিক্রি হচ্ছে।

তদন্তকারীরা অফিসারদের বক্তব্য, এখনই ধরপাকড় বাড়ালে, শীতের মরসুমের আগে, এই ‘নিষিদ্ধ ব্যবসা’ অনেকটা থামানো যাবে। সম্প্রতি প্রধাননগর থানা এলাকায় ছ’জনকে ধরা হয়। শিলিগুড়ির খালপাড়া ফাঁড়়িও দু’জনকে ধরে। অভিযুক্তদের থেকে শতাধিক নথিহীন কাশির সিরাপ উদ্ধার করা হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম ছাড়াও, উত্তরের বিভিন্ন জেলায় তা সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল বলে অভিযোগ। এ সপ্তাহেই দার্জিলিঙের ঘুম, জোডবাংলো থানা এলাকা থেকেও তিন জনকে ধরা হয়েছে। তাদের থেকেও প্রচুর সিরাপ উদ্ধার হয়েছে।

শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘মাদকের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে শিলিগুড়ির থানাগুলি। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে কাশির সিরাপ উদ্ধার করা হয়েছে। কিছু জায়গায় ব্রাউন সুগার, গাঁজাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’

কম পয়সায় নেশার জন্য নিয়ম ভেঙে কাশির সিরাপ ব্যবহার করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা উত্তরবঙ্গ থেকে এই সব নিষিদ্ধ মালপত্র জড়ো করা হচ্ছে শিলিগুড়িতে। সিকিম-সহ পাহাড়ে নেশার জন্য কাশির সিরাপের ব্যবসা করা হয় বলে অভিযোগ। বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, শপিং মল থেকে বিভিন্ন বাজারের শৌচালয় বা ফাঁকা জায়গায় কাশির সিরাপের ফাঁকা বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সূত্রের খবর, ৩০ থেকে ৫০ টাকা মূল্যের এই কাশির সিরাপের বোতল ৭০ থেকে ১০০ টাকা দামেও দেদার বিক্রি হয়। মাদকের মতোই পকেটে লুকিয়ে রেখে বিভিন্ন জায়গায় তা বিক্রি করা হয়।

পুলিশ অভিযানে নেমে জানতে পেরেছে, অন্য মাদকের কারবারে নাম জড়ানো অনেক অভিযুক্তও কাশির সিরাপের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কারখানা, ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর বা রিটেল দোকানের নাম-নথি দেখিয়ে, সিরাপ মজুত করা হয়। চোরাপথে ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে জড়়িতেরাও এই কারবারে যুক্ত রয়েছে। শিলিগুড়িতেই কিছু দিন আগে প্রধাননগরের দিকে এক ডিলারের কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

শুধু উত্তরবঙ্গেই নয়, কাশির সিরাপের চক্র সক্রিয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও। এ দিক থেকে ত্রিপুরা হয়ে বাংলাদেশেও কাশির সিরাপ পাচার হয়ে থাকে বলে সূত্রের দাবি। নেপালেও চোরাপথে কাশির সিরাপ ঢোকে বলে অভিযোগ। দার্জিলিং পাহাড়ে গত দু’সপ্তাহে দিনে চার লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, ‘‘পাহাড় জুড়ে অভি‌যান চলছে। সবাইকে সচেতন থাকতে বলছি। কোথাও কোনও সন্দেহ হলে, পুলিশকে জানাতে বলা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

siligurii
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy