হরপা বান। —ফাইল চিত্র।
উত্তরাখণ্ডকে মডেল করে সিকিমে গত অক্টোবর তিস্তায় হড়পা বানের পর থেকে নিখোঁজ ৭৭ জনকে মৃত হিসাবে ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হল। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর গোটা প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিকিম সরকার। গত শনিবার সিকিমের মুখ্যসচিব ভিবি পাঠক সরকারি ভাবে এই নির্দেশ দিয়েছেন। কী ভাবে নিখোঁজদের আত্মীয়েরা সরকারি তরফে বিনামূল্যে মৃত্যুর শংসাপত্র পাবেন তাও জানানো হয়েছে। নিখোঁজ কারও পরিবার এক মাসের এই প্রক্রিয়ার পরে শংসাপত্র নিয়ে ব্যাঙ্ক, বিমা বা অন্য কোনও সরকারি কাজ করতে পারবেন।
সিকিমের মুখ্যসচিব বলেছেন, ‘‘দু’মাস হয়ে গিয়েছে। ৭৭ জনের এখনও খোঁজ নেই। কিন্তু অনেকের পরিবারের নানা কাজে সমস্যা হচ্ছে। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরিবারগুলি মৃত্যুর শংসাপত্র নিতে পারবে।’’
সিকিম সরকার সূত্রের খবর, গত ৪ অক্টোবর উত্তর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক লেকে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরেই তিস্তা নদীর হড়পা বানে ভেসে যান প্রায় একশো জন। এর মধ্যে ২৩ জন সেনা জওয়ান। এক সেনা জওয়ানকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মারা যান ১০ জন। আহত হন বহু মানুষ। সব মিলিয়ে তিন হাজার পর্যটক সিকিমে আটকে পড়েন। সিকিমের তিস্তা সংলগ্ন বিভিন্ন প্রান্ত ও পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা মিলিয়ে উদ্ধার করা হয় ৯টি দেহ। সিংতাম লাগোয়া বারদাং সেনা ছাউনির নীচের অংশ পুরো তিস্তা গর্ভে চলে যায়। সেখানে একাধিক ট্রাক-সহ ৪১টি সেনার গাড়িও নদীতে তলিয়েছে। সিংতাম, মঙ্গন, টুং, জেমার মতো এলাকা মিলিয়ে ১৪টি সেতু উড়়ে গিয়েছিল। গোটা উত্তর ও পূর্ব সিকিম জুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
এ দিকে, দু’মাস পরেও নিখোঁজ ৭৭ জনের খোঁজ মেলেনি। তিস্তায় তলিয়ে এঁরা নিখোঁজ বলে মনে করা হচ্ছে। এ বার সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, পরিবারের তরফে পুলিশ একটি নিখোঁজ ডায়েরি করার পর পুলিশ এবং মহকুমা স্তরে প্রশাসন রিপোর্ট দেবে। আবেদন করা হবে শংসাপত্রের। শেষে তা যাবে জেলাশাসকদের কাছে। সংবাদপত্রে নোটিস জারি করে একমাস সময় রাখা হবে। কেউ আপত্তি না জানালে নিখোঁজ ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করে শংসাপত্র জারি করে দেওয়া হবে।
সেনাবাহিনী, এনডিআরএফ, সিকিমের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের তরফে উদ্ধার কাজ শুরু করে। সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নং জাতীয় সড়ক বিভিন্ন এলাকায় ধসে যায়। ১৭ দিন পর সপ্তমীর সকালে জাতীয সড়ক খোলা হয়। তাতে ছোট যানবাহন চলছে। সিংলা, জোরথাং এবং লাভা-গরুবাথান হয়ে রাস্তা ছাড়া সিকিম পুরোপুটি বিচ্ছিন্ন ছিল। সিংতাম, মেল্লি, রংপো, ডংজু, মামরিং এবং ডিকচুর মতো এলাকায় ত্রাণ শিবির চলে। মুখ্যমন্ত্রী প্রেমসিংহ তামাংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথা বলেন। ধীরে ধীরে সিকিমকে স্বাভাবিক করার কাজ শুরু হয়। উত্তর সিকিম খোলা হয়েছে। সেনা একাধিক বেলি সেতু তৈরি করেছে। পর্যটকদেরও ছাড় মিলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy