ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে এমনই নাচের দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র
পরনে হাফ সাদা জামা, নীল ফুলপ্যান্ট। মোবাইলে বাজছে ভূপেন হাজারিকার গান ‘বিস্তীর্ণ দু’পারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার..’ গানের সুর। ওই গানের সুরে তাল মিলিয়ে স্কুলের শিক্ষক দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ৫৭ বছর বয়সী প্রধান শিক্ষকের নাচের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। কোচবিহারের বক্সিরহাট এলাকার ঝাউকুঠি সিএস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই প্রধান শিক্ষকের নাম নির্মল সিংহ। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্কুলের ‘পেজে’ ৫ সেপ্টেম্বর প্রায় ৫০ সেকেন্ডের নাচের ক্লিপিংসের ভিডিয়োটি আপলোড করেছিলেন তাঁর এক সহকর্মী। ওই ভিডিয়োটিই ভাইরাল হয়ে পড়েছে। নেটিজেনরা অনেকেই প্রশংসায় ভরিয়েছেন কমেন্ট বক্স। ভিডিয়োটি প্রচুর শেয়ারও হয়েছে। অসংখ্য মানুষ প্রধান শিক্ষকের নাচের ভিডিয়োটি দেখেছেন। সব মিলিয়ে প্রত্যন্ত এলাকার নির্মল হয়ে উঠেছেন‘ফেসবুক সেলেব্রেটি’। প্রশাসন ও শিক্ষাকর্তারাও তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়োটি দেখেছি। বাচ্চাদের আনন্দের সঙ্গে শেখানোর চেষ্টা সত্যি দারুণ ব্যাপার।” কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন কল্যাণী পোদ্দার বলেন, “পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে বয়স উপেক্ষা করে যে ভাবে নিজে নাচ করে দেখানোর কথা ভেবেছেন, তা প্রশংসনীয়। এতে অন্য শিক্ষকরাও তাদের নিজেদের সাংস্কৃতিক দক্ষতা ছোটদের শেখাতে উৎসাহিত হবেন বলে আশা করি।”
নির্মল অবশ্য জানাচ্ছেন, ভেবেচিন্তে স্কুলের শিক্ষক দিবসে নাচ করেননি তিনি। তাঁর কথায়, “শিক্ষক দিবসে বাচ্চারাই অনুষ্ঠানের সবটা ঠিক করে। কয়েক জন নাচছিল। তাতে শারীরিক ভঙ্গিমা ফুটিয়ে তোলার খামতি দেখে সেটা কাটাতে বলছিলাম। যেহেতু স্কুলে নাচ, আবৃত্তি, অঙ্কনের মতো নানা বিষয় শেখানো হয়, তাই উপস্থিত অভিভাবকরা কয়েক জন খামতিগুলো দেখাতে বলেছিলেন। তখন শেখানোর জন্য প্যান্ট, শার্ট পরেই নাচ শুরু করেছিলাম।” যিনি ভিডিয়োটি আপলোড করেছিলেন, স্কুলের সেই শিক্ষক অঙ্কন চক্রবর্তী বলেন, “নানা অনুষ্ঠান স্কুলের পেজে দেওয়া হয়। সে রকম ভাবেই নাচের ক্লিপিংস আপলোড করেছিলাম। সেটা এ ভাবে ভাইরাল হয়ে পড়ায় ভাল লাগছে।’’
বক্সিরহাটের লাঙলগ্রামের বাসিন্দা নির্মল ১৯৯৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৬ সালে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েছেন। তবে তার অনেক আগে থেকেই তিনি ‘সব পেয়েছির আসরের’ সঙ্গে যুক্ত। সেই সুবাদেই কলকাতার একটি সংস্থায় নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশনও করেন। স্কুলে পড়ুয়াদের নাচ শেখালেও অনুষ্ঠানে অবশ্য সে দিনই প্রথম নাচ করেন। যা দেখে অভিভূত অভিভাবক থেকে খুদে পড়ুয়ারাও। এক অভিভাবক জয়শ্রী বর্মণ বলেন, “মাস্টারমশাইকে আমরাই অনুরোধ করেছিলাম। এত ভাল করে নাচ করেছেন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি।” আরেক অভিভাবক রবীন্দ্র বর্মণ বলেন, “আমি অনুষ্ঠানে ছিলাম। খুব ভাল লেগেছে।” পড়ুয়ারারাও তাতে বেজায় খুশি। তাঁদের চোখেমুখেও দেখা গিয়েছে খুশির ছাপ। এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক শেখর পাল বলেন,“শিক্ষক হিসেবে বাড়তি গর্ব হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy