Advertisement
E-Paper

নেই গ্যাস সিলিন্ডার, কাঠের চুলায় রান্না মিড-ডে মিল  

জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া জগন্নাথ কলোনির শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে। অথচ, স্কুলের গুদামঘরে ধুলো জমছে গ্যাসে রান্না করার আভেনে।

কাঠের উনুনে হচ্ছে মিড-ডে মিল। জলপাইগুড়ির স্কুলে। ছবি: সন্দীপ পাল 

কাঠের উনুনে হচ্ছে মিড-ডে মিল। জলপাইগুড়ির স্কুলে। ছবি: সন্দীপ পাল  sandipabp4@gmail.com

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ১০:১০
Share
Save

ক্লাসঘরের পাশেই রান্নাঘর। মাঝখানে দেওয়াল। খোলা জানালা দিয়ে দলা পাকানো ধোঁয়া ঢুকে এল ক্লাসঘরে। শিক্ষিকা বুঝলেন, ১২টা বেজেছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ‘খড়ি’ (কাঠকুটো) দিয়ে উনুন জ্বালিয়েছেন। জানালা বন্ধ করে দেওয়া হল। তবু ফাঁক গলে ধোঁয়া ঢুকছে ক্লাসঘরে। কাশছে পড়ুয়ারা। প্রতিদিনের ছবি। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া জগন্নাথ কলোনির শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে। অথচ, স্কুলের গুদামঘরে ধুলো জমছে গ্যাসে রান্না করার আভেনে।

গ্যাসের আভেনে রান্না হয় না কেন? শিক্ষিকার উত্তর, ‘‘গ্যাসে রান্না করার জন্য আভেন, পাইপ— সবই দিয়েছে, শুধু গ্যাস সিলিন্ডার দেয়নি। তাই কাঠকুটো দিয়ে রান্না হয়।’’

জলপাইগুড়ি জেলার শতাধিক স্কুলের ছবি এমনই। গুদামে গ্যাস চুলা, কিন্তু রান্নাঘরে কাঠের উনুন। অধিকাংশ স্কুলেই গ্যাসে রান্নার চুলা আছে, গ্যাস সরবরাহের পাইপ আছে, রেগুলেটার আছে আছে অগ্নিনির্বাপক ফোম-ভরা যন্ত্রও। শুধু গ্যাস-ভরা সিলিন্ডার নেই বলে আভেনে আগুন জ্বলে না। গুদামঘরে তালাবন্ধ থাকে চুলা, রেগুলেটর, পাইপ, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। রান্নাঘরে জ্বলে খড়ির উনুন। এ ধারা জলপাইগুড়িতে চলছে অন্তত বছর তিনেক ধরে। মিড-ডে মিল রান্না করার জন্য স্কুলে স্কুলে রান্নার গ্যাস দেওয়া শুরু হয়েছিল করোনা-আবহের আগে। কিছু স্কুলে দেওয়ার পরে, বরাদ্দ শেষ হয়ে যায় বলে সূত্রের দাবি। বাকি স্কুলে আর গ্যাসের সংযোগ দেওয়া যায়নি। সেই সব স্কুলে শুধুমাত্র গ্যাসের আভেন আর অন্যান্য সামগ্রীই রয়েছে।

জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া জগন্নাথ কলোনির শিক্ষিকা বীণাপানি নাগবসু বলেন, ‘‘বহু দিন আগে গ্যাসে রান্নার সরঞ্জাম পেয়েছিলাম। তবে সিলিন্ডার পাইনি। শুধু আমাদের নয়, এ তল্লাটের কোনও স্কুলই পায়নি।’’ দক্ষিণ পাণ্ডাপাড়া এসএসকে-তে স্কুলে রান্নাই বন্ধ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে আসেন স্কুলে। সরকারি নিয়মে যদিও তা করার নিয়ম নেই। স্কুলের নিজস্ব রান্নাঘরও রয়েছে। এই স্কুল তথা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের তালাবন্ধ গুদামে গ্যাসের আভেন থেকে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রও পড়ে রয়েছে, শুধু সিলিন্ডার নেই। সম্প্রতি আনাজপাতির দাম বাড়ায় রান্নার দায়িত্বে থাকা মহিলারা সমস্যায়। বাড়িতে রান্না করলে অতিরিক্ত জ্বালানির খরচটুকু বাঁচে। স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা অনুশ্রী পাল বলেন, ‘‘গ্যাসের আভেন থেকে আগুন নেভানোর যন্ত্র আছে। শুধু সিলিন্ডার নেই। আগুন নেভানোর যন্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিলিন্ডার এখনও দেওয়া হল না।’’ জলপাইগুড়ি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় জানান, মিড-ডে মিলের বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখে, তাই প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) অশ্বিনী রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mid Day Meal Jalpaiguri

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}