পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে শ্রদ্ধা। কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের দুই মন্ত্রীর সামনেই ক্ষোভ উগরে দিলেন পঞ্চানন বর্মার এক আত্মীয়। তিনি বললেন, ‘‘আগে বাড়িতে মন্ত্রীরা এলে খুশি হতাম। এখন আর হই না। কারণ আমাদের জন্য কেউ কিছুই করেন না।’’ রায়সাহেব পঞ্চানন বর্মার জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে মঙ্গলবার কোচবিহারের খলিসামারিতে তাঁর জন্মভিটেয় গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, বিরবাহা হাঁসদা। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের তরফে সেখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পঞ্চাননের মূর্তিতে মাল্যদান করেন দুই মন্ত্রী। পঞ্চানন বর্মা সংগ্রহশালাও ঘুরে দেখেন। সেখানেই পঞ্চাননের এক আত্মীয় সমীর বর্মণ তাঁদের সামনেই বলেন, ‘‘খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন চলে আমাদের। সামান্য জমিতে কৃষিকাজ করি। কর্মসংস্থানের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। উত্তর পাইনি। সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতারাই পঞ্চানন বর্মাকে নিয়ে রাজনীতি করছেন।’’ দুই মন্ত্রীই তখন তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের সরকার আপনার পরিবারের পাশে রয়েছে, থাকবেও।’’
অন্য দিকে, এ দিন পঞ্চানন বর্মার জন্মদিবস নিয়ে ‘টানাপড়েন’ চলল শাসক, বিরোধী দুই শিবিরেই।
দিনহাটায় পঞ্চাননের জন্মদিবস পালন নিয়ে তিন পক্ষে টানাটানি চলে। বিজেপির দিনহাটা শহর ব্লক সভাপতি অজয় রায় জানান, এ দিন পঞ্চানন ছাত্রাবাসের সামনে রায়সাহেবের মূর্তির সামনে দলের এসি মোর্চার পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে দেখা যায়, তৃণমূলের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই নেতা শুভ্রালোক দাস বলেন, ‘‘প্রতি বছর পঞ্চানন ছাত্রাবাসের সামনে মনীষী পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করি। এ বছর সেখানে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। তাই দলীয় কার্যালয়ের সামনে রায়সাহেবকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।’’ তৃণমূলের দিনহাটা শহর ব্লক সভাপতি বিশু ধর বলেন, ‘‘বিজেপি বা অন্য দল যদি মনে করত, আমাদের অনুষ্ঠানের আগে বা পরেও মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানাতে পারত।’’ রাজ্যের শাসক দলকে নিশানা করে বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘পঞ্চানন বর্মার জন্মদিবসে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ, বিধানসভায় তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয় না।’’
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘সামাজিক ন্যায় মঞ্চ সংগঠনের মাধ্যমে আমরা জেলার সর্বত্র পঞ্চাননের জন্মদিন পালন করেছি। তৃণমূল ও বিজেপি তাঁকে নিয়ে রাজনীতি করে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ঠাকুর পঞ্চানন বর্মাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর কাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই শুধু করে যাচ্ছে।’’
আলিপুরদুয়ারেও ছিল একই ছবি। আলিপুরদুয়ার জেলা সদরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল, বিজেপি এবং বামেরা পঞ্চানন বর্মার জন্মদিবস পালন করে। আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, ‘‘আমরা অনেক দিন ধরেই দিনটি পালন করি। তাতে রাজনীতির কিছু নেই।’’ আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামীর দাবি, ‘‘বিজেপি শুধু ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন নয়, ধর্মের নামে, জাতির নামে শুধু রাজনীতিই করে চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy