Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
itahar

গরিবদের জন্য তিনি ‘বনস্পতি’

১৯৯৪ সালের অগস্ট মাসে ইটাহারের চালুনিয়া প্রাথমিক স্কুলে সহকারী শিক্ষকের পদে চাকরিতে যোগ দেন। গত প্রায় দেড় দশক ধরে তিনি ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের পদে কর্মরত রয়েছেন।

দুঃস্থের পাশে। নিজস্ব চিত্র

দুঃস্থের পাশে। নিজস্ব চিত্র

গৌর আচার্য 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৫৩
Share: Save:

করোনা আবহ ও লকডাউনের জেরে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। অনেকের রোজগারও কমে গিয়েছিল। প্রায় দু’বছর স্কুল ছুটি থাকলেও ঘরে বসে থাকেননি তিনি। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার-সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে ঘুরে তিনি এক টানা দুঃস্থ বাসিন্দাদের মধ্যে বিভিন্ন খাবার, আনাজ, পোশাক-সহ নানা জিনিস বিলি করেছেন। রায়গঞ্জ শহরের রমেন্দ্রপল্লি এলাকার বাসিন্দা পেশায় সরকারি প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক পঞ্চাশোর্ধ্ব পার্থসারথি মিত্রর সমাজসেবাকে শিক্ষক মহলে ‘দৃষ্টান্ত’ বলে মনে করছেন জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দীপককুমার ভক্ত বলেন, “করোনা-আবহে পার্থসারথি রায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আমাকে দিয়েও বহু দুঃস্থ মানুষের হাতে খাবার ও পোশাক তুলে দিয়েছেন।”

পার্থসারথি ১৯৯৪ সালের অগস্ট মাসে ইটাহারের চালুনিয়া প্রাথমিক স্কুলে সহকারী শিক্ষকের পদে চাকরিতে যোগ দেন। গত প্রায় দেড় দশক ধরে তিনি ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের পদে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ইটাহারের বনকুর এলাকায়। ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পার্থসারথি ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সদস্যও ছিলেন। তার মধ্যে ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলান। তাঁর দাবি, করোনা-আবহে তাঁর সমাজসেবার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তিনি বলেন, “করোনা-আবহ ও লকডাউনের জেরে বহু মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়া ও রোজগার কমে যাওয়া আমাকে খুব ব্যথিত করেছিল। তাই ওই সময়ে সাধ্য মতো দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াই।”

পার্থসারথির দাবি, লকডাউনের সময়ে তিনি তাঁদের পারিবারিক দু’টি গাড়ি ও ফসল বিক্রি, পুকুর লিজ়ের ও তাঁর জমানো টাকায় ইটাহার, রায়গঞ্জ-সহ জেলার ন’টি ব্লকের প্রায় দশ হাজার দুঃস্থ মানুষের হাতে চাল, ডাল, আনাজ, মশলাপাতি, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, পোশাক তুলে দিয়েছেন। দুঃস্থদের সাহায্য করতে ব্যাঙ্ক-ঋণও নিয়েছেন বলে দাবি।

পার্থসারথির স্ত্রী ভাস্বতী হস্তশিল্পী। তাঁদের একমাত্র মেয়ে প্রগতি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ভাস্বতী বলেন, “স্বামী বরাবরই দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ান। আমরাও চেষ্টা করি, সব সময়ে ওঁর পাশে থাকতে।” তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ চহ্বানের বক্তব্য, “আদর্শ শিক্ষকেরা সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়াবেন, এটাই স্বাভাবিক।”

অন্য বিষয়গুলি:

itahar raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE