Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

ভাতায় নির্ভর, অপেক্ষা আবাসের

শম্পার স্বামী মনোজ কাজের খোঁজে কখনও পাশের জেলা তো কখনও ভিন‌্-রাজ্যে যান। তাঁর নাম পরিয়ায়ী শ্রমিক পোর্টালে এখনও নথিবদ্ধ হয়নি।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৬
Share: Save:

সামনে গরম কাল। আর গরম এলেই কবে বৃষ্টি নেমে যাবে চিন্তা হয় শম্পা চক্রবর্তী মণ্ডলের। স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। এক-এক বছর বর্ষায় টিনের চালের নতুন নতুন ফুটো দিয়ে জল পড়ে। স্বামী বাড়িতে না থাকলে চালে উঠে ফুটো বন্ধ করবে কে! শ্রমিক কাজে লাগানোর ক্ষমতা নেই। জলপাইগুড়ির গোমস্তপাড়ার শম্পার নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পে রয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ নেই। গত বর্ষায় টিনের চালের ফুটো দিয়ে জল গড়িয়ে ঘর ভেসেছে, এ বারেও সেই আশঙ্কায় রয়েছে পরিবারটি। সম্প্রতি কয়েক দিনের ব্যবধানে কেন্দ্র এবং রাজ্য বাজেট পেশ হয়েছে। তা নিয়ে চর্চাও চলছে বিস্তর। বাজেটের কথা শুনে ঝাঁঝিয়ে উঠছেন তিনি। শম্পা বলছেন, “ও সব কোটি কোটি টাকার গল্প শুনে কী হবে! আমাদের ঘরের টাকা কোথায় গেল! আমরা তো কোনও দোষ করিনি, তা হলে আমাদের শাস্তি পেতে হচ্ছে কেন!”

শম্পার স্বামী মনোজ কাজের খোঁজে কখনও পাশের জেলা তো কখনও ভিন‌্-রাজ্যে যান। তাঁর নাম পরিয়ায়ী শ্রমিক পোর্টালে এখনও নথিবদ্ধ হয়নি। স্ত্রী ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের টাকা পান, বাবা-মা বার্ধক্য ভাতা। মনোজ বলছেন, “এই ভাতাগুলিই সম্বল। না হলে রাস্তায় দাঁড়াতে হত।” জলপাইগুড়ির অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোমস্তপাড়ার এক দিকের কংক্রিটের রাস্তা শেষ হয়ে যায় মাঠে। মাঠ পেরিয়ে মণ্ডল পরিবারের বাড়ি। যৌথ পরিবার। পাশাপাশি দুটি শোওয়ার ঘর। টিনের চাল ফুটিফাটা।মনোজ বলেন, “টিনের চাল খুলে ফেলে নতুন করে লাগাতে হবে। অত টাকা আমাদের নেই। আবাস প্রকল্পে নাম রয়েছে তাই অপেক্ষা করছি। কিন্তু এক বছর তো হয়ে গেল। আর কত দিন?”

বাড়ির সামনে ছোট একটি হরেক রকম জিনিসের দোকান। দোকান থেকে কিছু আয় হয়। শম্পা বলেন, “কত আর আয় হয়, এক মাসের তেলের খরচও জোটে না। পাড়ার ভিতরে দোকান, কত জন দোকানে আসবে!” প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পের বরাদ্দের অপেক্ষায় থেকে প্রতিদিন ঘর থেকেএকটু-একটু করে দরমা বেড়ার আস্তরণও খসে পড়ছে। অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান রাজেশ মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রের বাজেটে আবাস নিয়ে কত কথা শুনলাম, কিন্তু প্রায় নিরাশ্রয় পরিবারগুলি কী বুঝবে? কেন্দ্র ওদের টাকা অন্যায় ভাবে আটকে রেখেছে। কেন্দ্রের রাজনীতিতে ঘর বৃষ্টির জলে ভেসে যাচ্ছে কত দরিদ্র পরিবারের।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর পাল্টা দাবি, “আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের প্রকল্পে তৃণমূলের চুরির পাপে অনেককে ভুগতে হচ্ছে। সেটা সকলেই টের পাচ্ছেন। লোকের ঘামে ভেজা টাকা খেয়েছে তৃণমূল।”

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy