Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Gangarampur

‘প্রতিভা’ কম নেই, দরকার সহযোগিতার

তাঁতশিল্পীদের দাবি, এক বান্ডিল টানা সুতোর দাম প্রায় ২,৩০০ টাকা। চিকন সুতোর দাম ২,৫০০ টাকা। সাত বান্ডিল সুতোয় ৮০ পিস শাড়ি তৈরি হয়। একটা শাড়িতে হ্যান্ডলুমের জন্য শ্রমিক-মজুরি ১৫০ টাকা।

—প্রতীকী ছবি

নীহার বিশ্বাস 
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৩৪
Share: Save:

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের সবচেয়ে বড় তাঁত ব্যবসায়ী আশিস সাহা এখন বাড়িছাড়া। নবদ্বীপের একটি বিড়ির দোকানে দিন মজুরিতে কাজ করেন তিনি। যাঁর বাড়িতে শতাধিক কর্মচারী ছিলেন, তিনি অন্যের দোকানে কর্মী। ফোনে গলা ভারী শোনায়। বললেন, ‘‘আমার বাড়িতে ৬০-৬৫টি পরিবার কাজ করত। রমরমা শাড়ির ব্যবসা করতাম। উৎপাদন খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শাড়ির দাম বাড়ানো যাচ্ছিল না। ঋণের ফাঁদে পড়ে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেল।’’

বিদ্যুৎ চালিত ‘পাওয়ার লুম’ আসার পরে, আশিস বাড়িতেই ২৮টি ‘পাওয়ার লুম’ বসিয়েছিলেন। সাড়ে চার লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণে লকডাউনের পরে, ব্যবসা শেষ হয়ে যায়। করোনার পরে যখন আবার তাঁত চালু করবেন, দেখেন, বাজারে সুতোর দাম এক ধাক্কায় অনেক বেড়ে গেছে।

প্রতি বান্ডিল সুতোর দাম প্রতি বছর ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে বাড়ে। ঠ্যাঙাপাড়ার সবচেয়ে পুরনো ও বড় সুতোর কারবারি সুনীল বসাক বাড়িতে নিজের ২৭টি তাঁতকলের পাশাপাশি, আরও ১৫০টি তাঁতকল লিজে চালাতেন। এখন তাঁর সব তাঁত বন্ধ। টিমটিম করে সুতোর ব্যবসা চলছে। বছরে যাঁর কয়েক কোটি টাকার সুতোর ব্যবসা ছিল তিনি শাড়ির বরাতের জন্য ঘুরছেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘প্রায় এক কোটি টাকা বাজারে পড়ে রয়েছে। ব্যবসাও শেষের দিকে।"

তাঁতশিল্পীদের দাবি, এক বান্ডিল টানা সুতোর দাম প্রায় ২,৩০০ টাকা। চিকন সুতোর দাম ২,৫০০ টাকা। সাত বান্ডিল সুতোয় ৮০ পিস শাড়ি তৈরি হয়। একটা শাড়িতে হ্যান্ডলুমের জন্য শ্রমিক-মজুরি ১৫০ টাকা। ‘পাওয়ার লুম’-এ মজুরি ৭০ টাকা। তার সঙ্গে রঙের দাম আলাদা রয়েছে। ‘পাওয়ার লুম’-এ বিদ্যুতের খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে এখানে যে শাড়ি তৈরি হয় তার উৎপাদন খরচ গড়ে ৩৫০ টাকা। কিছু লাভ রেখে, বাজারে সেই শাড়ি বিক্রি করতে গেলেই ক্রেতা মেলে না। কারণ, ১৫০-২০০ টাকার হরেক রকমের ছাপা শাড়িতে বাজার ছয়লাপ।

‘গঙ্গারামপুর তাঁত মালিক ও তাঁত শ্রমিক যৌথ কমিটি’র সভাপতি উৎপল গোস্বামী বলেন, "সস্তায় শাড়ি পেলে কে আর বেশি দাম দিয়ে শাড়ি কিনবে! অথচ, আমাদের শিল্পীদের প্রতিভার অভাব নেই। একটু প্রশিক্ষণ আর সরকারি সহযোগিতা পেলে এই তাঁতশিল্প ধ্বংস হত না!" (চলবে)

অন্য বিষয়গুলি:

Cotton
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy