ছবি: সংগৃহীত
সকাল তখন সবে ১০টা পেরিয়েছে! আতপ চালের গন্ধে অফিসের কেউ কেউ উৎসুক হয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চ ভবনে ক্যান্টিন নেই। তাই সেখানে আতপ চালের ভাত রান্না হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। তবে কি আশেপাশের বাড়ি থেকে গন্ধ ভেসে আসছে?
এমনই নানা জল্পনার মধ্যে বৃহস্পতিবার সার্কিট বেঞ্চ ভবনের ফাইলপত্র রাখার ঘরের দরজা খুলে হকচকিয়ে যান এক কর্মী। জ্বলজ্বল করা চোখ নিয়ে ঘরের ভেতর ঘাপটি মেরে কে বসে আছে! লোমশ শরীর, লম্বা লেজ। এ তো গন্ধগোকুল! কেউ বলে ভাম, কেউ খাটাস! মুহূর্তে হুলুস্থুল পড়ে যায়। চেঁচামেচি আর হুড়োহুড়ি দেখে প্রাণীটিও হয়তো ঘাবড়ে যায়! লেজ উঁচু করে তিন তলা ঘরের ঘুলঘুলি দিয়ে বের হয়ে বসে পড়ে জানালার কার্নিশে।
কিছুক্ষণ সেখানে থেকে উঠে যায় জানালার ওপরে কংক্রিটের পাটাতনে। সেখানেই বসে থাকে প্রাণীটি। বিচারপ্রার্থী থেকে পথচারীরাও চলে আসেন প্রাণীটিকে দেখতে। বেঞ্চ ভবনে যেখান দিয়ে সাধারণের প্রবেশের জায়গা, সেখান থেকেই প্রাণীটিকে দেখা যাচ্ছিল। অফিস চত্বরে ভাম বসে থাকা মোটেই নিরাপদ নয়। প্রাণীটি আঁচড়ে, কামড়ে দিতে পারে। প্রথমে খবর যায় পুলিশে কাছে। তার পরে বন দফতরে।
খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। তাতেও ভামটির কোনও ভ্রুক্ষেপ হয়নি। সেটি বসেই থাকে। পুলিশ অফিসারেরাও নিজেদের মধ্যে চোখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকেন। ভাম তাড়ানোর কোনও প্রশিক্ষণ তো নেই। কেউ বলেন লম্বা বাঁশ এনে প্রাণীটিকে খোঁচা দিতে। তিন তলার জানালায় উঠে বসেছে প্রাণীটি। মাটি থেকে তিন তলায় পৌঁছবে তেমন লম্বা বাঁশ পাওয়াও ঝক্কি।
শেষে খবর যায় বন দফতরে। বন দফতরের মোবাইল রেঞ্জের কর্মীরা এসে পৌঁছয়। যে জানলায় ভাম বসেছিল পিছন দিক থেকে সেই ঘরে পৌঁছন বনকর্মীরা। তাঁদের একাংশের দাবি, পায়ের শব্দ পেয়েই প্রাণীটি জানলা থেকে দেওয়াল বেয়ে উপর দিকে উঠে পালিয়ে যায়। এক বনকর্মীর কথায়, “প্রাণীটি ভয় পেয়েও কাউকে আঁচড়ে, কামড়ে দিতে পারত। সেটাই ভয়ের বিষয় ছিল।”
জলপাইগুডির টাউন স্টেশন লাগোয়া জেলা পরিষদ ডাকবাংলো সংস্কার করে সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবন তৈরি হয়েছে। জেলা পরিষদ ডাকবাংলোটি অনেক পুরোনো। সেখানে আগাগোড়াই ভামের ডেরা বলে দাবি। ভবন সংস্কারের পরেও বেশ কিছু ভামকে ছাদ বেয়ে নামতে অথবা দেওয়ালের কার্নিশে হেঁটে বেড়াতে দেখা যায় বলে দাবি। কর্মীদের একাংশের দাবি, অফিসের ঘরেও মাঝেমধ্যে ভামের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছে। সার্কিট বেঞ্চের কিছুটা দূরে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের পাঁচ তলা ভবন। সেখানেও ভামের উৎপাত লেগেই থাকে বলে কর্মীদের অভিযোগ। কর্মীদের দাবি, ভাম তাড়ানোর ব্যবস্থা করা উচিত। কিন্তু কী ভাবে তার উপায় অবশ্য অনেকের কাছেই অজানা। এক কর্মীর কথায়, “বন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, ওরা যদি সুরাহা করতে পারে কিছু।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy