—প্রতীকী ছবি।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে এক বিজেপি নেতাকে খুন করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে রাজ্যের শাসকদল জানিয়েছে, বিজেপি নেতার মৃত্যুর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। রবিবার ইসলামপুর শহরে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। শনিবার বিজেপি যুব মোর্চার ইসলামপুর মণ্ডলের সম্পাদক অসীম সাহা ছুরিকাহত হন। এক যুবকের বিরুদ্ধে এলোপাথাড়ি ছুরি চালানোর অভিযোগ ওঠে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই বিজেপি নেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও শেষরক্ষা হয়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্তও।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সকালে। নিহত বিজেপি নেতা অসীম আদতে কোচবিহারের বাসিন্দা। তিনি ইসলামপুরে তাঁর মামা রতন সাহার কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। জানা গিয়েছে কাপড়ের দোকানে টাকাপয়সার লেনদেন সংক্রান্ত একটি বিবাদ গত কয়েক দিন ধরেই চলছিল। শনিবার সকালে ইসলামপুরের মেলা মাটি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ শাহিল নামের অভিযুক্ত ওই যুবক দোকানে আসেন। সেখানে শাহিলের সঙ্গে অসীমের তীব্র বাদানুবাদ হয়। প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এর পরেই অসীমকে সামনে পেয়ে তাঁর বুকে এলোপাথাড়ি চাকু চালিয়ে দেন শাহিল। অসীমকে বাঁচাতে গিয়ে আরও এক জন জখম হন। ঘটনার পর অসীমকে প্রথমে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালেই মৃত্যু হয় অসীমের।
অসীমের মৃত্যুর পরেই তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের যুব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ চক্রবর্তী এই ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাইরে থেকে এক যুবক এসে অন্য এক জনের বুকে প্রকাশ্য দিবালোকে চাকু চালিয়ে দেয় কোন সাহসে? এর পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে। এলাকার ব্যবসায়ীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন। এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হওয়া উচিত।” অন্য দিকে, নিহতের মামার বক্তব্য, বিজেপি করার কারণেই অসীমকে খুন করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, “ব্যবসায়িক কারণেই বাদানুবাদ, আর সেই কারণেই চাকু চালিয়েছে অভিযুক্ত। এখানে কোনও রাজনীতির রং নেই।” এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “বিজেপি নিজেদের পায়ের তলার মাটি হারিয়ে এখন সব ক্ষেত্রেই রাজনীতি খুঁজে বেড়াচ্ছে। পুলিশ সজাগ রয়েছে। অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে বলে শুনেছি। আইন আইনের পথে চলবে।”
ইসলামপুর পুলিশ বিভাগের পুলিশ সুপার কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৯টা ১৫ নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়িক কারণেই মৃত বিজেপি নেতার সঙ্গে অভিযুক্ত সাহিলের বাদানুবাদ হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত এবং পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, তাদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ১২ ঘণ্টার বন্ধ প্রসঙ্গে ইসলামপুরের পুলিশ সুপার বলেন, “বন্ধে কোনও রকম জোরজবরদস্তি মেনে নেওয়া হবে না।” তবে কেউ স্বেচ্ছায় দোকানপাট বন্ধ রাখলে পুলিশ পদক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy