Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Child Birth

বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে ত্রাণশিবিরে ঠাঁই, সেখানেই জন্ম নিল ‘বন্যা’!

ত্রাণশিবিরে আশ্রিতা মহিলাদের সহায়তায় গত রবিবার মর্জিনা বিবি জন্ম দেন শিশুকন্যার। ত্রাণশিবিরের সকলের ইচ্ছায় মা-বাবা আদর করে তাঁদের কন্যার নাম রাখলেন ‘বন্যা’।

সাত দিনের শিশুকন্যার নাম ‘বন্যা’ রাখলেন তার মা।

সাত দিনের শিশুকন্যার নাম ‘বন্যা’ রাখলেন তার মা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মালদা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:১৬
Share: Save:

সাত দিনের শিশুকন্যার নাম ‘বন্যা’ রাখলেন তার মা। মালদার মানিকচকের উত্তর চণ্ডীপুর বিপি হাই স্কুলের ত্রাণশিবিরে জন্ম ‘বন্যা’র। ত্রাণশিবিরে আশ্রিতা মহিলাদের সহায়তায় গত রবিবার মর্জিনা বিবি জন্ম দেন শিশুকন্যার। ত্রাণশিবিরের সকলের ইচ্ছায় মা-বাবা আদর করে তাঁদের কন্যার নাম রাখলেন ‘বন্যা’।

প্রায় দু’বছর আগে মালদার মানিকচকের উত্তর চণ্ডীপুরের চম্পানগরের দৃষ্টিহীন যুবক সেলিম শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় সামিরুদ্দিনটোলার মর্জিনার। কেশরপুরে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকতেই প্রথম দিকে বানভাসি হয়ে পড়েন চম্পানগরের বাসিন্দারা। গ্রামের পাশের বাঁধে আশ্রয় নেন তাঁরা। গর্ভবতী মর্জিনাকে তাঁর মা জোনাকি বিবি নৌকা করে সেখান থেকে নিজেদের বাড়ি সামিরুদ্দিনটোলায় নিয়ে আসেন। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সেখানেও বন্যার জল ঢুকতেই গর্ভবতী মর্জিনা আশ্রয় নেন উত্তর চণ্ডীপুর বি পি হাই স্কুলের ত্রাণশিবিরে। সন্তান জন্ম নিতে আরও এক মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু হঠাৎই গত রবিবার বিকেলে প্রচণ্ড প্রসব যন্ত্রণা ওঠে মর্জিনার। মা জোনাকি বিবি এবং ত্রাণশিবিরে আশ্রিতা অন্যান্য মহিলাদের সহায়তায় সেখানেই শিশুকন্যার জন্ম দেন মর্জিনা। বন্যার সময় জন্ম হওয়ায় শিবিরের উপস্থিত আশ্রিতরা সদ্যজাত কন্যার নাম ‘বন্যা’ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তাতে সম্মতি জানান শিশুর মা-ও। গত সোমবার শিশুকন্যার জন্ম হয়েছে খবরটি পৌঁছয় প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে। তড়িঘড়ি ত্রাণশিবিরে আসেন ভূতনি থানার ওসি পবিত্র মাহাতো। তাঁর উদ্যোগে সদ্যোজাত মেয়ে ও মাকে নিয়ে আসা হয় ভূতনি ব্রিজে। সেখান থেকে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় দু’জনকে।

এই বিষয়ে মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভীক শঙ্কর কুমার জানান, মা ও মেয়ে দু’জনেই বর্তমানে সুস্থ আছে। তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ত্রাণশিবিরে ফিরে গেলে দু’জনেরই সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে। তাই আগামী কয়েক দিন তাঁরা হাসপাতলেই থাকবে।

মর্জিনা বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে প্রথম সন্তান জন্ম দেব তা কল্পনাতেও আসেনি। ভূতনির রিং বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর সব ওলোটপালট হয়ে গেল। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম প্রাণে বাঁচব কি না। তবে সুস্থ আছি। আমার মেয়েও সুস্থ আছে। ভাল লাগছে। জীবনের এমন সময়টাকে স্মরণীয় করে রাখতে মেয়ের নাম দিলাম ‘বন্যা’।”

মালদা মানিকচক ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে গত কুড়িদিন ধরে।এই কারণে দিশেহারা জনজীবন। চারিদিকে থৈ থৈ জল, বাড়ি ঘর সব জলমগ্ন। লক্ষাধিক বাসিন্দা জলবন্দি।

অন্য বিষয়গুলি:

Baby girl new born baby Malda flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy