মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর থেকেই চিন্তা শুরু হয়েছিল। মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষার ফলাফল কী হবে তা ভেবে সারা রাত ঘুমোতে পারেনি সে। তবে আশা ছিল, মেধা তালিকায় নাম থাকতেও পারে।
বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা বোর্ডের মেধা তালিকায় নিজের নাম দেখে আনন্দ বাঁধ ভাঙে তামান্না ইয়াসমিনের। রাজ্যে সে যে দ্বিতীয় হবে তা ভাবতেও পারেনি মালদহের রতুয়ার ভাদো এলাকার তামান্না। ভাদো বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল সে। পেয়েছে ৭৬৯, ৯৬ শতাংশের বেশি।
শুধু তামান্নাই নয়, মাদ্রাসা বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষায় এ বার মালদহের জয়জয়কার। মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে জেলার আরও ছ’জন। সকলেই প্রত্যন্ত এলাকার। বেশিরভাগই অভাবী পরিবারের। তার পরেও প্রতিবন্ধকতা টপকে মেধা তালিকায় জায়গা করে চমকে দিয়েছে তারা।
তামান্নার বাবা মনসুর রহমান ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। মা আঞ্জুরা খাতুন ভূগোলে অনার্স। গ্রামীণ চিকিৎসকের কাজ করেন বাবা। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে তামান্না। বলে, ‘‘এতটা আশা করিনি। বাবা-মা, শিক্ষকদের জন্যই এমন ফলাফল সম্ভব হয়েছে।’’
৭৬৫ পেয়ে চতুর্থ হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুরের জগন্নাথপুর হাই মাদ্রাসার ছাত্র মিজানুর রহমান। তার বাবা মনিরুল ইসলাম ওড়িশায় শ্রমিকের কাজ করেন। লকডাউনে বাড়ি ফিরেছেন। অধ্যাপক হতে চাওয়া মিজানুর বলে, ‘‘ভাল কোনও স্কুলে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে। কিন্তু কী হবে জানি না।’’
৭৬৩ পেয়ে যুগ্ম ভাবে পঞ্চম হয়েছে রতুয়ার রানিনগর হাই মাদ্রাসার মোবারক হোসেন ও গাজলের রামনগর হাই মাদ্রাসার মহম্মদ আফিফুদ্দিন। মোবারকের বাবা মাজাহারুল হক দিনমজুর। চিকিৎসক হতে চায় মোবারক। আফিফুদ্দিনের বাবা আপরাফুল হক ভবঘুরে প্রকৃতির। মা জ্যোৎস্নারা খাতুন গবাদি পশু পালন করে কোনও রকমে সংসার চালান।
তালিকায় ৭৫৮ পেয়ে সপ্তমে থাকা হরিশ্চন্দ্রপুরের মিটনা সোলেমানিয়া হাই মাদ্রাসার সেলিম আখতারের বাবা মহম্মদ ইসমাইল ক্ষুদ্র চাষি। চিকিৎসক হতে চায় সেলিম। চাঁচলের চাঁন্দুয়া দামাইপুর হাই মাদ্রাসার নাফিসা আখতার ৭৫৫ পেয়ে নবম হয়েছে। বাড়ি ভগবানপুরে। বাবা সামসি হাটে চাল বিক্রি করেন। চিকিৎসক হতে চায় নাফিসাও। ৭৫২ নম্বরে দশম হয়েছে ছোট সুজাপুরের এমএনএস হাই মাদ্রাসার রহিমা পারভিন। তার বাবা আতাউল শেখের ছোট ব্যবসা। রহিমা বলে, ‘‘সব বাধা পেরিয়ে চিকিৎসক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy