Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪

সীমান্তে যাতায়াত শুরু দেড় বছরেই, আশ্বাস

আগামী দেড় বছরের মধ্যে ফুলবাড়ি বাণিজ্যপথ দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত (ইমিগ্রেশন) পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শারণ। সোমবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির সরকারি অতিথি নিবাস ‘মৈনাকে’ সার্কভুক্ত চার দেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অন্যতম ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোসিনের সদস্যদের একটি বৈঠক হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৩
Share: Save:

আগামী দেড় বছরের মধ্যে ফুলবাড়ি বাণিজ্যপথ দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত (ইমিগ্রেশন) পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শারণ। সোমবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির সরকারি অতিথি নিবাস ‘মৈনাকে’ সার্কভুক্ত চার দেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অন্যতম ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোসিনের সদস্যদের একটি বৈঠক হয়। সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকে ফুলবাড়ি ছাড়াও সার্কের দেশগুলির মধ্যে ‘কমন ভিসা’, সীমান্ত বাণিজ্যপথে ব্যাঙ্ক, বৈদেশিক মুদ্রার এক্সচেঞ্জ কাউন্টার, পর্যটন সার্কিট ছাড়া বিমান চলাচল ব্যবস্থা নিয়ে মূলত আলোচনা হয়।

বৈঠকের পর হাইকমিশনার পঙ্কর শারণ বলেন, “এই অঞ্চলের পর্যটন থেকে সড়ক বাণিজ্য, পরিকাঠামো থেকে বিমান চলাচল-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে ফুলবাড়ি বাণিজ্যপথটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত সরকার ইতিমধ্যে পরিকাঠামোর জন্য প্রয়োজনীয় টাকা রাজ্য সরকারকে দিয়ে দিয়েছে।” তিনি জানান, আগামী ১/২ মাসের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে ওই বাণিজ্যপথ দিয়ে ওপারের পঞ্চগড় জেলায় ইমিগ্রেশন চালু হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন আগে ফুলবাড়ি সীমান্ত প্রথমে ভুটান থেকে বাংলাদেশের বর্হিবাণিজ্যের জন্য খোলা হয়। পরবর্তীতে তা নেপালের জন্য খোলা হয়। দুটি দেশেই তাঁদের সবচেয়ে কাছের বন্দর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার করা শুরু হয়। ২০১১ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ভারতের বর্হিবাণিজ্যের জন্য ফুলবাড়ি বাণিজ্যপথ খোলা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার পরিকাঠামোর জন্য ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন আগেই সেই টাকা রাজ্য সরকারের তরফে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে ইমিগ্রেশনের পরিকাঠামোর কাজ শুরু হতে চলেছে।

এদিনের বৈঠকে ফোসিনের তরফে সীমান্ত চৌকিতে বর্হিবাণিজ্যের জন্য ভিসা’র ব্যবস্থার অনলাইন কাউন্টার, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, বিমান চলাচল, শিলিগুড়িতে কোয়ারানটাইন দফতর চালুর দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বজিত্‌ দাস বলেন, “সীমান্তের পরিকাঠামো, ফুলবাড়ি সীমান্তে ইমিগ্রেশন ছাড়াও কোচবিহারের দিনহাটার গীতালদহ সীমান্ত দিয়ে ইমিগ্রেশন চালু কথা বলা হয়েছে।” সার্কের প্রতিনিধিদের পর্যটন সংগঠনগুলির তরফে ভারত, ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশকে নিয়ে ‘ট্যুরিজম সার্কিট’ গড়া মত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “সার্কের এই দেশগুলিতে পর্যটকদের জন্য কমন ভিসা চালু কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া সিকিমে বাংলাদেশি জন্য বন্ধ থাকা ভিসা চালুর অনুরোধ করা হয়েছে।”

উত্তর পূর্ব ভারতের জন্য শিলিগুড়িকে ‘ট্রানজিট সিটি’ হিসাবে বিবেচনা করে এই শহরে সার্ক দেশগুলির বিদেশ মন্ত্রকের শাখা খোলার অনুরোধ করেন পর্যটন সংগঠনগুলির তরফে রাজ বসু। তিনি বলেন, “শুধু পর্যটন নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের জন্যও নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভূটানের বিদেশ মন্ত্রকের শাখা শিলিগুড়িতে থাকা জরুরি। যেমনটা জরুরি ঢাকা বা সৈয়দপুর থেকে বাগডোগরা বিমান চলাচল।”

হাইকমিশনার পঙ্কক শারণ নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত, পেমা সোডেন, নেপালের রাষ্ট্রদূত হরিকুমার শ্রেষ্ঠা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অফিসারেরাও। বৈঠকে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার ছাড়াও কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিঙের জেলাশাসক-সহ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা ছিলেন। পঙ্কজ শারণ বলেন, “ঢাকা থেকে সড়ক পথে রাষ্ট্রদূতদের সফর এই প্রথম। বৈঠকের সমস্ত বিষয় আমি রিপোর্ট আকারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠাব।”

আজ, মঙ্গলবার প্রতিনিধি দলটির ফুলবাড়ি সীমান্ত পরিদর্শনের কথা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy